avertisements 2

এবার কুকুর লেলিয়ে প্রতিবন্ধি ফিলিস্তিনি যুবককে ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুলাই,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:৫০ এএম, ১৮ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২৪

Text

ছবি: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিল মুহাম্মদ।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে একের পর এক নৃশংসতার উদাহরণ সৃষ্টি করছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গণহত্যা, দুর্ভিক্ষ তৈরির পর এবার বর্বরতার আরেক ধাপ সৃষ্টি করলেন তারা। কুকুর লেলিয়ে এক প্রতিবন্ধী যুবককে হত্যা করেছে দখলদার দেশটির সেনারা।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সুজাইয়াতে ইসরায়েলি সেনাদের কুকুরের হামলায় এক প্রতিবন্ধী যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবন্ধী এই যুবক কথা বলতে বা কোন কিছুই করতে পারত না।

২৪ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম মুহাম্মদ। সে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সুজাইয়াতে থাকত। যুবকটি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিল।

মুহাম্মদের মা নাবিলা আহমেদ ভার মিডল ইস্ট আইকে বলেন, গত মাসের ২৭ জুন থেকে সুজাইয়াতে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলের সেনারা। টানা দুই সপ্তাহ ধরে সেনারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ক্রমাগত বোমাবর্ষণ করে, বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং কয়েক হাজার মানুষকে বিতারিত করে।

    হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিল আর্জেন্টিনাহামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিল আর্জেন্টিনা

ইসরায়েলি সেনারা আক্রমণ করার আগে মুহাম্মদের পরিবারটি অন্যান্য অনেক পরিবারের মত এক সপ্তাহ ধরে তাদের বাড়িতে অবরুদ্ধ ছিল। ইসরায়েলি সেনারা যখন তাদের এলাকায় হামলা চালায় তখন তারা পরিবারের সবাই বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।

তিনি জানান, হঠাৎ একদিন তাদের বাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েলিরা। সে সময় বাড়িতে তাদের পরিবারের ১৬ জন ছিলেন। তারা সবাই লুকিয়ে ছিলেন। কিন্তু মুহাম্মদ বেশ মোটা হওয়ায় এবং নড়াচড়া করতে না পারায় তাকে লুকানো সম্ভব হয়নি।

ইসরায়েলি সেনারা এসেই প্রথমে একটি কুকুরকে বাড়ির ভেতর ছেড়ে দেয়। ওই কুকুরটি এসে প্রতিবন্ধী  মুহাম্মদের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে এবং কামড়ে ধরে ছিন্নভিন্ন করে দেয়।

প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এর বদলে বাড়ি থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে তাকে আলাদা একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় সেই রুম থেকে প্রচণ্ড চিৎকার করছিল মুহাম্মদ। চিৎকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারেননি তার মা।

ইসরায়েলি সেনাদের হামলা ও অভিযানের কারণে বাধ্য হয়ে মুহাম্মদকে ফেলে গাজা শহরের পশ্চিম দিকে যেতে বাধ্য হয় তার পরিবার।

পরবর্তীতে ইসরায়েলি সেনারা সুজাইয়া থেকে চলে যাওয়ার পর গত বুধবার মুহাম্মদের পরিবার দ্রুত তাদের বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা মুহাম্মদের গলিত মরদেহ দেখেন। এছাড়া মুহাম্মদের মুখমণ্ডল পোকামাকড় খাচ্ছিল বলেও জানান তার মা।

মুহাম্মদে ৭১ বছর বয়সী মা জানিয়েছেন, নিজ থেকে কিছুই করতে পারত না মুহাম্মদ। তাকে খাইয়ে দেয়া হত এমনকি তার ডায়াপার ও পরিবর্তন করে দিতে হত। তার সঙ্গে তারা কি করেছে এবং কীভাবে মুহাম্মদের মৃত্যু হয়েছে তা ভাবতে পারছেন না তিনি।

গাজার হাসপাতালগুলো চালু না থাকায় এবং ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে রাস্তাগুলো বিধ্বস্ত হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স কল করতে বা মুহাম্মদের মৃতদেহকে কবরস্থানে নিয়ে যেতে পারেননি মুহাম্মদের ভাই জেব্রিল। মুহাম্মদকে পরবর্তীতে তার মামার বাড়িতে দাফন করা হয় বলে জানায় তার ভাই জেব্রিল।

এর আগে গত মাসেও এক ফিলিস্তিনি নারীর ওপর কুকুর লেলিয়ে দিয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা ইসরায়েলি সামরিক কুকুরের সাথে সংযুক্ত একটি ক্যামেরা থেকে ফাঁস হওয়া ফুটেজ প্রকাশ করেছিল। যেখানে দেখা যাচ্ছিল যে একজন বয়স্ক ফিলিস্তিনি নারীকে তার বাড়িতেই একটি ইসরায়েলি কুকুর কামড়াচ্ছে এবং টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2