চট্টগ্রামে লেভেল-ক্রসিং এ দ্রুতগামী ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী নিহত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ জুলাই,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের ১১ জন আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজার এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ মোট ১৬ জন আরোহী ছিলো। এর মধ্যে ১১ জন মারা গেছে আর বাকীরা এখন হাসপাতালে।
মাইক্রোবাসটির আরোহীরা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দুরের খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখে ফেরার পথে বেলা পৌনে দুটার দিকে এ দুর্ঘটনার শিকার হন বলে জানিয়েছেন মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় লেভেল ক্রসিং এ কোন গার্ড ছিলো কি-না তা নিশ্চিত নয়। ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের জানিয়েছেন যে জুমার নামাজের ওই সময়টিতে সেখানে কর্তব্যরত গার্ডকে তারা দেখেননি।
স্থানীয় সাংবাদিক আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানান, মিরসরাইয়ে অনেকগুলো লেভেল ক্রসিং আছে এবং এর বেশিরভাগই উন্মুক্ত। অর্থাৎ শক্ত কোন গেইট সেখানে নেই। দুর্ঘটনা যেখানে হয়েছে সেটিও ছিলো অনেকটা উন্মুক্ত, যেখানে শুধু বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া ছিলো।
কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটলো
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আন্ত:নগর ট্রেন মহানগর প্রভাতীকে দেখেও মাইক্রোবাসটি দ্রুত লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার চেষ্টা করছিলো।
মূহুর্তের মধ্যেই মাইক্রোবাসটি ট্রেনের সামনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায়। দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ঠেলে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত যেখানে গিয়ে ট্রেনটি থামে সেখানে ট্রেনের সামনেই দুমড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটি লাইনের ওপরই আড়াআড়ি অবস্থায় পড়ে ছিলো।
ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। আর আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রাও তাদের সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়।
তাড়া ছিলো মাইক্রোবাস যাত্রীদের
স্থানীয়রা কয়েকজন জানিয়েছেন, ট্রেনটি যখন আসছিলো তখন বাঁশের একটি ব্যারিয়ার সেখানে দেয়া ছিলো। কোন গার্ড না থাকলেও মাইক্রোবাস যাত্রীরা নিজেরাই ব্যারিয়ারটি সরিয়ে ফেলেন।
অর্থাৎ ট্রেনটি ক্রসিংয়ে আসার আগেই রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিলো মাইক্রোবাসটি।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের রেল কর্মকর্তাদের দাবি, ওই গেটে গেটকিপার ছিলো এবং ট্রেন আসার আগে গেটও ফেলা হয়েছিলো। কিন্তু মাইক্রোবাসের চালক জোর করেই ব্যারিকেড তুলে মাইক্রোবাস নিয়ে ট্রেন লাইনে উঠে যান।
কিন্তু এর মধ্যে দ্রুতগতিতে ট্রেনটি সামনে এসে পড়ে এবং সামনে ইঞ্জিনের সাথে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়।
বিস্তারিত পরিচয় জানা না গেলেও নিহত ও আহতরা চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের যুগীরহাট এলাকার বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে।
ঝর্ণা দেখতে যাওয়ার আগে তারা যে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তাতে দেখা যায় মাইক্রোবাস আরোহীরা ছিলেন বয়সে তরুণ।