avertisements 2

হিজাবসংক্রান্ত বিতর্কিত আইন স্থগিত করল ইরান

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৯:৫০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

ইরানের হিজাববিষয়ক বিতর্কিত একটি আইন স্থগিত করেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল। আইনটি গত শুক্রবার থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তাবিত নতুন আইনে নারী ও মেয়েদের চুল, হাতের বাহু ও পায়ের নিচের অংশ প্রদর্শনের জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। দেশটির অধিকারকর্মীরা এর তীব্র সমালোচনা করছিলেন।


তবে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আইনটিকে ‘অস্পষ্ট এবং সংস্কারের প্রয়োজন’ বলে উল্লেখ করেছেন। ফলে আইনটি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

২০২২ সালে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই দেশটিতে হিজাব ইস্যুতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পোশাক বিধি না মানার অভিযোগে তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।


পুলিশের কাছে আটক এবং নির্যাতনের পর তিনি কোমায় চলে যান, যার জের ধরে ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল তখন। তবে পুলিশ বলেছিল, তার ওপর নির্যাতন হয়নি, তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন।
নারীদের জন্য কঠোর পোশাক আইন কয়েক দশক ধরে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। একে কেন্দ্র করে অতীতে অনেক বিক্ষোভের জন্ম হয়েছিল।


এই আইনে অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে এবং কেউ যদি নিয়ম-কানুনকে উপহাস করে, তাহলে তাকে বড় জরিমানা এবং পনেরো বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ আইন নিয়ে তাদের শঙ্কার কথা বলে আসছিল।
জুলাইয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তখনকার প্রার্থী পেজেশকিয়ান প্রকাশ্যেই হিজাব ইস্যুতে ইরানের নারীদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করা হয় তার সমালোচনা করেছিলেন। তিনি কারো ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন। বহু ইরানি নাগরিকের প্রত্যাশাও তা-ই।


বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, যারা সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে হতাশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজাব বিতর্ক গত সপ্তাহে দেশটিতে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পারাসতো আহমাদির গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে। তিনি হিজাব পরিধান না করেই ইউটিউবে ভার্চুয়াল কনসার্ট লাইভ করছিলেন। ওই কনসার্ট খুব দ্রুত ভাইরাল হয়েছিল। তবে আহমাদি ও তার ব্যান্ডের সহকর্মীদের বিষয়টি জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। মানুষের তীব্র প্রতিবাদের মুখে এক দিন পরেই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

গত সপ্তাহেও তিন শ ইরানি অধিকারকর্মী, লেখক এবং সাংবাদিক প্রকাশ্যে নতুন হিজাব আইনের প্রতিবাদ করেছেন। তারা এটিকে ‘অবৈধ ও অপ্রয়োগযোগ্য’ আখ্যায়িত করে প্রেসিডেন্টের প্রতি তার নির্বাচনী অঙ্গীকারকে সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানান।

দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থী অংশের চাপ সত্ত্বেও ইরানের অনেক তরুণ সরকারের বিধি-নিষেধের বিরুদ্ধে ভীতিহীনভাবে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে।

পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, নতুন হিজাব আইন তরুণ নারীদের আইন ভঙ্গ করা ঠেকাতে পারবে না এবং এটি এমনকি পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাতে পারে।

সূত্র : বিবিসি

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2