avertisements 2

বাবার লাশ ২২ ঘণ্টা উঠানে রেখে সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে ৫ সন্তান

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:২৩ এএম, ১০ মার্চ,রবিবার,২০২৪

Text

জমি ভাগাভাগি নিয়ে পাঁচ সন্তানের দ্বন্দ্বে ২২ ঘণ্টা ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকলো এক বাবার মৃতদেহ। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার এ ঘটনায় অবশেষে বুধবার দুপুরে সন্তানদের দ্বন্দ্ব মেটানোর আশ্বাস দিয়ে মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে।  উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুরিয়া গ্রামে মঙ্গলবার বিকেলে মারা যান ইয়াছিন মোল্লা (৮৫)। বাড়ির উঠানেই পড়ে ছিল তার মৃতদেহ।

স্থানীয়রা জানান, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মৃত ইয়াছিন মোল্লার পাঁচ সন্তানের মধ্যে বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজের সঙ্গে ছোট ছেলে রহমান মোল্লার দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরেই মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন না করে জমি-জমা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘ ২২ঘন্টা পর দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে শালিসের মাধ্যমে আপোস হলে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। বুধবার তার দাফন সম্পন্ন হয়।

মৃত ইয়াছিন মোল্লার সন্তান বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাবা ছোট ভাই রহমান মোল্লার কাছেছিল। এ সুযোগে তাকে ফুঁসলিয়ে তার সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন রহমান। এ নিয়ে রাজবাড়ী কোর্টে আমরা একটা মামলাও করি। সেই মামলায় গত ৫ জুলাই কোর্ট বাবাকে হাজির হতে নির্দেশ দিলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেনি।

তারা বলেন, বাবার অসুস্থতার খবরে আমরা তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে বললেও ছোট ভাই রহমান আমাদের কথা না শুনে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। আমাদের ধারণা রহমান ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে মেরে ফেলেছে।

এ প্রসঙ্গে মৃত ইয়াছিন মোল্লার ছোট ছেলে রহমান মোল্লা বলেন, গত শুক্রবার হঠাৎ করে আমার বাবা অসুস্থ হলে তাকে গোয়ালন্দে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাই, এ সময় ডাক্তার কিছু টেস্ট ও ওষুধ লিখে দিয়ে বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে বলেন। আমি সেই মতে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাই।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে বাবা আরো বেশি অসুস্থ হলে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনা শোনার সাথে সাথেই আমি তাদের ওখানে যাই এবং শালিসের মাধ্যমে লকডাউনের পরে সমাধানের কথা বলে স্ট্যাম্পে তাদের উভয় পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে মৃত ইয়াছিন মোল্লার দাফনের সিদ্ধান্ত নিই। এ সময় ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2