প্রীতির শরীরে গুলি লেগেছে আমি জানতাম না: শুটার মাসুম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৭ মার্চ,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রোববার শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা আগে থেকে থাকলেও কলেজছাত্রী প্রীতিকে টার্গেট করে গুলি মারেননি বলেও জানান তিনি।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শুটার মাসুম বলেন, ‘আমার টার্গেট ছিল টিপুকে হত্যা করা। তাই আমি অস্ত্রের ট্রিগার চেপে রেখেছিলাম। একাধারে গুলি বের হচ্ছিল। প্রীতিকে টার্গেট করে গুলি মারিনি। প্রীতির শরীরে যে গুলি লেগেছে সেটা আমি জানতাম না। হত্যার পরের দিন টিভি দেখে জেনেছি। তাকে আমি গুলি করতেও যাইনি। আমার টার্গেট ছিল কেবল টিপু।’ রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে মাসুমকে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে হাজির করে ডিবি। তবে গণমাধ্যমের সামনে কিছু বলেনি মাসুম।
এ বিষয়ে রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘মাসুম এই হত্যাকাণ্ডের কথাটি আমার কাছে স্বীকার করেছে। হত্যার জন্য মাসুমকে কন্ট্রাক্ট করা হয়েছিল। তবে টাকা দিয়ে নয়, তাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কন্ট্রাক্ট করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৪-৫টি মামলা রয়েছে। একটি হত্যা মামলাও রয়েছে। তাকে সেসব মামলা থেকে সেভ করা হবে বলা হয়েছিল।’
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার মাসুম একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইন পাশ করেছে। তার বাবা একটি স্কুলের শিক্ষক। তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। নিহত প্রীতির গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। বাবার চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকে তার পরিবার। প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন মিরপুর-২-এ একটি কোম্পানির ফ্যাক্টরির প্রোডাকশনে চাকরি করেন।
ঘটনার দিন মাসুম গোপনে সংবাদ পায় মতিঝিল এজিবি কলোনি সংলগ্ন কাঁচা বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা টিপু রেস্টুরেন্টে আছে। এরপর মাসুম আসে এবং গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু টিপু অনেক লোকজনের মধ্যে থাকায় গুলি করতে না পেরে গাড়ি অনুসরণ করতে থাকে। গাড়িটি শাজাহানপুর লাইনের আগে আমতলা রাস্তায় যানজটে আটকা পড়লে মাসুম টিপুকে লক্ষ্য করে উপর্যপুরি গুলি করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে তার দুই বন্ধু ছিল বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
এটি কি কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড? এমন প্রশ্নে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আপাতত আমরা তিন থেকে চারটি মোটিভ নিয়ে কাজ করছি। তবে এখন শুধুমাত্র তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনার ৫ দিন আগে মাসুমকে কিলিং মিশনে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তির তিন দিনের মাথায় সে চূড়ান্ত মিশন সফল করার অভিপ্রায়ে টিপুকে অনুসরণ করে। তারই অংশ হিসেবে তাকে এলোপাথাড়ি গুলি করে। তবে তাকে কেউ ভাড়া করেছিল কি-না বা কত টাকায় কাজ করেছে, পাশাপাশি অস্ত্রটি কোথায় তা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়নি।
কলেজছাত্রী সমিয়া আফরান প্রীতিকে তাহলে কেন হত্যা করা হলো, এ বিষয়ে মাসুম কি কিছু বলেছে?- এমন প্রশ্নে হাফিজ আক্তার বলেন, পিস্তলের ট্রিগারে চাপ দেওয়া ছিল। যে কয়টা গুলি ছিল তার সবই বের হয়ে যায়। মূলত এ কারণেই প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। কিন্তু প্রীতিকে হত্যা করার কোন উদ্দেশ্য তার ছিল না।