আমি মরে গেলে জেনে রাখবেন আমাকে হত্যা করা হয়েছে: পরীমনি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২৬ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১৩ জুন) ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি তিনি নিজেই জানান। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন মূল ঘটনা।
বনানীর নিজ বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে অভিযোগের বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন পরীমনি। তিনি বলেন, উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) তার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) নামে একজন নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ঘটনার দিন রাত ১২টার পর পরিচিতজনদের নিয়ে ওই ক্লাবে যান নায়িকা। সেদিন চার মদ্যপ ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। চড়-থাপ্পড় মারেন। গায়ে আঘাত করেন। একপর্যায়ে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে ধর্ষণের চেষ্টাও করেন।
পরীমনি বলেন, ‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা (সাংবাদিক) বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব। আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে, বিচার চাই। আর যদি আমাকে কেউ হত্যা করে, তখন আপনাদের কাছে সেই বিচারের ভার দিয়ে গেলাম। আবারও বলছি, আজ যদি আমি মরে যাই, তো সেটি আত্মহত্যা হবে না। জেনে রাখবেন আমাকে হত্যা করা হয়েছে। আর আমাকে যদি কেউ মারে, আমি যদি মরে যাই; ভাইয়ারা আপনারা বিচার কইরেন, আল্লাহর কসম।’
বনানীর নিজ বাসায় রোববার রাত সাড়ে ১০টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় এ নায়িকা। তিনি বলেন, বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে এ ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।’
পরী বলেন, এমন ঘটনায় সাধারণ মেয়েরা প্রথমে কোথায় যায়? থানায় যায়। আমিও থানায় গিয়েছি। আমি বারবার বলেছি, ঘটনাটা যদি নিজের সঙ্গে না ঘটে তাহলে কেউ বুঝবে না। ওইদিন পর্যন্ত কি তবে অপেক্ষা করবেন? কী ঘটেছিল সেটা জানতে চাই, আপনি নির্ভয়ে বলুন— উপস্থিত সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, ‘আমার মুখটা সাদা কাপড়ে ঢাকা পড়লেই কেবল বুঝতেন। আমি চার দিন ধরে কারও সাপোর্ট পাইনি। আপনারা সত্যিটা খোঁজেন।’
পরীমনি আরও বলেন, ‘সাধারণ কোনো মেয়ের হলে সে খবর হয়তো আপনাদের কাছে পৌঁছায় না। সাংবাদিকদের কাছে খবর পৌঁছানো হয় না। আমার মতো যখন কোনো মেয়েকে ভয় দেখানো হয় তখন সাধারণ মেয়ের খবর তো পাবেন না!’
তিনি বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তার এক বন্ধু (অমি) বাসায় আসেন। বাসা থেকে তাকে উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জিমি (ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী)। বোট ক্লাবে যাওয়ার পর সেখানে সাত/আটজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের মুরব্বি ছিলেন নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ)। তিনি বোর্ড ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। নাসির উদ্দিনসহ (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) উপস্থিত সাত/আটজন আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতে থাকে। আমাকে আটকে ফেলে। জোর করে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। জিমিকে মারধর করা হয়। অশ্লীল নানা কথাবার্তা বলা হয়। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।’
নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ) তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেন পরীমনি। ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে যাই উল্লেখ করে পরীমনি বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অভিযোগ রেকর্ড করেননি। বরং সকালে এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।’ এ সময় পুলিশের সাহায্যে হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বলে উল্লেখ করেন পরীমণি।