avertisements 2

দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস বিক্রি কমে গেছে

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ আগস্ট,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:২৯ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

দক্ষিণ কোরিয়ায় এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী খাবার ছিলো কুকুরের মাংস। এই মাংস তারা বিভিন্ন দেশে রফতানিও করছে। কিন্তু দিন দিন এই ঐতিহ্যবাহী খাবার তার তেজ হারাচ্ছে। এখন আর আগের মতো কুকুরের মাংবা বিক্রি হয় না। দাম কমে গেছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামারের পর খামার। কুকুরের মাংসা দক্ষিণ কোরিয়ায় নিষিদ্ধ নয়। তবে সরকার নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করছে বলে জানা যায়।

কোরিয়ান উপদ্বীপে কুকুরের মাংস একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কুকুরের মাংস খাওয়া হয় বলে মনে করা হয়। যদিও দেশটিতে এই মাংস খাওয়া বা বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধও নয় আবার পুরোপুরি বৈধও নয়। তবে দেশটির সরকার কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধ করতে চায়।

সময়ের সাথে সাথে অনেক কোরিয়ান কুকুরের মাংস নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। এছাড়া প্রাণী অধিকার সম্পর্কে মানুষেরাও এ বিষয়ে আওয়াজ তুলছেন। অনেক কোরিয়ান মনে করেন, কুকুরের মাংস খাওয়ার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দক্ষিণ কোরিয়ার ইমেজ নষ্ট করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কুকুরের মাংস নিষিদ্ধের প্রতি তার সমর্থন জানানো এবং দুজন আইনপ্রণেতা এই ব্যবসা নিষিদ্ধের জন্য বিল উত্থাপন করার পর দেশটিতে কুকুরের মাংস-বিরোধী ক্যাম্পেইন জোরাল হয়েছে।

দেশটির বিরোদী দলের একজন আইনপ্রণেতা হান জিউংগে বলেন, 'বিদেশিরা ভাবে দক্ষিণ কোরিয়ান একটা সাংস্কৃতিক পাওয়ারহাউজ। কিন্তু কে-কালচার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যত বেশি নিজের অবস্থান শক্ত করছে, বিদেশিরা আমাদের কুকুরের মাংস খাওয়া দেখে তত বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করছে।'

দেশটিতে কুকুরের মাংস-বিরোধী আইন পাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়; কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার কৃষক, রেস্টুরেন্ট মালিক কুকুরের মাংসের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্য সবাই এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, প্রতি তিনজন দক্ষিণ কোরিয়ানের মধ্যে একজন এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেন; যদিও দেশটিতে অধিকাংশ মানুষই এখন আর কুকুরের মাংস খান না।

কুকুর পালন ও বিক্রির ব্যবসা করেন কিম জং কিল। তিনি জানান, গত ২৭ বছর ধরে কুকুরের মাংসের খামার পরিচালনা করে আসছে তার পরিবার এবং এ নিয়ে তিনি খুবই গর্বিত। আগামীতে সন্তানদের হাতে তুলে দিতে চান ব্যবসা। তবে বর্তমান পরিস্থিততে শঙ্কিত তিনি। কিম চান না কুকুরের মাংস নিষিদ্ধ হোক।

সিউলের দক্ষিণে পিয়ংতেক শহরে নিজের খামারে দাঁড়িয়ে ৫৭ বছর বয়সী কিম বলেন, 'আমার অনুভূতিটা আসলে খারাপ লাগার চাইতেও বেশি কিছু। আমি এই উদ্যোগের সরাসরি বিরোধিতা করছি এবং এটা প্রতিরোধের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।'

কিম জং কিলের খামার দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় কুকুরের খামারগুলোর মধ্যে একটি। তার খামারে ৭০০০ কুকুর রয়েছে। কুকুরগুলোকে বাইরে খুব একটা ছাড়া হয়না বললেই চলে এবং জন্ম নেওয়ার এক বছরের মাথায়ই মাংসের জন্য এগুলোকে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

ডগ ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সন ওক হাক বলেন, কুকুরের মাংসের দাম এবং চাহিদাও কমে যাওয়ায় সম্প্রতি কয়েক বছরে বহু খামারির ব্যবসা ধ্বংস হয়ে গেছে।

শুধু দক্ষিণ কোরিয়ার নয়- চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং ঘানা, ক্যামেরুন, কঙ্গো ও নাইজেরিয়ার মতো আফ্রিকার কিছু দেশেও কুকুরের মাংস খাওয়া হয়। 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2