avertisements 2

বাড্ডায় স্কুলের শ্রেণিকক্ষ সাবলেট ভাড়া!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ জুলাই, বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫১ এএম, ৬ মার্চ, বুধবার,২০২৪

Text

১৬ মাস টানা শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্কুলের ঘর ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে স্কুলের কয়েকটি রুম ভাড়া দিয়েছেন রাজধানীর পূর্ব বাড্ডা হাই স্কুল কতৃপক্ষ। আর বেতন বন্ধ থাকায় আর্থিক কষ্টে আছেন শিক্ষকরা। একই চিত্র পূর্ব বাড্ডার প্রায় সকল বেসরকারি স্কুলগুলোতে। অভিভাবকরা বলেন, যেখানে তিনবেলা খাবার জোগারই হচ্ছে না, সেখানে ছেলেমেয়েদের অনলাইন ক্লাস বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়।

রাজধানীর বাড্ডায় একটি দু’তলা বাসা ভাড়া নিয়ে তৈরি করা হয় স্কুলটি। বছরের অন্য সময় শিক্ষার্থীদের কলকাকলীতে যেটি মূখরিত থাকত, কিন্তু করোনার কারণে এখন সবকিছুই স্থবির! কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, করোনাকালীন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বেতন দিচ্ছে না, কয়েক মাস যাবৎ মোটা অঙ্কের ভাড়া বাকী। আবার বেতন না পেয়ে শিক্ষকরাও আছেন চরম কষ্টে। তিনি বলেন, শিশু শ্রেণি থেকে তিলতিল করে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে বাচ্চাগুলোকে আমরা পড়িয়ে আসছি। দেশের এই কান্তিলগ্নে এসে যদি আমরা স্কুলটা ছেড়ে দেই, তাহলে এরচেয়ে কষ্টের কথা আমি কাউকে বুঝাতে পারবো না, বুঝানোর মতো আমার ভাষা নেই।

মাসে স্কুলের ভাড়া ৪০ হাজার টাকা বাড়ির মালিক বলেন আপনি যদি ভাড়া দিতে না পারেন তাহলে স্কুল বন্ধ করে দেন আমি অন্য ব্যবস্থা করবো। তাই বাধ্য হয়ে স্কুলটা ধরে রাখতে এর কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দিয়েছি এই স্কুলের এক অভিভাবক অভাবের কারণে ভাড়া ফ্ল‌াট ছেড়ে দিয়ে স্কুলে ভাড়া ওঠেছেন। অভিভাবক বলেন, অল্প ভাড়ার জন্য আমি এখানে এসেছি, আসলে অনলাইন ক্লাস আমাদের মতো নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত গরিব মানুষের জন্য খুবই কষ্টকর। একটি মোবাইল কিনতে গেলে ৭/৮ হাজার টাকা লাগে তারপর আবার ইন্টারনেট বিল দিতে হয় মাসের পর মাস যেখানে আমরা দিন এনে দিন খাই আবার ঠিক মতো ভাড়া দিতে পারছি না কিভাবে ছেলেমেয়েদের অনলাইন ক্লাস করাব? তা আমাদের মতো স্বল্প আয়ের লোকদের পক্ষে সম্ভব না। বাড্ডা এলাকার সব বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো যেন অক্সিজেনের অভাবে করোনা রোগীর মতো ।

এ সমস্ত বেসরকারি স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের আয়ে চলত স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ বিক্রি করে দিয়েছে। বাড্ডা আইডিয়াল স্কুল, হলি ভিশন স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালেন ভাড়া বাকি থাকায় স্কুল ছেড়ে দিয়েছেন। কিছুদিন আগে স্কুলের একজন ছাত্র আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলেও প্রধান শিক্ষক জানান। তাছাড়া রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ঢাকা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক জানান ভাড়া দিতে না পারায় দুই রুম কারখানার গোডাউন ভাড়া দিয়েছিলা।

এখন স্কুল ছেড়ে দিয়ে একটি ছোট্ট রুম ভাড়া নিয়েছি অফিস কক্ষ হিসেবে, শিকদার আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক সুজন আহমেদ নিরুপায় হয়ে ছোট্ট একটি কসমেটিক্সের দোকান দিয়েছেন। রসুলপুর স্কুলের শিক্ষক সাইফ আল-হাসান, রেজাউল করিম সোহাগ জানান, এতোদিন কষ্টকরে চলতে পারলেও ভবিষ্যতে অন্ধকার দেখছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংশের পথে চলে যাবে। অভিভাবকরা বলছেন তারা চরম অভাবে আছেন ছেলেমেয়েদের মুখে খাবার দিতেই পারছি না কিভাবে লেখাপড়া করাবো? স্কুল টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে প্রণদনার দাবি জানান শিক্ষকরা। করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে বলেও জানান শিক্ষকরা।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2