avertisements 2

লোপাট ৬ হাজার কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:১৫ এএম, ২১ অক্টোবর, বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৫:০৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২৪

Text

ব্যাংকবহির্ভূত ৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচালকরা নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করা হয়নি। এসব অর্থের পুরোটাই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

এসব ঋণের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যথেষ্ট জামানত নেই। এগুলো এখন আদায় অযোগ্য ঋণে পরিণত হয়েছে। দুর্বল হয়ে পড়েছে আর্থিক ভিত্তি। পরিচালকদের লুটপাটের কারণে সাতটি প্রতিষ্ঠানই এখন পথে বসার উপক্রম।

পরিশোধ করতে পারছে না আমানতকারীদের অর্থ। ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে এখন ঋণখেলাপির তালিকায় উঠেছে ছয় প্রতিষ্ঠানের নাম। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিচালকরা প্রভাব খাটিয়ে, অনেক ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে এসব ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে ৫৭০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) থেকে ৭০০ কোটি টাকা, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট থেকে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট থেকে সাড়ে ৪৭ কোটি টাকা, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে ৩৫০ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ও প্রাইম ফাইন্যান্স থেকে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পরিচালকরা।

এই সাত প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচালকরা মোট ঋণ নিয়েছেন ৫ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫০ লাখ (প্রায় ছয় হাজার কোটি) টাকা এ বিষয়ে বাংলাদেশ লিজিং এবং ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) সভাপতি ও আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ভালো চলছে। তাদের পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে।

কয়েকটি প্রতিষ্ঠান খারাপ হয়ে গেছে। তাদের কাছ থেকে পরিচালকরা বেশ কিছু ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না। সেগুলো কীভাবে আদায় করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও আমাদের সহযোগিতা করছে। পরিচালকদের কাছে আটকে থাকা ঋণ আদায় করে অত্যন্ত আমানতকারীদের জমা টাকাটা ফেরত দেয়ার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে একটি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে পরিচালকরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যাতে আর এভাবে অর্থ নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পর্ষদের পরিচালকদের একক কর্তৃত্ব যাতে না থাকে সেজন্য আমানতকারী ও স্বতন্ত্র পরিচালক রাখার বিধান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিচালকদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এ খাতে আগে পরিদর্শন ব্যবস্থা শক্তিশালী ছিল না। এখন আলাদা একটি পরিদর্শন বিভাগ করা হয়েছে। ফলে এখন পরিদর্শন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে। আইনি কাঠামো আরও জোরদার করা হচ্ছে। পর্ষদে পরিচালকদের সংখ্যা কমানো হচ্ছে, নতুন আনা হচ্ছে স্বতন্ত্র ও আমানতকারীদের মধ্যে থেকে পরিচালক। বাড়ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) মোট লিজ বা ঋণের পরিমাণ ৮৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও আত্মীয়স্বজনের অনুকূলে ৫৭টি ঋণ বা লিজ নেয়া হয়েছে।

এর বিপরীতে বকেয়ার পরিমাণ ৬৪০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৭৬ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদের পরিমাণ ৯৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা। যা মোট সম্পদের ৬৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ৫৭টি লিজের মধ্যে ৫৬টিই আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ হিসেবে শ্রেণিকৃত।

এর মধ্যে টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজ, আবদুল্লাহ ব্রাদার্স, রহমত উল্লাহ অ্যান্ড কোম্পানি ও টাওয়া বিল্ডার্সের ঋণ অনুমোদন এবং বিতরণের সময় নিয়ম-কানুনের কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি। এসব ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং অপরাধ করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

যদিও মেজর (অব.) আবদুল মান্নান নামে-বেনামে ঋণ নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তাকে পর্ষদ থেকে সরানোর পরই লুটপাট হয়েছে। 

এদিকে বেনামে শেয়ার কিনে ২০১৫ সালের শেষদিকে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নেন রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার বা পি কে হালদার। তারপর তিনিও এতে লুটপাট চালান। প্রতিষ্ঠানটির ঋণের একটি বড় অংশ গেছে তাদের পকেটে। এর পরিমাণ ২০০ কোটি টাকারও বেশি।

একই প্রক্রিয়ায় বেনামে শেয়ার কিনে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের নিয়ন্ত্রণ নেন পি কে হালদার গ্রুপ। পর্ষদের দায়িত্বে বসান নিজেদের লোক। পর্ষদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন পি কে হালদার গ্রুপ।

যা প্রতিষ্ঠানটির মোট লিজ বা ঋণের ৬৫ দশমকি ৫৭ শতাংশ। লিজের নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রীতিশ কুমার হালদার, সুস্মিতা সাহা, উজ্জ্বল কুমার নন্দি, অমিতাভ অধিকারী, ওমর শরীফ, মৈত্রী রানী ব্যাপারী, শাহ আলম শেখ, রতন কুমার বিশ্বাস, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল, গোপাল গাঙ্গুলীর নামে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান খুলেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের নামে তারা ঋণ নেন। এর মধ্যে নিজেরা যেমন ঋণ নিয়েছেন, তেমনি নিকট-আত্মীয়স্বজনের নামে, তাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠান খুলে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, সুখদা প্রপার্টিজ লিমিটেড, আর্থস্কোপ লিমিটেড, নিউট্রিক্যাল লিমিটেড, মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেড, এমটিবি মেরিন, এমএসটি ফার্মা অ্যান্ড হেলথ কেয়ার, জিএন্ডজি এন্টারপ্রাইজ, আরবি এন্টারপ্রাইজ, আনান কেমিক্যালস, দ্রিনান অ্যাপারেলস, বর্ন অ্যাপারেলস, এসএ এন্টারপ্রাইজ। 

এছাড়া নতুন প্রতিষ্ঠান গঠন করে নিজেরা তাদের ঘনিষ্ঠ ও অনুগত ব্যক্তিদের বহাল রেখে নিজ নামে ধারণ করা শেয়ার হস্তান্তর করে একদিকে মালিকানা পছন্দের লোকদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে তাদের দিয়ে লুটপাট করিয়েছেন।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পর্ষদ এবং সম্পদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা (এএলএম) কমিটি কোনোরকম অনুমোদন ছাড়াই তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৪৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এর মধ্যে বিআইএফসিকে ১০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসকে ৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ও এফএএস ফাইন্যান্সকে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই পি কে হালদারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। পি কে হালদার যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ওইসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা রয়েছে ফারইস্ট ফাইন্যান্সে। ফলে এসব অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিচালকদের হস্তক্ষেপ রয়েছে। আর্থিক সংকটে তিন প্রতিষ্ঠানই ফারইস্ট ফাইন্যান্সের অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না।

রিলায়েন্স ফাইন্যান্স তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ব্রেকারেজ হাউসকে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এখন এর বকেয়ার পরিমাণ ৩১৪ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মোট মূলধন ও রিজার্ভের পরিমাণ ৩৩৫ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মোট মূলধনের ৯৩ দশমিক ৮০ শতাংশই এখন রিলায়েন্স ব্রেকারেজ হাউসের কাছে বকেয়া। এর নেপথ্যে পরিচালকদের হাত রয়েছে বলে জানা গেছে।

রিলায়েন্স ব্রেকারেজ হাউসকে দেয়া ঋণের অর্জিত সুদের বিপরীতে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ১০ কোটি টাকা করে মোট ২০ কোটি টাকা মওকুফ করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি হয়েছে ২০ কোটি টাকা। আলোচ্য ঋণের বাইরে ব্রেকারেজ হাউসকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সুদমুক্ত ঋণও দেয়া হয়েছে। এর বিপরীতে বকেয়ার পরিমাণ ২৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। পরিচালকরা প্রভাব খাটিয়ে এ ঋণ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ঋণের টাকায় তারা নিজেরাই শেয়ার কেনাবেচা করে লাভবান হয়েছেন।

পরিচালকদের হস্তক্ষেপে নুরজাহান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান তাসনিম ফ্লাওয়ার মিলসের নামে নেয়া ঋণ একক সীমা অতিক্রম করায় গ্রুপের এমডি জহির রতন তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের নামে ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য আইনি কাগজপত্র তৈরি করে ৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে সাফারী ট্রেডার্স, এমএ ট্রেডিং, শাহাদাৎ এন্টারপ্রাইজ, প্রিমিয়াম ট্রেডিং, মোস্তফা এন্ড কোং, সাউল এন্ড কোং এবং নূর কর্পোরেশন। সব ঋণই বর্তমানে ক্ষতিজনক মানে চিহ্নিত।

প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন কোম্পানির নামেও বিপুল পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে। এগুলোকে ১২ মাস, ১৮ মাস এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৪ মাস পর্যন্ত মূল ঋণের ওপর গ্রেস পিরিয়ড দেয়া হয়েছে।

এগুলোর বিপরীতে সহায়ক জামানতও নেয়া হয়নি। যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের পরিপন্থী। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের কাছে প্রতিষ্ঠানটি কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। 

রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের লিজ, অগ্রিম, শেয়ারে বিনিয়োগ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে সংস্থান ঘাটতি ছিল ৩৯৭ কোটি টাকা।

পরিদর্শনকালে তা আরও ৮৪ কোটি টাকা বেড়েছে। তারা ৯৯ কোটি টাকা অনাদায়ী সুদ আদায় না করেই আয় খাতে স্থানান্তর করে মুনাফার পরিমাণ বাড়িয়েছে।

এর বিপরীতে আবার আয়কর ও লভ্যাংশ পরিশোধ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নগদ তহবিল সংরক্ষণ ও গ্রাহকদের আমানতের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মোট ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পরিচালক ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা সরানো হয়েছে।

পি কে হালদার গ্রুপ এককভাবে নিয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪টি ঋণ হিসাবের বিপরীতে বকেয়া স্থিতির পরিমাণ ১৪৫ কোটি টাকা।

পি কে হালদার গ্রুপ প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রীতিশ কুমার হালদার, সুস্মিতা সাহা, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, অমিতাভ অধিকারী, ওমর শরীফ, মৈত্রী রানী ব্যাপারী, শাহ আলম শেখ, রতন কুমার বিশ্বাস, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল ও গোপাল গাঙ্গুলীসহ আরও কিছু নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। এর মধ্যে রয়েছে পি এন্ড এল লিমেটড, নিউট্রিক্যাল লিমিটেড, দ্রিনান অ্যাপারেলস, আনান কেমিক্যালস, ওয়াকামা লিমিটেড, সুখদা প্রপার্টিজ, জিএন্ডজি এন্টারপ্রাইজ ও রেপটাইলস ফার্ম। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে বকেয়ার পরিমাণ ৩৬০ কোটি টাকা।

প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের (পিএফআই) পরিচালকরা প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছেন। এতে নিয়ম-কানুনের কোনো বালাই রাখা হয়নি। জামানত ছাড়াই পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৫১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যার সবগুলোই বর্তমানে আদায় অযোগ্য খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকৃত।

পিএফআইয়ের দুটি ঋণ ৪৪২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পিএফআই সিকিউরিটিজ ও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ক্যাপিটালের নামে দেয়া হয়েছে। এর বিপরীতে ৩০৯ কোটি ৬ লাখ টাকার সুদ বিধিবহির্ভূতভাবে ব্লক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিকভাবে দুর্বল করেছে। মেসার্স আশিক’স নামের ঋণটি এর পরিচালক মুসলিমা শিরিনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ঋণ হওয়ার পরও তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করা হয়নি।

এছাড়া পিএফআই প্রোপার্টিজ, সৈয়দ তৈয়বুল বাশার, সৈয়দ আফতাবুল বাশার, মেসার্স আশিক নামে সর্বোচ্চ সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেয়া হয়েছে। এগুলো সবই এখন মন্দ ঋণ হিসেবে শ্রেণিকৃত। এর সঙ্গে তৎকালীন একজন চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে পরিদর্শন প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৭৪৮ কোটি টাকা। মূলত এগুলোই লুটপাট করা হয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি পরিচালকরা নামে-বেনামে নিয়েছেন ৫৭০ কোটি টাকা।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2