‘হু আর ইউ’ বলেই ইউএনওর ওপর আ. লীগ কর্মীদের হামলা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১ অক্টোবর,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
উপজেলা পরিষদের নির্মীয়মাণ গেট ভেঙে ভেতরে কয়েক শ গাড়ি রেখেছিলেন পাশের স্কুল মাঠে একটি অনুষ্ঠানে আসা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এতে আপত্তি জানালে ‘এটা সরকারি অফিস। এখানে আমরাই সব। হু আর ইউ’ বলে হামলা ও ভাঙচুর চালান ক্ষিপ্ত নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। ইউএনওকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত দুই আনসারসহ উপজেলার সরকারি ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির বাবা শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জ আরআরএন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আজ শনিবার বিকেলে স্মরণসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
সরকারি ছুটির দিন থাকায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশের দুটি গেট বন্ধ রেখে সংস্কারকাজ চলছিল। স্মরণসভায় আসা ভিআইপিদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সকাল থেকে পরিষদ চত্বরে যানবাহন প্রবেশও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু মোক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী নিরাপত্তারক্ষীদের বাধা উপেক্ষা করে নির্মীয়মাণ গেট ভেঙে কয়েক শ অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে চত্বরের ভেতর ঢুকে পড়েন।
ওই সময় চত্বরের ভেতরে শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠান চলছিল।
খবর পেয়ে ইউএনও আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। তিনি চেয়ারম্যানকে ডেকে গাড়িগুলো বাইরে রাখতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গের নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। ইউএনওকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন আনসার আকরাম হোসেন ও রেজোয়ান হোসেন, ইউএনওর গাড়িচালক রুবেল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের প্রগ্রামার উজ্জল কুমার শীল, উপজেলা বিআরডিবি অফিসের হিসাবরক্ষক লিটন আহমেদ, উপজেলা প্রকৌশল অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান রাসেল।
উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ইউএনও অফিস এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসে ইটপাটকেল ছুড়ে কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘এখানে আমরাই সব। হু আর ইউ’ বলে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন, যুবলীগের ফয়সাল ফকির, কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা ছিদ্দিকসহ আট থেকে ১০ জন আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী লাঠি নিয়ে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত ছয়জনকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ‘একটি অনুষ্ঠানে আছি। পরে কথা বলব’ বলে ফোন কেটে দেন।