বন্ধুকে অপহরণ করে হত্যা, লাশের বস্তায় বেঁধে দেওয়া হয় ইট
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ মে,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:০১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ফারাবি আহমেদ হৃদয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুকুর থেকে হৃদয়ের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে আশুলিয়ার শ্রীপুরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় হৃদয়ের মরদেহ। লাশ যেন ভেসে না ওঠে এ জন্য বস্তার সঙ্গে ইট বেঁধে দিয়েছিল হত্যাকারীরা।
নিহত মো. হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ১১ মে আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে নিহতের পরিবার। এর মধ্যে হৃদয়ের নম্বর থেকে পরিবারের কাছে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মুয়াজ হোসেন পরান (২২) ও সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫)। তারা দুজন আশুলিয়ায় ভাড়া থাকত। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর থেকে আকাশ নামের আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সে পেশায় পোশাক শ্রমিক।
র্যাব-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ৮ মে সকাল ১০টার দিকে পরান তাকে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে জিম্মি করে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তবে সেদিন দুপুর তাকে হত্যা করে লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রাখে। পরে চালকবিহীন ভ্যান ম্যানেজ করে বস্তাবন্দি লাশ নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় লাশ গুম করার জন্য ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যার দিকে শ্রীপুরের একটি পুকুরে বস্তার সঙ্গে ইট বেঁধে হৃদয়ের লাশ ডুবিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মোট চারজন জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে গ্রেপ্তারকৃতরা।
তিনি আরো বলেন, পরানের সাথে হৃদয়ের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। হৃদয়ের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা সাজায় পরান। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী পরান তার আরো তিন সহযোগীকে ডেকে নেয়। যেহেতু তারা বন্ধু, ফলে মুক্তিপণ পেয়ে ছেড়ে দিলেও পরানসহ বাকিরা ফেঁসে যাবে। তাই ঘটনার দিন শ্বাসরোধ করে ও বালিশচাপা দিয়ে হৃদয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা।
নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরির তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।