জালাল উদ্দিন আহমেদ
অকোব্যঙ্গ
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৫২ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কিছু কিছু বিষয় বা দৃশ্যপট এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এগুলো লোকচক্ষুর অন্তরালেই হোক বা প্রকাশ্যেই হোক, তা কিন্তু ঘটে যায়। বিষয়টি লোকালয় জনপদ প্রকাশ্যেই মেনে নেয়। সৃষ্টির আদি যুগ হতেই এসব হয়ে আসছে। বাসযোগ্য এই পৃথিবীতে যুগ যুগান্তে মানব জাতির এই অকোব্যঙ্গ বা প্রান্ত বদল নীরবেই ঘটে চলেছে। তবে ব্যতিক্রমী ব্যাপারগুলো যখন অমানবিকতার মোড়কে ভিন্ন রূপে সামনে চলে আসে তখন তা সাড়া জাগায়। পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তে তখন এ নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়ে যায়। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অসন্তোষ তখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। এনিয়ে দুনিয়া ব্যাপী শোরগোল সৃষ্টি হয়। যুদ্ধ বিগ্রহ হয়। গৃহযুদ্ধ হয়। জাতিগত ও ধর্মীয় উস্কানী এবং রাষ্ট্র জয়ের নেশায় এসব প্রান্ত বদলের অমানবিক নিগ্রহে মানুষ সর্বশান্ত হয়ে গৃহহারা হয়, বাস্তুচ্যুত হয়, দেশ ছাড়া হয়। এমনকি রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক হয়ে ওইসব মানব সন্তানের জীবনের দিনলিপি লেখা হয়ে যায়। এসব ঘটনা কমবেশী সৃষ্টির আদি যুগ হতেই ঘটে আসছে আমাদের এই বাসযোগ্য ধরণীতলে।
Ethnic বা জাতিগত যুদ্ধ বিগ্রহ, মানুষ হত্যা এবং গৃহচ্যুত হয়ে বাস্তুহারা হওয়ার ঘটনা আমরা আমাদের জন্মকাল হতেই দেখে আসছি। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে অর্থাৎ পুর্ব-পশ্চিম উত্তর-দক্ষিন সর্ব অঙ্গনেই এই দুঃখ দুর্দশার দৃশ্য ও কাহিনী এখনো এই একবিংশের আলো ঝলমলে উঠানে বিরাজমান। তবে বিভৎসতা ও বর্বরতার আরো একটি অন্ধকার জগত এই প্রান্ত বদলের নোটবুকে বেশ জাঁকালোভাবেই স্থান করে নিয়েছে। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তেই ধর্মীয় ভেদাভেদের আদি আহবানের একটি সুক্ষ্ণ রেখা মানব জাতিকে সব সময় পিছু টানের আবহে আবর্তিত করে। সেক্ষেত্রে জাতিগত শক্ত বাঁধনকে তুচ্ছ করে তা কখনোই সামনে এসে দাঁত খিঁচিয়ে হাসতে না পারলেও ধর্মীয় বিভেদের বিষাক্ত ছোবল সেই জাতিগত জনপদে দীর্ঘস্থায়ী দীর্ঘশ্বাসের ক্ষেত্র তৈরী করে দেয়।
ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বা সৃষ্টির জলন্ত আগ্নেয়গিরি আজ ভারতীয় উপমহাদেশে তুষের আগুনের মত অঙ্গার সৃষ্টি করে রেখেছে। একই ভুখন্ডের জাতিগত বিভাজন যখন ধর্মের বিষাক্ত বলয়ে বিচ্ছেদ ঘটায় তখন তা অত্যন্ত বিষাক্ত ও বেদনাদায়ক হয়। ক্ষেত্র বিশেষে তা রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় জনপদ বিনাশ করার ইতিহাস সৃষ্টি করে। ভারতীয় উপমহাদেশে এই ধর্মীয় জাতস্বত্ত্বা সৃষ্টির যে জঘন্য হিংসাত্মক নাটক মঞ্চস্থ করা হয় গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তা যেন এতদাঞ্চলের ধর্মীয় জনগোষ্ঠি বিনির্মানের রেনেসাঁ বলে মনে হয়েছে। জাতিগত স্বত্ত্বা ভেঙ্গে চুরমার করে ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বা তৈরীতে যে রক্তক্ষরন ভারতীয় উপমহাদেশে হয়েছে তা শুধু ইতিহাসের পাতায় লাল কালি দিয়ে লিখেই ক্ষান্ত হতে হয়নি বরং সেই ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বা ভারতীয় অস্তিত্বের দুই বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কপালে হা পিতেশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিয়েছে বলেই অনুমান করা যায়।
প্রাচীন ভারত এক বিশাল সাম্রাজ্য নিয়ে বিস্তৃত ছিল। তবে তা কখনোই আজকের মত ঐক্যবদ্ধ ভারতের মত ছিল না। মূলতঃ মহান ভারত হিসাবে ভারতের আত্মপ্রকাশ হয় মুসলিম শাসনের শক্ত গাঁথুনির মাধ্যমে। ইসলামী শাসনের পাঁচ'শ সাড়ে পাঁচ'শ বছরের প্রভাবে ধর্মীয় যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ এই সময়কালে ইসলামের পতাকা তলে সামিল হন। ফলে তেত্রিশ কোটি ভারতের জনসংখ্যার একটি উল্লেখ্যোগ্য সংখ্যক হিন্দু, মুসলমান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। এর ফলে মুর্তি ও বিগ্রহ পুজারির দেশে ইসলামের দিক্ষা নিয়ে একটি বিশাল জনগোষ্ঠি মুসলমান হিসাবে ভারতীয় আঙ্গিকে স্থায়িত্ব পায়। গোটা ভারত জুড়ে এই মুসলমানদের অস্তিত্ব সে সময় ভারত ভুখন্ডে একটি স্বতন্ত্র স্বত্ত্বা হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
মুসলিম সাম্রাজ্য স্তিমিত হওয়ার সন্ধিক্ষনে সংযুক্ত ভারতের রাজদন্ড ইংরেজদের হাতে চলে আসে। ধুর্ত বৃটিশ জাতি যখন কোনক্রমেই ভারতে তাদের রাজদন্ডে স্থিতি আনতে পারছিল না তখন তাদের দৃষ্টি পড়েছিল হিন্দু মুসলিম দুটি জাতিগত বিভেদ ও অনৈক্যের দিকে। তারা তখন devide and rule এর কুটচালে তাদের মসনদ পোক্ত করার অপকৌশল গ্রহন করে। এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন হিন্দু ব্রাহ্মন্যবাদী গোষ্টির উপর তলার মানুষজন। যেহেতু মুসলমানদেরকে পরাজিত করেই ভারতে বৃটিশ রাজ ক্ষমতা নিয়েছিল সেক্ষেত্রে মুসলমানেরা ছিল বৃটিশদের কাছে শত্রুপক্ষ। সুযোগের সদব্যবহারে হিন্দু সম্প্রদায় একটুও ভুল করে নি। তারা বৃটিশ রাজ কর্মচারীর প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের উপস্থিতি সবল করে। ক্ষেত্র বিশেষে ভারতীয় আঙ্গিকে বৃটিশ ভারতের শাসক শ্রেনীর পরামর্শক হিসাবেও নিজেদেরকে প্রমানে কামিয়াব হয়। এক্ষেত্রে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কথিত 'ভারত আন্দোলনে' হিন্দুরা সর্বক্ষেত্রে তাদের নেতৃত্বের কুটচাল এবং বৃটিশ শাসনের ঘরের মানুষ সেজে সব সময় সামনের সারিতে থেকে ইংরেজদের নেক নজরে থাকার মানসিকতায় কাজ করে গেছে। ফলে মুসলিম নেতৃস্থানীয়রা সব সময় তাদের চলার পথে বাধাগ্রস্থ হয়েছে। সম্ভবতঃ হিন্দু-মুসলিম বিভেদের লক্ষন রেখাটি তখন থেকেই মোটা দাগে সামনের সারিতে চলে এসেছে।
এ তো গেল ভারত আন্দোলনের উপর তলার খবর। আরো কিছু কাজ হিন্দু নেতৃস্থানীয়রা সুক্ষ্ণ তুলাদন্ডে রেখেই ভারতীয় তথা বঙ্গ সমাজের তৃণমূলে করে গেছেন যা জাতিগত একতাকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র হিন্দু ইজমের জোশ ও হিংসার ক্ষেত্র তৈরী ক'রে মুসলিম বিনাশের ক্ষেত্র হিসাবে কাজ করেছে। শহর ও মফস্বল পর্যায়ে ধর্মীয় উস্কানী মুলক ক্লাব সমিতি শুধুমাত্র হিন্দু সমাজের জন্য তারা সৃষ্টি করেছিলেন যা ধর্মীয় উস্কানী ও বিভেদ তৈরীর সুতিকাগার হিসাবে আম হিন্দুদেরকে ভারতীয় হওয়ার পরিবর্তে হিন্দুস্থানী হওয়ার জোশে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাদের আর্য সমাজ, শুদ্ধিকরন, গো রক্ষা সমিতি, অনুশীলন সমিতি, হিন্দুর ভারত হিন্দুর হবে নামক ইঙ্গিতবাহী সংগঠন কিংবা আরএসএস- সত্যিকার অর্থেই এগুলো ছিল ধর্মীয় জাতিগত বিভেদ ও বিদ্বেষ ছড়ানোর সুতিকাগার। সংগঠিত ও প্রশিক্ষিত সংগঠন হিসাবে এসব সমিতি ও কমিটি হিন্দু ধর্মের জঙ্গি সংগঠন হিসাবেও সুপরিচিত। এদের মূল লক্ষ্যই ছিল ভারত হিন্দুদের দেশ। সেখানে মুসলমানেরা বিজাতীয় এবং বহিরাগত। ভারত আন্দোলনের বৃটিশ খেদাও এজেন্ডার পাশাপাশি 'মুসলিম খেদাও' এজেন্ডা বাস্তবায়নে এসব সমিতি বা প্লাটফরম তারা সৃষ্টি করেছিল। তাছাড়া হিন্দু জাগরনে তৎসময়ে যুগান্তর পত্রিকা ও সাময়িকী যে যুদ্ধংদেহী ভাষায় “যবন নিধনে” হিন্দু জাগরনের সূচনা করেছিল তার মহড়া ভারত-পাকিস্থান সৃষ্টির একবছর আগেই কোলকাতা ও নোয়াখালী দাঙ্গায় সমগ্র বাঙালী জাতি অবলোকন করলো। এক্ষেত্রে হয়তো পাঠক বলতে পারেন, তাহলে কি মুসলমানেরা হাতে চুড়ি পরে বসেছিল? সত্যিকার অবস্থা কিন্তু সেটাই ছিল। কারন ভারতীয় আঙ্গিকে তারা সংখ্যা লঘু, তারা বৃটিশদের কাছে মুক্তিযোদ্ধা ও বিদ্রোহী এবং শত্রুপক্ষ। পাশাপাশি হিন্দুরা সংখ্যাগুরু, বৃটিশদের নেক নজরের পক্ষের লোক তারা। কয়েক শত বছর মুসলিম শাসনে পদাবনত থাকার মুসলিম প্রতিহিংসায় হোমওয়ার্ক করা হিন্দু শাসক ও রাজা মহা রাজাদের উত্তর পুরুষরাই ছিল হিন্দু জাগরনের প্রথম সারির নেতা। মুসলিম জাতীয়তাবাদের হাত ধরে পাকিস্থান সৃষ্টি হওয়ার ফলে বাঙালী হিন্দুদের একটি অজানা ভীতি বেশ জোরেশোরেই কাজ করে। এতদিনের হিন্দু রাজা জমিদার রূপী দৌর্দান্ড প্রতাপের শাসকেরা প্রমাদ গুনলেন। কৃত কর্মের ভয়েই হোক কিংবা মুসলিম গরিষ্ঠতার ভয়েই হোক, তারা নিজেদেরকে “হিন্দু বাঙালী” প্রমানে আদাজল খেয়ে গরিষ্ঠতার জেরে পশ্চিম বাংলাকে ভারত ভুক্তি করিয়েই ছাড়লো। পুর্ব বাংলা যেমন ভোরের আযানের ধ্বনিতে পাকিস্থান ঘোষনার পুর্ব পাকিস্থান হলো তেমনি বাংলার পশ্চিমাংশ মন্দিরের উলুধ্বনিতে ভারত রাষ্টের অঙ্গীভূত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হলো।
পুর্ব বাংলা মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ থাকা সত্ত্বেও এখানকার স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা ছিল হিন্দু রাজা ও জমিদারদের অধীনে। ফলে হিন্দু শাসনের নিষ্পেষনে স্থানীয় চাষা-ভুষা বাঙালী মুসলমানরা এখানে নির্যাতিত জন গোষ্ঠি হিসাবেই বিবেচিত ছিল। তাছাড়া নিম্ন সম্প্রদায়ের হিন্দু জন গোষ্ঠিও ওইসব ব্রাহ্মন্য শাসক ও মোড়লদের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিল। ফলে মুসলিম ও তপশিলি হিন্দুদের সিংহভাগ বাঙালী কখনোই শাসক শ্রেনীর ব্রাহ্মন ও ক্ষত্রিয় হিন্দুদের পছন্দ করতো না। লক্ষ্য করা যায় দেশ বিভাজনের তোড়ে সে সময় উঁচু সম্প্রদায়ের সুবিধাভোগী হিন্দু জমিদার ও মোড়ল শ্রেনীর হিন্দুরা পুর্ব বাংলা ছেড়ে ভারতের পশ্চিম বাংলায় আশ্রয় নেয়। ক্ষেত্র বিশেষে তাদেরকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার হয়ে জন্মভিটা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। সেক্ষেত্রে নিম্ন সম্প্রদায়ভুক্ত হিন্দুরা নিজ ধর্মের বর্ণ-বৈষম্যের জ্বালা ভুলে পুর্ব বাংলায় মুসলমানদের সাথে সহাবস্থানকেই শ্রেয় ভেবে এখানে থেকে যান। কিন্তু যে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে এই বিভাজনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয় তাতে এক শ্রেনীর সুবিধাবাদী মুসলিম বাঙালী গোষ্ঠি সরকারী মদতে গনহারে হিন্দু বিতাড়নের মচ্ছবে সামিল হয়। এই বিতাড়ন বা প্রান্ত বদলের ঘটনা দু' পক্ষেই ঘটেছিল। কিন্তু যেহেতু পশ্চিম বঙ্গ ভারত রাষ্ট্রের একটি ক্ষুদ্র অংশ এবং তা ভারতের নীতি নির্ধারনে পরিচালিত বিধায় সেখানে রাষ্ট্রীয় মদতে মুসলিম বিতাড়নের কাজটি গনহারে ঘটে নি। তবে সার্বিক চিত্রপটে বাঙালী জাতিগতভাবে সাতচল্লিশ থেকে পঞ্চাশ সাল পর্যন্ত প্রান্ত বদলের অসহনীয় ঘুর্ণিপাকেই ছিল বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।
আমি ইতিহাসের ছাত্র নই। ইতিহাস লেখাও আমার কাজ নয়। শুধুমাত্র ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ঘটে যাওয়া মনুষ্য সৃষ্ট অনিয়ম ও অযাচিত বিষয়গুলি নিয়ে এলেবেলে ভাবনাগুলিই আমার প্রতিপাদ্য। এখানে ধর্মীয় আবেগ ও পর ধর্মের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানোও আমার উদ্দেশ্য নয়। সত্যকে সৎভাবে উপস্থাপন করে ইতিহাসের দীর্ঘশ্বাসে বাঙালী অস্মিতায় নিজের মুখ আয়নায় ফুটিয়ে তোলার কন্টকময় রাস্তার পথিক আমি। ডিসকভারী চ্যানেলে 'অকোব্যঙ্গ' নামক অনুষ্ঠানটি আমি বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখি। “অকোব্যঙ্গ” সম্ভবতঃ আফ্রিকান ভাষার শব্দ। বিষয় বস্তুর বর্ননা থেকে যা বুঝলাম তা থেকে খাদ্যান্বেষন, ভাগ্যান্বেশন, হিজরত বা প্রান্ত বদল শদগুলোই যুতসই বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে “প্রান্ত বদল” শব্দটাই আমার কাছে যুতসই বলে মনে হয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলির জঙ্গল হিংস্র জীব জন্তুতে ঠাঁসা। লক্ষ্য করা যায় গরম কালে তৃণভোজি গরু মহিষ বা হরিনেরা খাদ্যের খোঁজে পাহাড় নদী প্রান্তর পেরিয়ে প্রান্ত বদল করে। এতে তাদের স্থানচ্যুতির পাশাপাশি প্রানহানিও হয় বিভৎসভাবে। পশু শক্তির হিংস্রতার মুখে সেই অকোব্যঙ্গের বা প্রান্ত বদলের লোমহর্ষক দৃশ্য তখন আমাকে অন্য জগতে নিয়ে যায়। বাপ-দাদাদের মুখের গল্প ও সিনেমা নাটকের দৃশ্যপটের সাজুয্যে তখন আমি ওই অকোব্যঙ্গ বা প্রান্ত বদলকে বাঙালীর সাতচল্লিশের জন্মস্থান ছেড়ে পালানো বা প্রান্ত বদলের সাথে মিলানোর দুঃসাহসিক চিন্তায় মগ্ন হয়ে পড়ি। এমনকি ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বা তৈরীতে বিহার ইউপি থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিদ্ধস্ত ও বিতাড়িত জনগোষ্ঠীর হালের স্থিতি আমাকে ভাবায় বৈকি! পাঠক, আমাকে ক্ষমা করবেন।