চাহিদা অনুযায়ী মেলামেশা করতে না দেয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করেন হীরা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১৮ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় স্ত্রীকে হাত বেঁধে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ঘাতক স্বামী হীরা চৌধুরীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়। গত বুধবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার পূর্ব লামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, চাহিদা অনুযায়ী শারীরিক মেলামেশা করতে না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে সে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ন কবীরের আদালত হীরা চৌধুরীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
মামলার তদন্তকারী অফিসার ফতুল্লা মডেল থানার এসআই জাকির হোসেন মাসুদ বলেন, হীরা চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়- চাহিদা অনুযায়ী শারীরিক মেলামেশা করতে না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেছে। সে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করবে বলে জানালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
তিনি আরও জানান, হীরা চৌধুরীর এ জবানবন্দিসহ আরও বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে দেখা হবে এছাড়াও আর কোনো বিষয় রয়েছে কিনা। আদালত জবানবন্দি শেষে হীরা চৌধুরীকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
নিহত তানজিদা আক্তার পপি (২৫) ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত আলী আশরাফের মেয়ে। হীরা চৌধুরী পূর্ব লামাপাড়ার এলাকার ওমর চৌধুরী তুহিনের ছেলে। তাদের সংসারে তুষার (১০) ও ফুয়াদ (৭) নামে দুটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
নিহত তানজিদা আক্তার পপির মা জানান, ১৩ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করে আসছিলো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সব সময় চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেছি। জমি বিক্রি করেও মেয়ের সুখের জন্য চাহিদা পূরন করেছি। সবশেষ হত্যাকাণ্ডের আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরেও তার মেয়র শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এসেছি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে আমাদের ফোন করে জানানো হয়, তার মেয়ে শহরের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারি, মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, বুধবার ভোরে নিজ বাড়িতেই হীরা চৌধুরী তার স্ত্রী পপিকে হত্যা করে। হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকেই হীরাকে ছুরিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত পপির ভাই শাকিল বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
শাকিল জানান, ভোরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া ও হাতাহাতি শুরু হলে তাদের বড় ছেলে তুষার তার দাদাকে ডাকতে পাশের ফ্ল্যাটে যায়। তারা ফিরে এসে পপির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিল ছোট ছেলে ফুয়াদ।