avertisements 2

 ফারুকী ও তিশাকে নিয়ে সিডনিতে চলচ্চিত্র বিষয়ক আড্ডা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ জুন, বুধবার,২০১৯ | আপডেট: ০৮:০৯ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

গত ১৪ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় সিডনির কোগরার সেইন্ট জর্জ অডিটোরিয়ামে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা প্রভাত ফেরীর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং দেশী ইভেন্টস ও পথ প্রোডাকশনকে আয়োজনে জনপ্রিয় নাট্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা সাথে সিডনি প্রবাসীদের উৎসবমুখর কথোপকথন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় আরো ছিলো

অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি এবং রেস্টুরেন্ট রেইন ফরেস্ট। কানেকটিং দ্য ডটস‘ শিরোনামে আয়োজিত এ কথোপকথন অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে আয়োজক ও পরিবেশকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পথ প্রোডাকশনর পরিচালক নাহিদা কামাল রুপসা, দেশী ইভেন্টসের পরিচালক সৈয়দ ফায়াজ এবং প্রভাত ফেরীর সম্পাদক ও অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির পরিচালিকা শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী।

প্রভাত ফেরীর সম্পাদক তার বক্তব্যে নাটক ও নাট্য জগতের সাথে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক উল্লেখ করে ফারুকীকে নিয়ে বলেন, তিনি স্রোতের বিপরীতে চলা একজন মানুষ। বাংলাদেশে নাটকে যে নতুন ধারা সৃষ্টি হয়েছে সেটা তার মাধ্যমে। তার প্রজন্মের সময়কে কেন্দ্র করে তিনি চলচ্চিত্রে নিজস্ব স্রোত তৈরি করেছেন। তিশা সম্পর্কে তিনি বলেন , তার অভিনীত কোন নাটক বা সিনেমা দেখলে মনে হয় না যে আমরা নাটক বা সিনেমা দেখছি মনে হয়, আমাদের পাশের বাড়ীর মেয়ের জীবনের কোন ঘটনা দেখতে পাচ্ছি।

এছাড়া অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা এবং লেখক অজয় দাশ গুপ্ত তাদের বক্তব্যে সংস্কৃতিমনা প্রবাসী দর্শকদের সামনে উপস্থিত অতিথি পরিচালক ফারুকী এবং অভিনেত্রী তিশার বিভিন্ন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং কর্মসূত্রে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। পথ প্রোডাকশনের কোরিওগ্রাফার ক্রিস্টেন পাইপা ও নিক্সন গোমেজের পরিবেশনায় দ্বিধা গানটির সাথে ব্যাতিক্রম ধর্মী নাচ সকলের নজর কাড়ে।

এছাড়া মোশারফ করিম, অপি করিম, মারজুক রাসেল ও মামা চরিত্রের কাল্পনিক পরিবেশনার মঞ্চ নাটক দর্শকদের হাসির খোরাক জোগায়। বিরতির পর চিত্রপরিচালক সাকিব ইফতেখারের সঞ্চালনায় মঞ্চে আসেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী এবং নুসরাত ইমরোজ তিশা। দর্শকদের সারিতে ছিলেন সিডনির সুপরিচিত সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও আলোচনায় এবং পাশাপাশি ফারুকী ও তিশার উত্তর ও কথামালায় দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে শুনেন দেশের কথা, সিনেমার কথা, সংস্কৃতি ও শিল্পচর্চার নানা বিষয়াবলী।

অভিনয় নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিশা বলেন, যে স্ক্রিপ্টটা পড়ে ভালো লাগে, সে চরিত্রটা আমাকে টানে, যে চরিত্রটার মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজে পায়, আমি মনে করি কাজটি করতে পারব, সেই চরিত্রগুলোকে পছন্দ করি এবং সেই কাজ গুলো করি। শুধু টাকা আয় করার জন্যই আমি কাজ করি না, এই জায়গাটা আমার মা বাবার স্বপ্নের জায়গা। যেটা আমি বিশ্বাস করি না সেই ধরনের কাজ আমি করিনা। আমি মনে করি এই ধরনের কাজ কারোরই করা উচিৎ নয়। এই কথোপকথনের মাঝে সমকালীন আরেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী ভিডিও কনফারন্সে এসে ফারুকীকে দেশের সবচেয়ে ডাইনামিক পরিচালক অভিহিত করেন।

তিশা ও সমকালীন দুই জনপ্রিয় পরিচালকের হাস্যরসাত্মক আড্ডা দর্শকরা ভালোই উপভোগ করেন। খোলামেলা আলোচনায় ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে ফারুকী বলেন, ২০০০ সালে আমি যখন কাজ শুরু করি তখন আমার দর্শক ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র ছাত্রীরা, এখন আমার ছবি সব শ্রেনীর মানুষ দেখে, তবে এর জন্য একটা চাপ রয়েছে। এখন ছবি দেখে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে তথ্য নিয়ে যে ছবিটি কতজন দেখেছে, আমি যখন সিনেমা বানানো শুরু করি তখন চিন্তা করিনি কোন সিনেমা দর্শক দেখে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ইউটিউবে দেখার সংখ্যা দ্বারা সবকিছুর বিচার আমাদের ধংস করছে। আমি আশা করি সংখ্যার দ্বারা এই বিচার বন্ধ হবে, দর্শক হৃদয় ছুয়ে যাওয়া বিষয়গুলোই মূল্যায়ন করবে। নতুন ছবি ‘শনিবার বিকাল’ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ছবিটি ইসলাম সম্পর্কে ভয় তৈরি করবে না বরং তা ইসলাম সম্পর্কে সঠিক এবং ইতিবাচক ধারনা দেবে। তার ছবিতে প্রমিথ বাংলার কম ব্যবহার হয় এমন অভিযোগের ব্যাপারে ফারুকী বলেন, ভাষার ক্ষেত্রে কোন ব্লাসফেমী বলে কিছু নেই এবং উচু তলা বা নিচু তলার ব্যাপার নেই। প্রত্যেক ভাষায় তার নিজস্ব রূপে সেরা।

এই কথোপকথন-সন্ধ্যার সমাপ্তিতে গিয়ে অতিথি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রভাত ফেরীর সম্পাদক শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী এবং প্রভাত ফেরীর প্রকাশক সোলায়মান দেওয়ান। এ সময় তাদের সাথে মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রভাত ফেরীর উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য শাহান আর জাকির, ডা: হালিম চৌধুরী, ডা: একরামুল এইচ চৌধুরী ও ড. ফয়সাল আহমেদ। অনুষ্ঠানের অতিথি নুসরাত ইমরোজ তিশার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন দেশী ইভেন্টসের পরিচালক সৈয়দ ফায়াজ এবং পথ প্রোডাকশনের পরিচালিকা নাহিদা কামাল রুপসা। প্রসঙ্গত সিডনি ফিল্ম ফেস্টিভেলে প্রদর্শিত হয়েছে ফারুকীর আলোচিত ছবি সিনেমা শনিবার বিকেল। এই উপলক্ষেই অস্ট্রেলিয়ায় তারা আসেন।

 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2