কেউ কাঁদছেন লাশ পেয়ে, কেউ না পেয়ে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ জুন,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৫৯ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ঢুকছে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স। কোনোটিতে একটি, কোনোটিতে দুটি করে লাশ। ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্বুলেন্সের কাছে ছুটে গিয়ে লাশগুলো নামিয়ে নিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। আর অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেখলেই কাছে ছুটে যাচ্ছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। এরপর কেউ স্বজনের লাশ পেয়ে ভেঙে
পড়ছেন কান্নায়। আবার কেউ লাশ না পেয়েও কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতেন মোহাম্মদ ফারুক। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেয়ে ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে কথা হয় তার। এরপর থেকে আর বাবার খোঁজ পাননি ফাতেমা। তাই রোববার সকাল থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন চমেক হাসপাতাল এলাকায়।ফাতেমা বলেন,
বাবা শনিবার কাজে যোগ দেন। আগুনের খবর পেয়ে বাবাকে ফোন দেই। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাই। রাতে সেখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু বাবার খোঁজ পাইনি। সকাল থেকে হাসপাতাল ও মর্গে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, তাও তাকে পাইনি। আপনারা আমার বাবাকে খুঁজে দেন- বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাতেমা।ডিপোতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন নুরুল কাদের। এরপর থেকে তারও সন্ধান মেলেনি। বন্ধ রয়েছে মোবাইল ফোনও।নুরুল কাদেরের ফুফাতো ভাই মনির হোসেন বলেন, রাতে যখন
নুরুল কাদেরের সঙ্গে শেষ কথা হয়, তখন তিনি বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বলে জানান। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাতেই ডিপোসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও আমরা তার সন্ধান পাইনি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও খবর নিয়েছি। সেখানেও তার হদিস মেলেনি।এদিকে, রোববার সকাল থেকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শতাধিক ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কারো মাথায় আঘাত, কারো দুই হাতই ঝলসে গেছে। তাদের আর্তনাদ ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের বার্ন ইউনিট।দুই হাত ও মাথায় ব্যান্ডেজ হয়েছে রফিক উদ্দিনের। খবর
পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন জেঠাতো ভাই তাহের উদ্দিন। তিনি বলেন, ফেসবুকে ঘটনাটি জানার পর ভাইকে ফোন দেই। কিন্তু তাকে ফোনে না পেয়ে শেষে সীতাকুণ্ড চলে আসি। সেখানেও না পেয়ে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে জানতে পারি তিনি ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। এরপর বাড়িতে বিষয়টি জানাই।হাসপাতালের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স সোমা দাস বলেন, এখন পর্যন্ত ৯৩ জনের তালিকা পেয়েছি আমি। সবাই কম-বেশি আঘাতপ্রাপ্ত। তাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। একসঙ্গে এত রোগী আর কখনো দেখিনি আমি।