আদালতে জয় হলো ভালোবাসার, স্বামীর কোলে জ্ঞান হারালেন স্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:১৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বাস্তবের কাহিনি কখনো কখনো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। এমনই ঘটনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ঘটল। সাক্ষী থাকল বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাস। ভরা এজলাসে জয় হলো ভালোবাসার। পরিবারের সম্পর্ক ভাঙার চেষ্টাকে বিফল করে যুগলকে মিলিয়ে দিলেন বিচারপতি। বহুদিন স্বামীর দেখা পেয়ে তার কোলেই জ্ঞান হারালেন স্ত্রী। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
খবরে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মুসলিম শরিয়ত-রেজিস্ট্রি মেনে বিয়ে করেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানা এলাকার বাসিন্দা রহমাতুন্নেছা খাতুন ও মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা আশিক আলী। ছেলের পরিবার বিয়ে মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার শুরু থেকেই আপত্তি জানায়। তা উপেক্ষা করেই সুখে সংসার করছিলেন রহমাতুন্নেছা-আশিক। কিন্তু নবদম্পতির সুখের সংসারে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। মারধর করে মেয়েকে তুলে নিয়ে যান মেয়ের পরিবারের সদস্যরা। কোনোভাবেই দু’জনকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছিল না।
স্ত্রীকে ফিরে পেতে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আশিক। আশিকের আইনজীবী জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়ের জানান, এই কয়েক মাসের মধ্যে লাগাতার মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়েছে রহমাতুন্নেছা খাতুনের ওপর। যাতে প্রেমিক তথা স্বামী আশিক আলির কাছে ফেরার মত বদলান তিনি। কিন্তু রহমাতুন্নেছার মন থেকে আশিককে কেড়ে নিতে পারেননি।
বুধবার আদালতের নির্দেশে কাটোয়া থানার পুলিশ রহমাতুন্নেছাকে হাজির করে। আইনজীবীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আশিক আলীও। ভরা আদালতে রহমাতুন্নেছার কাছে বিচারপতি জানতে তিনি স্বামীকে ফিরে পেতে চান কি না। প্রথমে প্রশ্নের উত্তর দিতে ইতস্তত করেন রহমাতুন্নেছা। রহমাতুন্নেছাকে আশ্বস্ত করেন বিচারপতি। তারপরই স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার আরজি জানান রহমাতুন্নেছা। সঙ্গে সঙ্গে আদালত কক্ষেই পুনরায় চার হাত এক করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
চার হাত এক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বামীর কোলে ঢলে পড়েন রহমাতুন্নেছা। কারণ, শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে কলকাতা হাইকোর্টের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে রহমাতুন্নেছাকে স্যালাইন পানি পান করানো, হাত-মুখ ধোয়ানো থেকে শুরু করে সব সেবাই করেন আশিক আলী। এজলাসে স্বামী-স্ত্রী এমন চিত্র দেখে মেয়ের পরিবারকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি মান্থা। এদিনই তাদের পুনরায় সংসার শুরু করার নির্দেশ দেন তিনি।