সার্জেন্টে মহুয়া হাজংয়ের আহত বাবাকেই দায়ী করে জিডি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নারী পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা বিজিবির সাবেক সদস্য মনোরঞ্জন হাজংকেই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তাকে ধাক্কা দেওয়া গাড়ি চালক বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান। ঘটনার পর দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রায় দুই সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বনানী থানায় মামলা দায়ের করতে সক্ষম হন সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। অথচ এই মামলা দায়েরের দুইদিন আগেই ১৪ ডিসেম্বর বনানী থানায় জিডিটি লিপিবদ্ধ করেন সাঈদ হাসান। মনোরঞ্জনের ওপর দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে সাঈদ হাসান জিডিতে উল্লেখ করেন, এ ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নয়, বরং মনোরঞ্জন উল্টো দিক থেকে তার গাড়িতে ধক্কা মেরেছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া। তিনি বলেন, সাঈদ হাসান গত ১৪ ডিসেম্বর জিডিটি করেন। এ ঘটনায় সার্জেন্ট মহুয়া বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আমরা সবগুলা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে যাচ্ছি। এছাড়া যে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মনোরঞ্জন হাজং গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই গাড়িটির মালিকানা কার জানার জন্য ইতোমধ্যে আমরা আবেদন করেছি।
এদিকে সাঈদ হাসান জিডিতে অভিযোগ করেন, তার গাড়িটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়নি। কিন্তু তার গাড়িতে বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে এসে মনোরঞ্জনই লাগিয়ে দেন। এতে তিনি ও তার স্ত্রীর প্রাণহানির মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তাই উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এই দুর্ঘটনার সম্পন্ন দায়-দায়িত্ব মনোরঞ্জন ওপরই বর্তায়।
সাঈদ হাসানের দাবি, মনোরঞ্জন হাজংয়ের চিকিৎসার বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর ভোরে একবার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। পরে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের এক অধ্যাপকের অধীনে চিকিৎসার পরামর্শ দিলে ওই দিন বিকেলে তাকে আরেকবার ‘পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা’ দেওয়া হয়।
সাঈদের জিডির বিষয়ে মনোরঞ্জনের ভাইয়ের ছেলে মনিরাজ হাজং বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে মোটরসাইকেলটি ইউটার্নের জন্য দাঁড়িয়ে আছে তখন পেছন থেকে দ্রুত গতির একটি কার এসে ধাক্কা দিয়েছে। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জিডিতে যা লেখা হয়ে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, বানোয়াট মিথ্যা জিডিটি গ্রহণ করেছে পুলিশ। কিন্তু মহুয়া যে আসামির নাম উল্লেখ করে মামলাটি করতে চেয়েছিল সেটি পুলিশ গ্রহণ করেনি। গত ২ ডিসেম্বর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি ইউলুপে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গাড়ির ধাক্কায় মারাত্বক আহত হন মনোরঞ্জন। এরপর থেকে মামলার অভিযোগ নিয়ে ঘুরেছেন আহতের মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়া হাজং।
অবশেষে ব্যপক সমালোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহুয়া হাজংয়ের মামলাটি নেয় বনানী থানা পুলিশ। তবে মামলায় আসামি হিসেবে অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়। জানা যায়, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে বিচারপতির ছেলেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ ও গাড়িটি জব্দ করা হয়। কিন্তু কিছু সময় পরই ছাড়া পেয়ে যান ওই চালক। এদিকে, মনোরঞ্জনের ডান পায়ে কয়েক দফা অপারেশন করে ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।