ঘরের রক্ত মুছে গোসল করে ফজরে ইমামতি, জুমার নামাজে দুইবার ভুল।
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৫ নভেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:২৩ এএম, ২ আগস্ট,শনিবার,২০২৫

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকায় ইউসুফ গাজীর ৩৯ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন নি’হত আজহার। বাসায় আসা-যাওয়ার সূত্র ধরেই ইমামের সঙ্গে সম্পর্ক হয় তাঁর স্ত্রীর। অন্তত এক বছর ধরে এই সম্পর্ক চলছিল। আজহার বি’ষয়টি টের পেয়ে পাঁচ মাস আগে বাসাও বদল করেন। ২০ দিন আগেও ইমাম ও আজহারের স্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়।
বি’ষয়টি জানতে পেরে আজহার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তাঁর নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে চলে যান। এরপর কালিহাতী থেকে ইমামকে ফোন করে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের বি’ষয়টি জানতে চাইলে ইমাম অ’স্বীকার করেন। ইমাম বি’ষয়টি নিয়ে কথা বলতে আজহারকে মসজিদে আসতে বলেন। সে অনুযায়ী ইমামের সঙ্গে দেখা করতে গত ১৯ মে দক্ষিণখানে সরদারবাড়ি মসজিদে আসার পর নিখোঁজ হন আজহার।
এ ঘটনা তদ’ন্তের একপর্যায়ে দক্ষিণখানে মা’দরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়া থেকে আব্দুর রহমানকে গ্রে”প্ত ার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারের লা’শ উ’দ্ধার করা হয়।
দক্ষিণখান থা’নার পরিদর্শক (তদ’ন্ত) আজিজুল হক মিয়া বলেন, এ ঘটনায় প’রকী’য়া প্রেমের সম্পর্ক বি’ষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব’ের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল ‘বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এই হ’ত্যাকাণ্ডের বি’ষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন র্যাব’-১-এর পরিচালক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল মুত্তাকিম। তিনি বলেন, র্যাব’ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে ইমাম আব্দুর রহমান আজহারকে হ’ত্যার দায় স্বীকার করেন। ইমাম রহমান র্যাব’ের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, আজহার অ’ভিযোগ করছিলেন যে তাঁর স্ত্রীর দিকে ইমামের কুনজর রয়েছে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডায় তিনি আজহারকে হ’ত্যা করেন। তবে আজহারের স্ত্রীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার কথা অ’স্বীকার করেন ইমাম।
আব্দুল মুত্তাকিম বলেন, প্রাথমিক তদ’ন্তে র্যাব’ জানতে পেরেছে যে দক্ষিণখানের বাসি’ন্দা আজহারের স্ত্রীর প্রতি কুনজর ছিল ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের। বি’ষয়টি জানার পর ইমামকে নিষে’ধ করতে মসজিদে গিয়েই খু’ন হন আজহার। ইমাম পুরো হ’ত্যাকাণ্ডটি ঘটান মসজিদে তাঁর শয়নকক্ষে। এই হ’ত্যাকাণ্ড ঘটানোর পরও ইমাম মসজিদে নিজ কক্ষেই অবস্থান করেন। তিনি নিয়মিত ওয়াক্তের নামাজে ইমামতিও করেন।
স্ত্রীর ওপর ইমামের কুনজর পড়ার অ’ভিযোগ পেয়ে গত ১৯ মে রাতে সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ইমামের কক্ষে যাওয়ার পর থেকেই আজহার নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের অ’ভিযোগের ভিত্তিতে এ বি’ষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এক পর্যায়ে মসজিদের সিঁড়িতে র’ক্তের দাগ ও সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার তথ্য পায় র্যাব’। গতকাল ভোরে ইমামকে আট’ক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হ’ত্যার ঘটনা বেরিয়ে আসে।
গতকাল দুপুরের দিকে এলাকায় গেলে সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সামনে স্থানীয় মুসল্লিসহ এলাকাবাসীর ভিড় দেখা যায়। দোতলা ভবনবিশি’ষ্ট মসজিদের এক পাশ তালাব’দ্ধ। অন্য পাশ নামাজের জন্য খোলা। নিচতলার ওজুখানার পানির ট্যাংকের ভেতর থেকেই আজহারের ছয় টুকরো লা’শ উ’দ্ধার করা হয়। সেখানে উপস্থিত মো. মোস্তফা নামের এক মুরব্বি বলেন, সকালে দুর্গন্ধ পাওয়া যায় মসজিদে। এ নিয়ে কানাকানি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা জেনে পুলিশ ও র্যাব’ এসে ছয় টুকরা লা’শ উ’দ্ধার করে। পরে হুজুরকে গ্রে”প্ত ার করে নিয়ে যায় র্যাব’। রিফাত নামের আরেক মুসল্লি বলেন, ‘ঠিক কখন আজহারকে খু’ন করা হয় তা আমর’া জানি না। তবে হ’ত্যার পর লা’শ মসজিদের ভেতরে রেখেই ইমাম সাহেব আমা’দের নামাজ পড়ান বলে মনে হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘটনার পর না পালিয়ে মসজিদের যে কক্ষে থাকতেন, সে কক্ষ ছেড়ে পাশে মা’দ্রাসার একটি কক্ষে থেকে যথারীতি ছয় দিন ধরে নামাজে ইমামতি করে আসছিলেন রহমান।স্থানীয়দের উ’দ্ধৃত করে র্যাব’-১ অধিনায়ক মোত্তাকিম বলেন, ঘরের র’ক্ত মুছে নিজে গোসল করে ফজরের নামাজে যথারীতি ইমামতি করেন আব্দুর রহমান। ঘটনার একদিন পর জুমা’র নামাজ পড়াতে গিয়ে দুবার তার ভুল হয়েছিল এবং তাকে কিছুটা অ’স্বাভা’বিক লাগছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।