অভিনয়ে আলোচনায় তুঙ্গে আফরান নিশো
অভিনয়ে আলোচনায় তুঙ্গে আফরান নিশো
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঈদ মানেই টিভি নাটকের সবচেয়ে বড় উৎসব। এখন টিভির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউটিউব চ্যানেলও। ফলে নাটক তৈরির সংখ্যা ও মান- বেড়েছে দুটোই। চলমান করোনা মহামারির মধ্যেও থেমে ছিল না ঈদ নাটকের পসরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত কয়েকটি ঈদের মধ্যে এবারই অনেকবেশি মানসম্মত নাটক প্রচার হয়েছে। আর বেশির ভাগ মানসম্পন্ন ও জনপ্রিয় নাটকেরই প্রধান অভিনেতা ছিলেন আফরান নিশো। হিসাব কষে দেখা গেছে, এবারের ঈদের শীর্ষ অভিনেতা তিনিই।
সব ধরনের দর্শকের কাছেই এবার নিশো ছিলেন দারুণভাবে সমাদৃত। সমালোচকদের দৃষ্টিতে যেমন, জনপ্রিয়তার বিচারেও তেমনই সেরা অভিনেতার তকমা জুটেছে এবারের কাজগুলো থেকে।
সমালোচকদের চোখে এবার নিশোর প্রশংসিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চিরকাল আজ’, ‘কায়কোবাদ’, ‘পূনর্জন্ম’ প্রভৃতি। ৩টি নাটকই নির্মাণ করেছেন ভিকি জাহেদ। আবার কাজল আরেফিন অমির ‘আপন’ সব ধরনের দর্শকের ভালো লেগেছে। আর ভিউ? ভিউয়ের বিচারেও এবার সেরা নিশো। তার অভিনীত মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘হ্যালো শুনছেন’ এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিউ পাওয়া নাটক। নাটকটি ৪ মিলিয়নের বেশি দর্শক এরই মধ্যে দেখে ফেলেছে। আবার সবচেয়ে দ্রুত গতির ভিউয়ের নাটকও তার। জাকারিয়া সৌখিনের ‘এক মুঠো প্রেম’ এবার ১২ ঘন্টায় মিলিয়ন ভিউ পার করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দ্রুত ভিউ পাওয়া নাটকটিও তার- ‘হ্যালো শুনছেন’। এই নাটকটি ১৬ ঘণ্টায় মিলিয়ন পার করেছে।
সবমিলিয়ে এবার সেরা একটি ঈদ পার করেছেন আফরান নিশো। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো কিছুর আশায়। এভাবে নিয়মিত শিখছিও। সুতরাং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এভাবেই চেষ্টা করে যেতে যাই, শিখে যেতে চাই।’
নিশোকে বলা হয়ে থাকে ভার্সেটাইল অভিনেতা। এবারের ঈদে তার এই ভার্সেটাইল সত্তার সর্বোচ্চ উদাহরণ দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় চরিত্রে তিনি নিজেকে মেলে ধরেছেন। যেমন- ‘পূনর্জন্ম’ নাটকে উম্মাদ স্বামী, ‘কায়কোবাদ’ নাটকে কাঠমিস্ত্রি, ‘হ্যালো শুনছেন’ নাটকে চাকরি খুঁজে বেড়ানো অদ্ভূত যুবক, ‘শুষ্কং কাষ্ঠং’ নাটকে রস-কষহীন স্বামী, আবার ‘এক মুঠো প্রেম’ নাটকে কবি! এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে তার অভিনয় গ্রাফে।
নিজের এই বৈচিত্র্যময় অভিনয় প্রসঙ্গে নিশো বলেন, ‘যারা ভার্সেটাইল অভিনেতা, তাদের কাছ থেকে আমি নিয়মিত শিখি। সবাই জানেন, হুমায়ূন ফরীদি ভাইকে আমি নিজের গুরু মানি। তাই আমিও তার মতো ভার্সেটাইল অভিনেতাই হতে চেয়েছি। তাছাড়া নিয়মিত একই চরিত্রে বারবার অভিনয় না করে, বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে আমার ভালো লাগে। নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে যখন একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করি, তখনই নিজেকে স্বার্থক মনে হয়। যে চেষ্টা অব্যাহত আছে আমার।’
এবারের ঈদে আফরান নিশোর সবচাইতে ভালো গেলেও তিনি এবারই সবচাইতে কম নাটকে অভিনয় করেছেন। লকাডাউনের কারণে তিনি খুব বেশি নাটকে অভিনয় করতে পারেননি। মাত্র ১০টি নাটকে অভিনয় করেছেন। যেখানে তার সমসাময়িক অভিনেতারা প্রায় দ্বিগুণ-তিনগুণ নাটকে অভিনয় করেছেন, সেখানে তিনি এত অল্প নাটকে অভিনয় করেও এতটা সফলতার কারন কী? ফেসবুকে বাংলা নাটক সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোতে দর্শকের প্রতিক্রিয়া থেকেই এর উত্তর পাওয়া যায়। কারণটি হচ্ছে- বৈচিত্র্যময় অভিনয়, প্রতিটি চরিত্রই একেবারে সত্যিকারভাবে ফুটিয়ে তোলা এবং গল্প নির্বাচন।
এ বিষয়ে নিশো বলেন, ‘কোভিড এবং লকডাউনের কারণে আসলে গত এক-দেড় বছর ধরেই কাজ কম করা হচ্ছে। সরকার যখনই লকডাউন দিয়েছে, আমি শুটিং থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আসলে আমি কখনোই সংখ্যা বিচার করে কাজ করতেও চাইনি। একজন শিল্পী যখন বড় হয়, তার কিছুটা হলেও চাহিদা তৈরি হয়, তখন ইন্ড্রাস্ট্রির চাপে অনেক কাজ হয়তো করতে হয়। কিন্তু বরাবরই আমি কম কাজে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি।’
এ কথা প্রায় সকলেই জানেন, আফরান নিশো প্রয়াত শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদিকে অভিনয়ের গুরু মানেন। বলা যায়, তিনি তার গুরুর মতোই বৈচিত্র্যময়।