‘দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১০ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:৪৬ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৫

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে জামিন আবেদনের শুনানিকালে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন। মঙ্গলবার বিচারপতি মো: এমদাদুল হক আজাদের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শুনানির শুরুতে আদিলুর-এলানের আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতের সামনে দাঁড়ান। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: রেজাউল করিম দাঁড়িয়ে বলেন, আমাদেরও বক্তব্য আছে। তখন আদালত বলেন, ‘আসামিদের আইনজীবীদের আগে বলতে দিন। আপনি এখন লাফ দিয়ে উঠছেন কেন? দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।’
শুনানিতে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় আসামিদের দুই বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় আবারো জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
তখন আদালত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তাহলে তাদের দুই বছরের সাজা দিলেন কেন? যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারলেন না।’ এরপর আদালত তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলায় আদিলুর ও এলানকে জামিন দেন। একইসাথে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন।
আদালতে তাদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়া বলেন, আদালত আমাদের আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন এবং জামিন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে এই সাজা দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত রায়ে আদিলুর-এলান নির্দোষ প্রমাণিত হবেন এবং খালাস পাবেন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও এলানের দুই বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে তাদের সাজা বাড়াতে ৫ অক্টোবর হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে হওয়া মামলায় এ রায় দেন। রায়ে দুই বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। ওই বছরের ১০ জুলাই নিহতের তালিকা চেয়ে অধিকারকে চিঠি দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংগঠনটি তালিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম। জিডির পর ওই দিনই গ্রেফতার হন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান। ওই বছরের ৯ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি।
তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষী করে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আসামি এলানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত আদেশের পর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চাইলে উচ্চ আদালতের আদেশে বিচারকাজ স্থগিত হয়ে যায়।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য শুরুর দুই বছরের ব্যবধানে বিচার শেষে মামলাটিতে রায় ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন
এই বিভাগের আরো খবর

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা কেউ ভোট দিতে পারবেন না

তরুণরা সক্রিয় থাকলে কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকতে পারে না : প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিএনপির ‘সদিচ্ছা’ দেখতে চায় এনসিপি, আজ ফের বসবে কমিশন

লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর আ.লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার চেষ্টা
