শিক্ষকের মৃত্যু: ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৩৮ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ফাইল ছবি
অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভুঁঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ৭৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সভা শুরু হয়। এ সময় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিকেলে কুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তার মৃত্যুর পর সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে এই মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ তার অনুগত ছাত্ররা দায়ী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ড. সেলিমকে চাপ দিয়ে আসছিলেন ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিমকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা শিক্ষকের রুমে অবস্থান করেন। পরে কক্ষ থেকে বেরিয়ে ড. সেলিম দুপুরের খাবার খেতে ক্যাম্পাস থেকে নিজ বাসায় যান। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগ ওঠে, দাপ্তরিক কক্ষে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কতিপয় ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দু’দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অপরদিকে ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ দায়ী ছাত্রদের শাস্তির দাবি জানান শিক্ষকরা।