পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৫ | আপডেট: ০২:৩৯ পিএম, ১৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৫
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
অবশেষে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের বহুল বিতর্কিত সিটি মিনিস্টার ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি বিরোধী দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও বোন শেখ রেহানার মেয়ে। শেখ হাসিনার পতনের পর টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কেলেঙ্কারির খবর বোমার মতো ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ একজন আওয়ামী লীগ নেতা ও ডেভেলপার আবদুল মোতালিফের কাছ থেকে উপহার হিসেবে বৃটেনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট নিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তির নামে আরও একটি ফ্ল্যাট উপহার দেন আইনজীবী মঈন গণি। প্রকারান্তরে সেই ফ্ল্যাটও টিউলিপকে উপহার দেয়া হয়েছে। কারণ, রূপন্তি ওই ফ্ল্যাট টিউলিপকে পরিবার সহ ব্যবহার করতে দিয়েছেন। এসব বিষয় গোপন করেছেন টিউলিপ। শুধু তা-ই নয়, তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নি হওয়ার পরও তার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা কখনো করেননি বলে দাবি করেন। কিন্তু তার ব্লগ ফাঁস করে দিয়েছে মিডিয়া। তাতে দেখা যায়, তিনি শেখ হাসিনার জয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন। তার প্রচারণায় ছিলেন তিনি। এর বাইরে রাশিয়ার সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি করার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা, টিউলিপ, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রমুখ ৫০০ কোটি ডলার মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে আত্মস্মাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে বাংলাদেশে দুদক তদন্ত করছে। তদন্ত চলছে বৃটেনে। কিন্তু অভিযোগ উঠার পর দীর্ঘ সময় তা অস্বীকার করে মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত থাকেন টিউলিপ। তার পদত্যাগ দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা, বিরোধী কনজার্ভেটিভ দলের কিছু এমপি। কিন্তু টিউলিপ তার খালা শেখ হাসিনার মতো ক্ষমতা ধরে রাখেন। এ নিয়েও অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার হলেন টিউলিপের ক্ষমতার খুঁটি।
টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। তিনি নিরপেক্ষ তদন্তকারী লরি ম্যাগনাসের কাছে এই আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। টিউলিপের বিরুদ্ধে যখন তীব্র চাপ, প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতিতে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ জোরালো হতে থাকে, বৃটেনের রাজনীতি উত্তাল হতে শুরু করে, তখন বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রী পিটার কিলি বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তকারী যদি দেখেন মন্ত্রিত্বের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন টিউলিপ, তাহলে তিনি সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। কয়েকদিন ধরে এই বিতর্ক বৃটেনের প্রথম সারির সব মিডিয়ার প্রথম পৃষ্ঠায়। তারা গুরুত্ব দিয়ে টিউলিপের দুর্নীতি ও সে সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করতে থাকে। কোনো কোনো মিডিয়া প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান সংবাদ শিরোনাম করে। এসব রিপোর্টে টিউলিপের খালা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার হিসেবে আখ্যায়িত করে। এমন বিতর্ক এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি যখন টিউলিপের নিয়ন্ত্রণের বাইরে তখন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পদত্যাগের খবর দেয় বিবিসি। ওদিকে বর্তমান পার্লামেন্টের পুরো মেয়াদে চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে প্রথমবার এমপিদের মুখোমুখি হতে হয়েছে চ্যান্সেলর র্যাাচেল রিভস।