জালাল উদ্দিন আহমেদ
কেরানী কথন
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩৩ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
চৌত্রিশটি বছর বিভিন্ন সরকারী অধিদপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রনালয়ে বিরতিহীনভাবে কাজ করে আজ অবসরের আদম হয়ে আমার দিন যাপনের নির্ঘন্টগুলি সাজিয়েছি। পেশাজীবি মানুষ হয়ে কেন এই দাপ্তরিক কাজের মধ্যেই আমার কর্ম জীবনের নির্ঘন্টটি সাজিয়েছিলাম তা ভাবলেই মনটা মাঝে মধ্যে এলোমেলো হতে চায়। তবে কর্মজীবনের সততা ও আপোষহীনতার কথাগুলি যখন চোখে ভাসে, তখন জীবনের ব্যক্তিগত প্রাপ্তির বঞ্চনাগুলিকে দূরে সরিয়ে তৃপ্তির রেখাগুলি চকচক করে উঠে। আবার কর্মজীবন শেষে পেশাগত জীবনের অর্জনগুলিকে যখন নিজের মত করে সাজিয়ে দেশ ও জনগনের সামনে প্রকাশিত হই তখন আত্ম তৃপ্তির জায়গায়টি স্বতঃস্ফুর্তভাবেই আমাকে চাঙ্গা করে তোলে।
অফিস আদালত বা গ্রামীন পরিবেশের পুচকে সরকারী যেকোন অফিসে অনেক প্রজাতির কর্মজীবি মানুষ কোন না কোন অজুহাতে কলম ধরার উপলক্ষ্ পান। কেউ গদবাঁধা “সদয় অনুমোদনের জন্য” কিংবা “ সদয় মতামতের জন্য উপস্থাপন করা হোল” ধরনের নোট উপস্হাপন করেই তার কর্মক্ষম জীবনটা একই ফ্রেমে ফেলে পার করে দেন। কেউবা মতামত বা বর্ননা ব্যাখ্যা দিয়ে তার কর্মজীবনের মাহাত্মে উজ্জীবিত হন। আবার এক শ্রেনীর বড় সাইজের কর্মচারী আছেন যারা অর্থনীতি সমাজনীতি রাষ্ট্রীয় নীতিসহ দেশীয় অন্যান্য নীতি সম্পর্কিত তথ্য উপাত্তের বিশাল বিশাল ভলিয়্যুম তৈরী করে “সদয় অবগতি ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহনের জন্য উপস্থাপন করা হলো” বলেই তাদের কেরানীময় জীবনের চালচিত্রে সাঁতার কাটেন। আবার অনেক বিশেষজ্ঞ কেরানী আছেন যারা তাদের বিদ্যাবুদ্ধি (a+b)2 এর ফর্মুলায় ফেলে বিষয়বস্তুর আঙ্গিকে ফুটনোট দেন “কারিগরিভাবে মান সম্পন্ন বিধায় গ্রহন করা যায়। সিদ্ধান্তের জন্য উপস্থাপন করা হলো”। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রেই সরকারী কর্মচারীগন কেউ উপস্থাপক, কেউ মতামত দানকারী, কেউবা খসড়া প্রনয়নকারী, কেউ সার সংক্ষেপ প্রনয়নকারী, কেউ সহমত পোষনকারী ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু “yes” বলার ক্ষমতায় থাকা লোকজনের বড়ই অভাব আজকাল। অবশ্য সেক্ষেত্রে সীমানা প্রাচীর তৈরী করা আছে। তারপরেও আজকাল এই সিদ্ধান্ত দেয়ার “হ্যাডাম”ওয়ালা সরকারী কর্মচারীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। নাকি “ yes boss” এর দৌরাত্ম্য তাদের কর্ম পরিধিটা ছোট হয়ে আসছে তা ভাববার বিষয় বৈকি! হ্যাডাম কথাটি যদিও একটু উগ্রতার পর্যায়ে পড়ে তারপরেও এক্ষেত্রে ওই শব্দটার চয়ন শ্রেয় বলে আমার মনে হয়েছে৷
আমার চাকুরী জীবনের প্রথম ভাগে দেখেছি সেইসব ডাকসাইটে সিএসপি বা সিএসএস এমন কি ইপিসিএস কর্মচারী যারা নিম্ন বা মধ্য লেভেলে থাকলেও সিদ্ধান্ত নামক লেখাটি তাদের কাছ থেকে পাওয়া যেত। সরাসরি লিখতেন-“Granted or permitted. Take action. Do it right now. এই ধরনের নির্দেশনামুলক ছোট ছোট বাক্য। অবশ্য তখনকার সময়ে তাদের নোট লেখা বা উপস্থাপন করার spirit ই ছিল অন্য ধাঁচের। ইংরেজীতে লেখার জোশে হোক বা তখনকার সময়ের ক্যাডারদের high profile training এর শিক্ষাই হোক, তাতে কিন্তু একটা বৃটিশ বৃটিশ গন্ধ ছিল। এখন সেই জোশ বা গাম্ভীর্য নেই তা বলবো না। তবে ইংরেজী ও বাংলার দ্যোতনায় তা কেমন যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। না ইংরাজীটা ভাল হচ্ছে, না বাংলাটা বিকশিত হচ্ছে। মনে পড়ে আমার চাকুরী জীবনের শুরুটার কথা। লেখাপড়া শেষ করে সরকারী Central procurement department এ যোগদান করলাম। অবশ্য সে সময় বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সেই দপ্তরটির নাম ছিল Department of supply and inspection. সরকারী সমস্ত বিভাগ ও মন্ত্রনালয়ের দাপ্তরিক প্রয়োজনের আনুসাঙ্গিক সবকিছুই সেই পরিদপ্তরের মাধ্যমে কেনা হোত। পুরোপুরি ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস। পরিচালক থেকে পরীক্ষক সবাই নিজ নিজ প্রফাইলের ইঞ্জিনিয়ার বা টেকনোলজিষ্ট। Tender Documents, Product Specification, Order placement থেকে শুরু করে টেন্ডার আদেশ মোতাবেক Indentor চাহিত মালামাল ঠিকমত সরবরাহ হচ্ছে কিনা তার সমস্ত কর্মধারা শেষ করেই আমাদের দম ফেলতে হোত। এরপরে শুরু অফিসিয়াল নোট বা কেরানীয় কাজ। অর্থাৎ Inspection Report লেখার পর সেই চিরায়িত “সদয় অবগতি ও অনুমোদনের জন্য পেশ করা হলো”। যা ইংরেজীতে ছিল “submittited for your kind information and approval please” পঁচাশি ছিয়াশি সাল পর্যন্ত সরকারী কর্মচারীদেরকে ইংরেজীতেই নোট এবং রিপোর্ট চালাচালি করতে হোত। তবে inspection report এবং inspection note পুরোটাই ছিল technical. সুতরাং কেরানী হওয়ার প্রথম ট্রেনিংটা আমার এভাবেই শুরু হয়েছিল। চলে এলাম টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের বিশেষায়িত কলেজে শিক্ষক হিসাবে। সেখানেও কেরানীর আবহের গন্ডিতে প্রবেশ করতে হোল। IDA/ADB এর অর্থায়নে কলেজ ডেভেলপমেন্ট এর জন্য আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনপত্র, তার specification, tender document এবং মালামাল গ্রহন ও installation এবং operation, সঙ্গে মাস্টারীর ঝক্কি তো রয়েই গেছে। সরকারীভাবে দেশে শিল্পায়নের তোড়জোড় সে সময় একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাস্টারীর ক্যারিয়ার ছেড়ে চলে এলাম সরকারী বিষয় বিশেষজ্ঞ (নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ মর্যাদার) হিসাবে শিল্প মন্ত্রনালয়ের বিসিকে(বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন)৷ছিলাম গেজেটেড, হলাম নন গেজেটেড। সরকারী চাকুরেদের এ এক ব্রাহ্মন্য প্রথা। যাহোক, সরকারী শিল্প বিশেষজ্ঞ হিসাবে আমার পথচলা শুরু। কিন্তু কিসের কি। বড় বড় প্রশাসকদের সর্ব জ্ঞানের কারিশমায় আমি কুপোকাত। যিনি প্রতিষ্ঠান প্রধান তিনি সব জানেন। আর যিনি বিভাগীয় প্রধান অর্থাৎ যুগ্ম পর্যায়ের আমলা তিনি আরো বেশী জানেন। তবে সব জানার শেষ জানা ওই দাঁড়ি, কমা, বানান ও বাক্য বিন্যাসের বেশী কিছু নয় বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। সেক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রের job empowerment/ assignment এর বিষয়টি তো নির্ধারিত। তবে যতই বড়াই করনা কেন “সহমত পোষন করছি বা সদয় অনুমোদনের জন্য”, এর বেশি আর কিইবা করার আছে। তারপরেও কিছু কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ডের উপরওয়ালা বস পেয়েছি যারা নোটের মাধ্যমে কারিগরি প্রশ্ন উত্থাপন করতেন। কিন্তু শেষ কথা “সিদ্ধান্তের জন্য” ইত্যাদি।
সব কথার শেষ কথা আমি কেরানী এবং কেরানীয় কর্মধারার মধ্যেই আমার চলাচল। বড় বড় প্রফাইল প্রস্তাব বা প্রজেক্ট প্রোফাইল প্রস্তুত করার পরে শেষমেষ “সদয় অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যাংকে প্রেরন করা যায়” ইত্যাদি। শিল্প কারখানার রুগ্নতা নিরূপনে diagnostic study করতে হবে। কিংবা জাতীয় ভিত্তিক শিল্প সেক্টরের swot analysis করতে হবে (‘SWOT= Strength Weakness Opportunity Threat)। বিশেষজ্ঞ হিসাবে সবই করলাম। সুনির্দিষ্ট সুপারিশও করলাম। কিন্তু কলমের শেষ বিন্দুতে এসে দাঁড়াল “সদয় অবগতি ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হোল”। হয়তোবা আমার উর্ধতনেরাও লিখবেন “দেখলাম। প্রস্তাব মোতাবেক”। আবার যারা একটু কলার উঁচা কর্মচারী, তারা স্রেফ “initial” (ইনি সিয়াল) দিয়েই প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে ফাইল পাঠিয়ে দেবেন। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি ”রাম নাম সত্যা হ্যায়” মার্কা হন তবে তিনিও সেটা নিজ কাঁধে না নিয়ে মন্ত্রনালয়ের মতামতের জন্য “দৃষ্টি আকর্ষন করছি” বলে পাশ কাটিয়ে হাঁফ ছাড়বেন। সেখানে মন্ত্রনালয়ের সর্বোচ্চ আধিকারিক যদি প্রকৃত শিরোমনির মুল্যটা বুঝেন(বুঝা উচিত) তাহলে তিনি “অনুমোদিত” বলে আরো দু'লাইন লিখবেন, “ভবিষ্যতে এ ধরনের নথি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সমীচিন নয়” বলে একটি প্রচ্ছন্ন চোখ রাঙানী দিবেন। কিন্তু সেই বড় সাহেব যদি একটু বেশী মাত্রার কেরানী গন্ধের হন, নিজের ঘাড়ে বন্দুক রাখতে না চান তবে তিনিও মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে “সদয় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলো” বাক্যটি জুড়ে তার জাতীয় দায়িত্ব শেষ করবেন। এক্ষেত্রে মন্ত্রী মহোদয় যদি রাজনীতির পোড় খাওয়া করিৎকর্মা প্রশাসক হন তবে তিনি সে বিষয়ে তৎক্ষনাৎ যবনিকা টেনে দিবেন। কিন্তু তিনি যদি অতি শিক্ষিত ও নিজেকে জ্ঞানীগুনি মনে করেন তাহলে তিনিও সেই নথিতে দু'লাইন লিখে দিবেন “বিষয়টি জাতীয় শিল্প সংশ্লিষ্ট বিধায় stake holder দের সমন্বয়ে একটি সভার আয়োজন করে সিদ্ধান্তে আসা যায়”। ইদানীং তো এখানেও যবনিকা পড়তে চায় না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মতামত আকারে পাঠিয়ে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়।
এভাবেই কেরানীয় আবহের ঘনঘটা আমাদের সরকারী দর দালানে লাল ফিতায় কিলবিল করছ্রে যুগ যুগ ধরে। কর্মজীবনের শেষের দিকে যখন মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা হয়ে বিচরন শুরু হোল সে সময় বছর দুয়েক মন্ত্রনালয়ে প্রেষনে কাজ করতে হয়েছে। সেখানে গদবাঁধা কাজের সাথে অনেক কিছু করার আছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। যেহেতু ডেভেলাপমেন্ট কর্মধারায় আমার পথচলা সেক্ষেত্রে শিল্প সেকটরের উন্নয়নের চিন্তাধারা গুলোতেই আমার অংশগ্রহন ছিল। তবে মন্ত্রনালয়েও লক্ষ্য করলাম গঁদবাঁধা আচরনের বাইরে কেউ বেরোতে চান না। ব্যতিক্রম অবশ্য ছিল। আমার চাকুরি জীবনের প্রথম দিকের ঘটনা। সে সময় একটি জাতীয় ভিত্তিক কমিটিতে আমাকে কাজ করতে হয়েছিল। মোকাম্মেল স্যার তখন অতিরিক্ত সচিব হিসাবে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি সে সময় চামড়া শিল্প সেক্টরের রপ্তানী উন্নয়নের লক্ষ্যে সুপারিশ পাওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। সেখানে কাজ করার সময় দেখেছি সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা ও ক্ষ্রীপ্ততা। সেই শিক্ষা থেকেই বোধ হয় শিল্প মন্ত্রনালয়ে আমি একটি ঝুঁকিপুর্ন কাজে জড়িয়ে পড়েছিলাম। বিসিকের পরিবেশ বান্ধব চামড়া শিল্প নগরী স্থাপন প্রকল্পে বিদেশে শিক্ষা সফরের একটি ক্লজ ছিল। সেখানে স্টেক হোল্ডার থেকে দুজন, বিসিক থেকে তিনজন এবং শিল্প ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় থেকে পাঁচজনের নির্ধারনে এই প্যাকেজটি স্থির করা ছিল। বরাদ্দ বিশ লাখ টাকা। সরকারী এসব সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে ক্যাডার ভিত্তিক কর্মচারীরা সব সময় আগেভাগেই লাইন দিয়ে বসে থাকেন। এবং হয়ও তাই। কারন সিদ্ধান্ত উপস্থাপন ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের পিন পয়েন্টে তাদেরই বিচরন বেশী। আমি দেখলাম এটা most technical এবং বেনিফিসিয়ারী হিসাবে এই স্টাডি ট্যুরে স্টেক হোল্ডারদের অংশ গ্রহন সবচেয়ে কার্যকরী। সে সময় ইউনিডো (UNIDO) ওই প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থ সহয়তার নিমিত্তে সুইডিশ সিডার (Swedish SIDA) অর্থায়নে একটি কারিগরি সমীক্ষার কাজ করছে। তাদের সঙ্গে counterpart এবং local consultant হিসাবে আমাকে কাজ করতে হয়েছে। নুরুল আমিন স্যার তখন শিল্প সচিব হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। আমি আমার পুর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করার কথা ভাবলাম। যুগ্ম প্রধানকে বলে কয়ে সচিব মহোদয়ের কক্ষে গেলাম। বিসিক প্রকল্পের সেই স্টাডি ট্যুরের বিষয়টি উত্থাপন করে সরকারী প্রকল্প বরাদ্দের সঙ্গে আরো কিছু টাকা ইউনিডো প্রকল্প থেকে বের করে আনার বিষয়টি জানালাম। স্টেক হোল্ডারদের বেশী সংখ্যককে সেই ট্যুরে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বললাম। সচিব স্যার প্রথমে আমাকে পাগল বলে উড়িয়ে দিলেন। পরে যখন আমার পুর্ব অভিজ্ঞতায় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কলেজ জীবনে আইডিএ প্রকল্পের কাছ থেকে এরকম সুবিধা নেয়ার কথা বললাম তখন তিনি করনীয় সমন্ধে আমাকে জিগ্যেস করলেন। আমি বলেছিলাম পঁঞ্চাশ হাজার ডলারের একটা ফান্ড চাওয়া হোক। তিনি যেন আসমান থেকে পড়লেন। পরে কি ভেবে যেন আমাকেই নির্দেশ দিলেন “ঠিক আছে তুমি চিঠির ড্রাফট নিয়ে এসো”। পরে সেই পত্র ইউনিডো হেড কোয়ার্টারে প্রজেক্ট ম্যানেজার Dr. Shemel এর কাছে পাঠানো হোল। এক সপ্তাহের মধ্যে তিরিশ হাজার ডলারের একটি বরাদ্দ পেয়ে গেলাম। অর্থাৎ প্রকল্পের বিশ লাখ টাকা আর ইউনিডোর এই ডলার দিয়ে স্টাডি ট্যুরের ফান্ড হয়ে দাঁড়াল পঁয়তাল্লিশ লাখেরও বেশী। স্টেক হোল্ডারদের কাছে শুধুমাত্র তাদের বিমান ভাড়ার সংস্থান নেয়ার পর দেখা গেল চব্বিশ জন মানুষ সেই স্টাডি ট্যুরের সুযোগ পেলেন। মনে পড়ে সেই স্টাডি ট্যুরে দশ জন শিল্পপতি সুযোগ পেয়েছিলেন। আর বাকীরা আমরা সব কেরানীর দল। শুধু তায় নয় প্রত্যেকে ইউনিডো স্টাটাসে হাত খরচা বা ডিএসএ পেয়েছিলেন। এক্ষেত্রে সচিব মহোদয় ও যুগ্ম প্রধানের আমার এই পরিকল্পনার প্রতি সহানুভূতির কারন অবশ্য ছিল। এখানে তাদের প্রাপ্তিযোগ ছিল বলেই হয়তো ওই পত্রটা লিখাতে পেরেছিলাম। কর্মজীবনে তৃপ্তির এরকম আরো বহু উপাদান আছে যা পাঠকের কাছে প্রচারের বাহানা বলে মনে হবে, তাই কেরানী কথনের এখানেই যবনিকা টানলাম।।