avertisements 2

আবারো ঢাকা ওয়াসার এমডি হচ্ছেন তাকসিম এ খান!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জুলাই, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:৪৭ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

আবারো ঢাকা ওয়াসায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হচ্ছেন প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। গতকাল ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ৩০৬তম বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী তাকসিম এ খানের মেয়াদ এ বছরের ১৩ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বোর্ড সভার প্রস্তাবে সরকার অনুমোদন দিলে আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবেন তাকসিম এ খান। পাশাপাশি টানা ১৭ বছর ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে থাকার ঐতিহাসিক রেকর্ডও গড়বেন তিনি।

গতকাল ওয়াসা ভবনে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোট ১৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র সাতজন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে তিনজন সদস্য তাকসিম এ খানকে পুনঃনিয়োগ দেয়ার বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দেন। তাদের আপত্তির বিষয়টি আমলে না নিয়ে তাকসিম এ খানকে আবারো এমডি নিয়োগ দিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে। মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব চূড়ান্ত করলে আবারো তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন তাকসিম এ খান।

জানা যায়, ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের মোট ১৩ সদস্যের মধ্যে এমডি ও বোর্ড চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে সদস্য। পক্ষে মত দানকারীদের মধ্যে এমডি তাকসিম এ খান নিজে ও বোর্ড চেয়ারম্যান ড. সুজিত কুমার বালাও ছিলেন। আপত্তি দেয়া বোর্ড সদস্যরা হলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সহসভাপতি ইমরান আহমেদ, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি একেএম আব্দুল হামিদ ও ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস বাংলাদেশের সহসভাপতি সাব্বির আহমেদ। উপস্থিত অন্য দুজন সদস্য হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন রশিদ শুভ্র ও সাবেক সংসদ সদস্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বোর্ড সভার প্রস্তাবে সরকার অনুমোদন দিলে ২০২৬ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবেন তাকসিম এ খান। পাশাপাশি টানা ১৭ বছর ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে থাকার ঐতিহাসিক রেকর্ডও গড়বেন তিনি।

এ বিষয়ে বোর্ড সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র নয়া দিগন্তকে বলেন, বর্তমান এমডির মেয়াদ আগামী অক্টোবরে শেষ হবে। এজন্য বোর্ড সভায় তার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে বেশির ভাগ সদস্য পজিটিভ মত দিয়েছেন। চাকরি বিধিমালা অনুসারে কোনো সমস্যা না থাকলে তাকে নিয়োগ দেয়ার পক্ষে বলা হয়েছে। তবে কেউ কেউ ভিন্ন মত দিয়েছেন। তবে একজন বোর্ড সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনজন বোর্ড সদস্য এমডির পুনঃনিয়োগ নিয়ে আপত্তি দিয়েছিলেন। তাদের আপত্তি আমলে নেয়া হয়নি। আমরা এমডি নিয়োগের নিয়ম জানতে চেয়েছিলাম। তারা কোনো নিয়ম দেখাতে চান না। তারা শুধু বর্তমান এমডির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পক্ষে কথা বলেন।

তাকসিম এ খান ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর প্রথম ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে দফায় দফায় তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালনের পর আবারো এমডি হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ ঘনিষ্ঠ মহলে ব্যক্ত করতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে তাকসিম এ খানের সাথে সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফার দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। এমডির বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন গোলাম মোস্তফা। এর পর গত ২১ মে গোলাম মোস্তফাকেই অব্যাহতি দেয় মন্ত্রণালয়। গোলাম মোস্তফা বলেন, এমডির মেয়াদ শেষের দিকে হওয়ায় আমি নিয়মমতো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমডি নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এটা তাকসিম এ খান তা মেনে নিতে পারেননি। এ জন্যই তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

এমডি নিয়োগের নিয়ম : ঢাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দায়িত্বরত এমডির মেয়াদ শেষ হওয়ার ন্যূনতম তিন মাস আগে একাধিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদনকারীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করতে হয়। উল্লেখিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন। ওয়াসা বোর্ড আবেনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে সর্বাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করবে। বোর্ড তাদের মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে। বোর্ড সদস্যরা তাদের নম্বর দেবেন। সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে তিন থেকে পাঁচজনের একটি তালিকা তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে তিনজনের নাম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবে। প্রধানমন্ত্রী একজন ব্যক্তিকে এমডির পদের জন্য চূড়ান্ত করবেন। তাকসিম এ খান প্রথম এমডি হিসেবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১২ সালের অক্টোবরে তার প্রথম মেয়াদ শেষ হয়। পরে মন্ত্রণালয় দুই দফায় তার মেয়াদ বৃদ্ধি করে। ২০১৫ সালে ওয়াসা বোর্ড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে বর্তমান এমডিই আবার নিয়োগ পান। পরবর্তীতে আর কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে বোর্ডের মাধ্যমে দফায় দফায় তার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2