ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে ৪৮ লাখ টাকা ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৭
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ অক্টোবর,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ডাকাতি। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে র্যাব পরিচয়ে ৪৮ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গুলশান বিভাগ। শনিবার ঢাকা মহানগরী ও পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সবুজ মিয়া ওরফে শ্যামল, সাহারুল ইসলাম ওরফে সাগর, আবু ইউসুফ, দিদার ওরফে দিদার মুন্সী, ফেরদৌস ওয়াহীদ, আলামিন দুয়ারী ওরফে দিপু ও দাউদ হোসেন মোল্যা।
তাদের কাছ থেকে নগদ ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ ডাকাতির সময় ব্যবহৃত র্যাবের জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ, খেলনা পিস্তল, ওয়্যারলেস সেট উদ্ধার করেছে ডিবি।
রবিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, চক্রটি ৪৮ লাখ টাকা ডাকাতির পরে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। ভাগে পাওয়া টাকা দিয়ে কেউ বাড়িভাড়া দিয়েছে, স্ত্রীর গয়না কিনেছে, কেউ বা জুয়া খেলেছে।
৪৮ লাখ টাকার মধ্যে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
হারুন অর রশিদ জানান, এই ডাকাতদলের মাস্টারমাইন্ড সবুজ মিয়া ওরফে শ্যামল। ঘটনার পর তারা শ্যামলের বনশ্রীর বাড়িতে গিয়ে ৪৮ লাখ টাকা ভাগ করে নেয়। এ ছাড়া কিছু টাকা খরচাপাতির জন্য রেখে দেয়।
পরে সাতজন সাত জেলায় চলে যায়।
ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা সবুজের নেতৃত্বে ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে (একজন আরেকজনকে চেনে না) ডাকাতি করে। অপারেশনের সময় তারা দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়। একটি দল বিভিন্ন ব্যাংকে অবস্থান করে এবং অন্য দলটি রাস্তায় অবস্থান করে। ব্যাংকে অবস্থানকারী ব্যক্তি টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করে আর রাস্তায় অবস্থাকারী দলটিকে টাকা উত্তোলনকারীর তথ্য প্রদান করে।
তখন রাস্তায় অবস্থানকারী দলটি টাকা উত্তোলকারীর পিছু নেয় এবং পথে ভিকটিমকে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে সর্বস্ব লুট করে নির্জন স্থানে ফেলে যায়। এরপর ডাকাতির সময় ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর প্লেট বদলে ফেলে এবং নিজেদের মোবাইল ফোন ভেঙে পানিতে ফেলে দেয়। পরে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় গিয়ে আত্মগোপন করে।
১০ অক্টোবর মাদার টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের কর্মকর্তা অনিমেষ চন্দ্র সাহা উত্তরার আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শাখা থেকে তাঁর কম্পানির ৪৮ লাখ টাকা নিয়ে প্রাইভেট কারে বনানী যাচ্ছিলেন। কাওলা থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে যাওয়ার সময় খিলক্ষেত থানার প্রাইম ডেন্টাল কলেজ বরাবর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতচক্রের সদস্যরা নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে কম্পানির গাড়ি থামায়। গাড়িতে অবৈধ টাকা আছে উল্লেখ করে তারা গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। গাড়িতে থাকা কম্পানির কর্মকর্তা অনিমেষ চন্দ্র সাহা, মো. শাহজাহান মিয়া ও ড্রাইভার আবুল বাশারকে হাতকড়া পরায়। এরপর ৪৮ লাখ টাকাসহ ওই গাড়িতে থাকা কম্পানির তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্য একটি গাড়িতে তুলে চোখ বেঁধে তাদের অপহরণ করে। এ ঘটনায় কম্পানির সিইও সোহেল আহম্মেদ সুলতান খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের নামে ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মাদক মামলা রয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।