মুসলিমা রাতে কল পেয়ে বের হন, সকালে মেলে মস্তকহীন মরদেহ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৭ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০১ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
মুসলিমা খাতুন
খুলনার ফুলতলার উত্তরডিহি গ্রামের উত্তর মাঠের ধান ক্ষেত থেকে মুসলিমা খাতুন (২০) নামে এক তরুনীর মস্তকহীন বিবস্ত্র মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি দামোদর গ্রামের মোঃ শহিদুল হকের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও ভ্যান চালক মোঃ এমদাদুল হক গাজীর কন্যা এবং আইয়ান জুট মিলের শ্রমিক। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম জানান, ভোরে গ্রামের কৃষক রেজা সরদার পানি দেওয়ার জন্য উত্তর মাঠে গিয়ে রবিউল মল্লিকের ধান ক্ষেতে বস্ত্র ও মস্তকহীন লাশ দেখতে পান। পরবর্তীতে থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে নিহত মুসলিমার মেঝ বোন আকলিমা খাতুন (২৩) জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক নয়টার দিকে মোবাইলের কল পেয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে মুসলিমা বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরিনি। মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে উত্তরডিহির ধান ক্ষেতে অজ্ঞাত লাশের খবর পেয়ে প্রতিবেশী সালেহা বেগম (৪৫) কে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার বোনের লাশ শনাক্ত করেন।
এ সময় লাশের পরনে কোন বস্ত্র ছিল না এবং যৌনাঙ্গ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষত দেখতে পাওয়া যায়। তাকে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন করে খুন করা হতে পারে।
গত দুই বছর পূর্বে যশোরের প্রেমবাগ এলাকায় জনৈক সাগরের সাথে তার বিবাহ হলেও পরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তখন থেকে সে আইয়ান জুট মিলের শ্রমিকের কাজ নেয়।
সম্প্রতি নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও আইয়ান জুট মিলের শ্রমিক রিয়াজের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তবে ঘটনার রাতে কার ফোন পেয়ে সে বাসা থেকে বের হয় এবং কে বা কারা, কেনই বা এমন নৃশংসভাবে খুন করলো এ বিষয়টি তার জানা নেই।
খবর পেয়ে সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস তালুকদার, ওসি (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মর্গে প্রেরণ করে।
থানা অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস তালুকদার বলেন, ‘প্রেমঘটিত কোন ঘটনার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। নিহত মুসলিমার খন্ডিত মস্তক ও পরিধেয় বস্ত্র উদ্ধার হয়নি। ঘটনাস্থলে তাকে হত্যা না অন্য কোথাও তাকে হত্যা করে লাশ ওই স্থানে ফেলে রাখে সেটি নিশ্চিত নয়।’
তিন বোনের মধ্যে নিহত মুসলিমা ছিল সবার ছোট। তার পিতা মোঃ এমদাদুল হক গাজী পেশায় ভ্যান চালক হলেও শারীরিকভাবে ষ্ট্রোকের রোগী হওয়ায় মঙ্গলবার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দামোদর ঋষিপাড়া এলাকার মোঃ শহিদুল হকের বাড়িতে প্রায় ১০ বছর ধরে ভাড়া থাকলেও তারা সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার পাশেরখালি গ্রামের বাসিন্দা । এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।