avertisements 2

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : প্রচারণার চূড়ান্ত মুহূর্তে কমলা-ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ১১:২০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এরই মধ্যে সাড়ে সাত কোটির বেশি আগাম ভোট পড়েছে দেশটিতে। সর্বশেষ জনমত জরিপে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে। আধুনিক সময়কার সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও উত্তেজনাপূর্ণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কমলা ও ট্রাম্প।

বিশেষ করে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের মন জয় করতে চাইছেন তাঁরা। কারণ এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটাররাই নির্ধারণ করবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্টের ভাগ্য। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলাইনায় প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা ও ট্রাম্প। প্রচারণায় পরস্পরকে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন দুই প্রার্থী।
এর বাইরে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ায় সমাবেশ করেন কমলা আর ট্রাম্প ভার্জিনিয়ায় যাত্রাবিরতি করেন।

গতকাল রবিবার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী আক্ষরিকভাবেই একই পথ অতিক্রম করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে নিয়ে তাঁর সরকারি উড়োজাহাজ ‘এয়ার ফোর্স টু’ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের শারলটে বিমানবন্দর টরমাক ভাগাভাগি করে নেয়। উভয়ই এই অঙ্গরাজ্যে সমাবেশ করেন।

ট্রাম্পের জন্য নর্থ ক্যারোলাইনা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ২০১৬ ও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন এখানকার ভোটাররা। তাই অঙ্গরাজ্যটি ধরে রাখতে মরিয়া ট্রাম্প গত শনিবার গ্রিনসবোরো শহরে সমাবেশ করেন। প্রায় ৯০ মিনিট ভাষণ দেন তিনি।

এ সময় ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘আমেরিকান স্বপ্ন’ ফিরিয়ে আনবেন এবং পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবেশ করার দাবি করেন।
এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী কমলাকে তিনি মিথ্যাবাদী আখ্যা দেন।

যুক্তরাষ্ট্রকে একটি অধিকৃত দেশ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, মঙ্গলবারের নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস।

ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধে কমলার যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনবেন।

সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রতিটি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, তবে এখন জাতির ভাগ্য আপনাদের হাতে। এটি আপনাদের হাতে। আপনারা কমলাকে বলতে যাচ্ছেন যে আপনি (কমলা) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বাজে ভাইস প্রেসিডেন্ট, আপনি খুবই জঘন্য, আপনি আমাদের দেশকে ধ্বংস করেছেন। কমলা, আপনাকে বরখাস্ত করা হলো।’

এদিকে নর্থ ক্যারোলাইনার শারলটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ট্রাম্পের সমালোচনা করেন কমলা। তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে শত্রুদের তালিকা করায় মনোযোগ দেবেন।

কমলা বলেন, ‘যাঁরা আমার সঙ্গে একমত নন, তাঁদের আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো শত্রু মনে করি না। ট্রাম্প তাঁদের (শত্রু) জেলে পাঠাতে চান। আমি তাঁদের টেবিলে বসতে দেব। প্রকৃত নেতৃত্ব এমনই হয়।’

এই ডেমোক্র্যাট নেত্রী বলেন, তিনি নির্বাচনে জিতলে ১০ কোটির বেশি মার্কিন নাগরিকের কর কমাবেন। তাঁর তালিকার শীর্ষে থাকবে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনা।

গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে কমলা বলেন, ‘আমরা সবাই চাই মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের অবসান হোক এবং জিম্মিরা বাড়ি ফিরুক। আমি নির্বাচিত হলে এই কাজ করার জন্য আমার ক্ষমতার সর্বোচ্চটা প্রয়োগ করব। এ সময় নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়েও কথা বলেন ৬০ বছর বয়সী কমলা।

এদিকে কমলার সমর্থকদের একটি বড় অংশ হলেন নারী ভোটাররা। সুপ্রিম কোর্টে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিয়োগ দেওয়া বিচারপতিরা মার্কিন নারীদের কয়েক দশক ধরে চলা গর্ভপাত অধিকারের বিরুদ্ধে রায় দেন। এতে নারী ভোটারদের অনেকেই ক্ষুব্ধ।

জর্জিয়ার আটলান্টায় প্রচারণা চালানোর সময় এ বিষয়ে কথা বলেন কমলা। তিনি বলেন, ট্রাম্পের কাজ শেষ হয়নি। তিনি দেশজুড়ে গর্ভপাতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবেন।

ট্রাম্পকে ‘ক্রমবর্ধমান অস্থিরতায় ভোগা, প্রতিশোধপরায়ণ ও অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতালোভী’ ব্যক্তি আখ্যা দেন কমলা।

কমলা আরো বলেন, ‘আমাদের সামনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের অধ্যায়গুলো চূড়ান্তভাবে উল্টে দেওয়ার এক সুযোগ এই নির্বাচন। ট্রাম্প একে অপরের মধ্যে বিভক্তি ও ভয় তৈরির চেষ্টার পেছনে তাঁর পুরো সময় ব্যয় করেছেন।’

অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় তিক্ত বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। ভার্জিনিয়ার সালেমে ট্রাম্প নিজের বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘আমি আজ এখানে এসেছি সবার জন্য আশার এক বার্তা নিয়ে।’ তবে কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনায় দেওয়া নিজ বক্তব্যে ফিরে যান।

এ সময় কমলাকে ‘কম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন’ ও ‘মূর্খ’ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প। কমলা জিতলে তিনি দেশে অর্থনৈতিক মন্দা ডেকে আনবেন বলেও দাবি করেন।

এক পর্যায়ে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি চাকরি এবং সম্ভবত আপনাদের বাড়িঘর ও পেনশন হারাতে চান?’

এর আগে ট্রাম্প নারীদের উদ্দেশে সতর্ক করে বলেন, তিনি যদি হোয়াইট হাউসে না যান, তবে সহিংস অপরাধীরা তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেবে।

কমলা ও ট্রাম্পের প্রচারণা চলবে আজ সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত। এর মধ্যে মিশিগানের গ্র্যান্ড র‍্যাপিডসে সমাবেশ করবেন ট্রাম্প এবং পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় সমাবেশ করবেন কমলা। সূত্র : এএফপি, বিবিসি

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2