আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে স্কুল ছাত্রী রেবা, অভিযোগ পরিবারের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঝিনাইদহের একটি স্কুলে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার কিছুক্ষণ পর রেবা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সোমবার জেলার হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে নাকি অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঐ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা।
রেবা খাতুন সদর উপজেলার উত্তর সমশপুর গ্রামের সাগর হোসেনের মেয়ে এবং হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া চার শিক্ষার্থী হলো- ফারজানা, আসমা, সুমাইয়া ও উর্মিলা।
এদিকে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিথিলা ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জানা যায়, স্কুল পড়ুয়া কিশোরী মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে ইউনিসেফের অর্থায়নে প্রতি সাত দিন পর পর একজন শিক্ষার্থীকে একটি করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানো হচ্ছে।
সকালে স্কুল থেকে সব শ্রেণির ছাত্রীদের একটি করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ান শিক্ষকরা। এর কিছুক্ষণ পর ১১টার দিকে রেবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রেবাকে মৃত ঘোষণা করেন, জানায় রেবা খাতুনের সহপাঠী জান্নাতুল।
রেবার আরেক সহপাঠী সামিন বলেন, তারা রেবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় কোনো শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিল না। তখন সে ঠিক বুঝতে পারছিল না কী করবে। একপর্যায়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে রেবার বাড়ি ও স্কুলে জানানো হয় সে মারা গেছে।
রেবার মা স্বপ্না বেগম বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে স্কুলে যায় রেবা। এরপর স্কুল থেকে জানানো হয় আমার মেয়ে একটি ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তখন দ্রুত স্কুলে গিয়ে দেখি সেখানে মেয়ে নেই। পরে হাসপাতালে এসে দেখি রেবার মৃতদেহ নিয়ে সহপাঠীরা দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি আরো বলেন, কী কারণে মেয়ের মৃত্যু হলো এর সঠিক বিচার চাই। ভালো মেয়ে স্কুলে গেল আর পেলাম মৃত অবস্থায়। এর পেছনে শিক্ষকদের কোনো অবেহলা আছে কি না তা খুঁজে বের করে দোষিদের শাস্তি দেওয়া হোক।
হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসিমা খাতুন বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাধ্যমে ট্যাবলেট খাওয়াতে। সেভাবেই খাইয়েছি। এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে কী কারণে সে মারা গেছে তা জানি না।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, সাধারণত আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে কেউ মারা যায় না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে পেটে ব্যথা কিংবা অ্যাসিডিটি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। তবে সে আগে থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল কি না খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। সেখানে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন অফিসের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ও ইউনিসেফের একজন প্রতিনিধি থাকবে।