মাগুরায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরে উঠতে চান না অর্ধেকের বেশি পরিবার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:১১ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:০০ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় ৩০টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন। পানি বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে পাওয়ার ঘরে উঠতে চান না অর্ধেকের বেশি পরিবার।
ঘর উদ্বোধনের ১৭ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত ঘরে উঠেছে মাত্র ১১টি পরিবার। অনেকে আগের বাড়ি ছাড়তে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া অধিকাংশ পরিবার জমি থাকতে জমি এবং ঘর থাকতে ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগও পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ২৮৭ জনের জমিও নাই, ঘরও নাই। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় জমি ও ঘর দেওয়া হয় গত ২৩ জানুয়ারি। আগামীতে আরও ৪০ জনের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আশ্রায়ণের ঘরগুলোতে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। পানির ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া অনেকের উত্তরাধিকার সূত্রে জমি রয়েছে। অনেকে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ি করেছিলেন। তাদের এখন ভিটে মাটি ছাড়তে অনাগ্রহ দেখা দিয়েছে। তবে তারা ঘরে উঠার চাপে কোনোরকম দায়সারা খাট পালং রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন বলে জানা যায়।
দীঘা ইউনিয়নে ঘর পাওয়া আবু বক্কার মণ্ডল জানান, বর্তমানের নতুন ঘরের কি অবস্থা আমি জানিনে। বাপ দাদা সূত্রে আউনাড়া গ্রামে জমি পেয়েছিলাম। এখানে আমার বাড়ি আছে। এখানেই থাকি। একটা ছেলে আছে সে বাড়ি থাকে না। তবে ওই জায়গায় (আশ্রায়ণের ঘরে) যদি থাকতে হয় মাঝে মধ্যে থাকব।
নতুন ঘর পাওয়া একটি পরিবারের সন্তান ডালিম শেখ জানান, আমাদের বাড়ি আছে বিলখানিদাহ। এখানে আমার বাবার উত্তরাধিকার হিসেবে যে জমি আছে তা খুব কম। আমরা এইখানেই থাকব। বাবা রাত্রে বাড়িতে থাকে আর দিনে দেখাশোনার জন্য নতুন ঘরের ওইখানে যায়।
তিনি আরও জানান, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা হলে জমি ও ঘর থাকা আরও ৪-৫ জন ব্যক্তি সন্তানদের ভিটে বাড়িতে রেখে শুধু স্ত্রীকে নিয়ে নতুন ঘরে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
ঘরে ওঠা এক নারী জোসনা বেগম জানান, আমার থাকার কোনো জায়গা নেই, তাই পানি বিদ্যুতের সমস্যা থাকতেও আমি সব নিয়ে আসছি। আমার মতো তো সবার অবস্থা না। আমার এখানে সংসার করতে হবে। আমি ছাড়া এখানে (দীঘা ইউনিয়নে) কেউ ওঠে নাই। তারা নতুন ঘরে উঠার আগ্রহ নাই। অনেকে দেখাশোনার জন্য আমারে ঘরের চাবি দিতে চায়। তাদের বাড়িঘর সংসার সব আছে। এর থেকে সেখানে ভালো অবস্থা।
সরেজমিনে গেলে হাফিজার মোল্যাসহ অনেকে অভিযোগ করে জানান, শিরিনা নামে এক মেয়ের জমিও নাই, ঘরও নাই। বাবার বাড়ি পড়ে থাকে। তারা ঘর পায় না অথচ যাদের অবস্থা ভালো জমি ঘর সবই আছে তারা ঘর পাইছে।
বাবুখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আব্দুল কাদের জানান, বাবুখালীর ১০টি ঘরের কেউই এখনও ঘরে ওঠেনি। পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা ঠিক হলে তারা আসবে বলে জানিয়েছেন।
ঘর বিতরণে অনিয়ম বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, ‘জমিও নাই ঘরও নাই’ এর তালিকা গত ইউএনও যাচাই বাছাই করেছেন। আমরা এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন থেকে যারা ঘর পেতে আগ্রহী তাদেরকে ঘর দিয়েছি। তবে তাদের পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা খুব শিগগিরই সমাধান করা হবে।