avertisements 2

ডিপোর আগুনে পুড়েছে শাবানার স্বপ্ন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪০ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

স্বামী আর সন্তানদের নিয়ে সুখের সংসার ছিল শাবানা আক্তারের (৩০)। গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কন্টেইনার ডিপোর আগুনে তার স্বপ্ন ও সাধ ভস্মীভূত হয়েছে। ডিপোর আইসিডি-১ এর ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন শাবানার স্বামী নেজাম উদ্দিন রুবেল। আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ছুটে গিয়েছিলেন ডিপোতে। পরে আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তার। রুবেল চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছুড়ি গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) সকালে সন্তানদের নিয়ে স্বামীর মে মাসের বেতন তুলতে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আসেন শাবানা আক্তার। সেখানে তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তিনি। সন্তানদের পড়ালেখা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। মুনতাসির রায়ান (৫) নামে এক ছেলে, নাওরিন রাইসা ও নাওশিন রাফিয়া নামে দশ মাস বয়সী দুটি জমজ কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের।

স্বামী নেজাম উদ্দিন রুবেলের কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় চোখ ভিজে যাচ্ছিল শাবানার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো ৪ জুন (শনিবার) রাত ৮টায় অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ফেরেন রুবেল। ডিপোর পাশে দিদার কলোনিতেই আমাদের বাসা। রাত সাড়ে ৯টায় ডিপোতে আগুন লাগার খবর আসে। ওই সময় তিনি রাতের খাবারও খাননি। মাত্র ফ্রেশ হয়েছিলেন। ফোন পেয়ে দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। তার জন্য সারারাত ডিপোর গেটে ছিলাম। কিন্তু আর দেখা হয়নি। ঘটনার পরদিন রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে ছুটে যাই। মর্গে তার নিথর দেহ পড়েছিল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে শাবানা আক্তার বলেন, লাশ গ্রহণের সময় জেলা প্রশাসক ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বিএম কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ থেকে এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। মঙ্গলবার কাগজপত্র জমা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, স্বামীর ইচ্ছে ছিল সন্তানদের ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে পড়ানোর। কিন্তু তার মৃত্যুতে সব স্বপ্নেরও মৃত্যু হয়েছে। সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে তিনি ডিপো কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন।

গত ৪ জুন রাত সাড়ে ৮টায় সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ৪৮ জনের মধ্যে ১৮টি লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। লাশের দাবিতে নমুনা দিয়েছেন স্বজনরা। 

ঘটনার চার দিন পর মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে মামলা করে পুলিশ। এতে আট জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তারা সবাই বিএম কনটেইনার ডিপোর কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ছয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2