avertisements 2

আজ ঘর ছাড়া বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪

Text

বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি’র কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। সমাবেশে হচ্ছে ব্যাপক জনসমাগম। প্রায় কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। চালানো হচ্ছে হামলা।

ডাকা হচ্ছে পাল্টা সমাবেশ। সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে। কোথাও কোথাও হয়েছে বড় ধরনের সংঘর্ষও। এর মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছেন বিএনপি’র তিন কর্মী। এসব ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। আর বেশির ভাগ মামলার আসামি করা হয়েছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের।

দলটির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে সারা দেশে দলটির প্রায় ২১ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়েছেন অনেকে। নেতাকর্মী শূন্য কার্যালয়গুলো।

তবে মামলা হামলা হলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে গত ২২শে আগস্ট থেকে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

আগামী কয়েক মাস এভাবেই কর্মসূচি চলমান থাকবে। এরপর ‘সঠিক’ সময়ে সরকার পতনের এক দফা নিয়ে রাজপথে নামার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আর চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই সরকার বিরোধী বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করা হবে।

যারা বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে তাদেরও মাঠে নামানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। তারা বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। তৃণমূল থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে। হামলা, মামলা কিংবা গ্রেপ্তার কোনো কিছুতেই রাজপথ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাধা আসলে আপাতত পাল্টা হামলা এড়িয়ে কৌশলে কর্মসূচি পালনে কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে দেশের দশ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে চলমান কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করে ঢাকায় মহাসমাবেশ করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

গত সোমবার বিকালে দলটির যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠকে এসব কর্মসূচির বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়। পরে রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে তৃণমূলকে আরও চাঙ্গা রাখতে শীর্ষ নেতাদের এলাকায় অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় দলটি। এ জন্য ঢাকায় অবস্থানরত তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের তালিকা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

মামলা হামলা করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার আজকে জনগণের অধিকারকে হরণ করছে। তারা মনে করছে- গুলি, গুম, হত্যা, খুন ও নির্যাতন করে আন্দোলনকে দমিয়ে দেবে। কিন্তু এসব করে বিএনপি’র আন্দোলন দমানো যাবে না। তিনি বলেন, রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে দলের অগণিত নেতাকর্মী চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

নারায়ণগঞ্জের শাওন, ভোলার নুরে আলম ও রহিম হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। রাজপথ দখল করে এই ভয়াবহ আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠিত করবোই।

বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রথম থেকে এসব কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ঘটলেও গণমাধ্যমে সেভাবে আসেনি। সাধারণ মানুষও তেমন গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু হামলা-মামলা ও গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে তা প্রচার ও প্রকাশ হওয়ায় এখন রাজনীতিতে আলোচনায় বিএনপি। ফলে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমরা গোড়া থেকে আন্দোলন শুরু করতে চাই। বিএনপি’র গোড়া বা আন্দোলনের সূতিকাগার হচ্ছে তৃণমূল। সেখান থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলন করলে হামলা হবে, মামলা হবে এমনকি গ্রেপ্তার হবে। যতই হামলা হোক আমরা আন্দোলন থেকে সরবো না।

তিনি বলেন, বিএনপি’র গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় সরকার। কিন্তু আমরা সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেবো না। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার নির্যাতন করেই ক্ষমতায় টিকে আছে।

একদিকে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করছে। অন্যদিকে তাদের অনেককে কারাগার থেকে মুক্তি দিচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। তবে আগামীতে তারা সফল হবে না। তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে সম্পৃক্ত করে তৃণমূল থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলন চলবে। দেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় এবার আমরা পিছু হটবো না।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2