পরীমনি ইস্যুতে শিল্পী সমিতির আচরণকে রহস্যজনক: শাকিব খান
পরীমনি ইস্যুতে শিল্পী সমিতির আচরণকে রহস্যজনক: শাকিব খান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১৮ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির সদস্যপদ স্থগিত করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। বিষয়টিকে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ঢালিউড স্টার শাকিব খান।
পরীমনি ইস্যুতে শিল্পী সমিতির আচরণকে রহস্যজনক বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শাকিব লিখেছেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে খেয়াল করছি শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রতি কোনো ধরনের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, দুঃসময়ে শিল্পীর পাশে না থেকে উল্টো তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। মুহূর্তে পরীমনির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে! এ যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা।’
সমিতির আচরণ নিয়ে শাকিব বলেন, ‘সমিতির এই আচরণ সত্যিই খুব রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে বিবেকবান অনেক সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের আক্ষেপ রয়েছে। শিল্পীর সঙ্গে সংগঠনের এটি একটি অমানবিক আচরণ। প্রশ্ন থেকে যায়, এখনকার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাহলে কাদের স্বার্থে?’
আগের শিল্পী সমিতির কথা মনে করিয়ে দেন শাকিব খান। বলেন, ‘বিগত দিনেও একাধিক সিনিয়র শিল্পী এর চেয়েও ভয়ংকর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, কিন্তু তখনকার শিল্পী সমিতি অভিযুক্ত সদস্যের সদস্যপদ স্থগিত করেনি। বরং পাশে ছিল, রাস্তায় নেমেছিল, কিন্তু এখনকার শিল্পী সমিতির এসব আচরণ বিতর্কিত।
‘আবারও বোঝা গেল, এই শিল্পী সমিতি সবাইকে এক করতে পারেনি, বরং বিচ্ছিন্ন করেছে। বিভেদ তৈরি করে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নষ্ট করেছে। হয়তো এ জন্য চলচ্চিত্রের আজ এই দুর্দশা।’
দেশীয় সিনেমার পরিবেশ নিয়ে শাকিবের মন্তব্য, ‘এমনিতেই নানা কারণে সিনেমা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তার মধ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সামনে আরও ঘোর বিপদ।’
যারা পরীমনিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরও খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন শাকিব। বলেন, ‘পরীমনি ত্রিশটির বেশি সিনেমার সঙ্গে জড়িত বলে জানতে পেরেছি। তার হাতে আছে আরও বেশ কিছু সিনেমা। যারা বছরের পর বছর একটি সিনেমাতেও কাজ না করে দিনের পর দিন শিল্পী সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, তাদেরও আয়ের উৎসও খুঁজে বের করা উচিত।’
সহশিল্পী হিসেবে শাকিব খানের আশা, পরীমনির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমনি যখন ফিরবে তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
শাকিব খান তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘খেয়াল করছিলাম, অপেক্ষাও করছিলাম। প্রত্যাশা ছিল, বিপরীতে বেড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। গত কয়েক দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থেকে শুক্রবার আদালতের নির্দেশে পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
ঢালিউড স্টার বলেন, ‘সহকর্মী হিসেবে যতদূর জানি পরীমনি বাবা-মাহীন। তার বেড়ে ওঠা পারিবারিকভাবে আর পাঁচটা তরুণ-তরুণীর বেড়ে ওঠা, স্ট্রাগলে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। হয়তো সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে পরীমনি অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।’
শাকিব বলেন, ‘১০ আগস্ট আদালত চত্বরে পরীমনির শতবর্ষী নানা তার নাতনিকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন। করোনার এই ভয়াবহতাও আটকাতে পারেনি তার বৃদ্ধ নানাকে, রক্তকে উপেক্ষা করতে পারেনি রক্ত, সময় কী নিষ্ঠুর! পরীমনির সঙ্গে নাকি দেখাই হলো না বৃদ্ধ নানার। আদালত চত্বরেই পরীমনির নানাকে বলতে শুনেছি, পরীমনি নিজের জন্য জীবনে কিছুই করেনি। সব মানুষের জন্য দান করে গেছে। আর এখন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।’
‘পরীমনির মামলা এখন বিচারাধীন। ওই বিষয়ে কিছু বলছি না। সে যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে, তার কী অপরাধ সেটা বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। দেশের প্রচলিত আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে সঠিক বিচার হবে। তার আগে পরীমনির জীবন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে যেভাবে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, এটা সত্যি দুঃখজনক।’
উল্লেখ্য, মাদক মামলায় দুই রিমান্ড শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় পরীমনিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।