avertisements 2

তৃণমূলে ‘নাড়া’ দিয়েছে আ. লীগ, সাড়া পেয়েছে বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:০৩ এএম, ৬ মে,সোমবার,২০২৪

Text

ইউনিয়ন পর্যায়ে একই দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়ার কথা জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করে দলের নেতাকর্মীদের ভালো নাড়া দেওয়া গেছে। এর ফলে তাঁদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিলেন বলেই বিএনপি দেশের কোথাও বড় ধরনের শক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি।

আর বিএনপি নেতারা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচিতে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। আওয়ামী লীগের বাধা পেরিয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততাই এ কর্মসূচির সফলতা। তাই সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছে দলটি।

গত শনিবার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি পদযাত্রা ও আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে। এই কর্মসূচি ঘিরে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এসব সংঘাতের জন্য দুই দলই পরস্পরকে দায়ী করছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় মনে করছে, শনিবার সারা দেশে বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করে দলের নেতাকর্মীদের দারুণভাবে উজ্জীবিত করা গেছে। নেতাকর্মীরা আগের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দলের তৃণমূলে এ ঐক্য ধরে রাখতে পারলে নির্বাচনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তৃণমূলে কর্মসূচি দিয়ে একদিকে বিএনপির নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা যেমন প্রতিহত করা গেছে, অন্যদিকে আমাদের নির্বাচনী প্রচারের কাজও শুরু হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরা শুরু হয়েছে। সরকারকে কেন ক্ষমতায় রাখা দরকার আর বিএনপি-জামায়াতকে কেন ভোট দেওয়া যাবে না, সে বিষয়গুলো আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি।’

দলীয় একটি সূত্র মতে, ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। শান্তি সমাবেশের মধ্য দিয়ে অনেক জায়গায় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দলের তৃণমূলের নেতাদের দূরত্ব কিছুটা কমে এসেছে।

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি ক্রমেই গতি হারাচ্ছে বলেও মনে করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মতে, বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণের কোনো সাড়া মিলছে না। জনগণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত না হলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারবে না বিএনপি।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র কালের কণ্ঠকে জানিয়েছে, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নিয়মিত ‘শান্তি সমাবেশ’ কর্মসূচি পালন করে যাবে আওয়ামী লীগ। বিএনপির কর্মসূচির ধরন বুঝে শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মী জমায়েত কম বা বেশি হবে। ফাঁকা মাঠে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন বড় কোনো শক্তি প্রদর্শন করতে না পারেন, সেদিকে কঠোর নজর থাকবে আওয়ামী লীগের। পাশাপাশি সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতার মামলাগুলোর আসামিদের চাপে রাখবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনে স্রোত হারিয়ে গেছে। বিএনপির আন্দোলন এখন গুরুতর আহত। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি করে যাব। কোনো পাল্টাপাল্টি নয়। আমরা এক বছরের কর্মসূচি দিয়ে রেখেছি; কখনো শান্তি সমাবেশ, কখনো সম্মেলন, কখনো গণসংযোগ।’ তিনি গতকাল রবিবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, বিএনপি তাদের আন্দোলন কর্মসূচি সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পারেনি। শুরুতে তাদের নেতাকর্মীদের মাঝে আন্দোলন নিয়ে বেশ উৎসাহ দেখা গেলেও এখন তাতে ভাটা পড়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি না তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। ফলে নেতাকর্মীরা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে হতাশ হয়ে পড়ছেন। এটি বিএনপিকে মোকাবেলা করা ক্ষমতাসীন দলের জন্য সুবিধা এনে দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিএনপি ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে নিজেদের হাস্যাস্পদে পরিণত করেছে। দেশের কোথাও তাদের নেতাকর্মীরা মাঠে নামেননি। জনগণের নিরাপত্তার জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে ছিলেন। আন্দোলন সফল করতে হলে জনগণের মন জয় করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে সেটা কোনো আন্দোলন হয় না। বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা একেবারেই নেই।’

ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘আমরা রাজপথে থাকলে বিএনপি-জামায়াত নাশকতা চালানোর সুযোগ পায় না। আমরা এ কৌশল নিয়েছি, কারণ ফাঁকা মাঠ পেলেই তারা দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2