সাড়ে ৮৬ হাজার কোটি টাকা এক মাসে বাজার মূলধন ফিরেছে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:৫৫ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৩৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
চলতি বছরের আগস্ট মাসে শেয়ারবাজার ভালো অবস্থায় গিয়েছে। এ মাসে দেশের দুই শেয়ার বাজারেই লেনদেন ভালো হয়েছে। উভয় বাজারে সব সূচক বেড়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা ৮৬ হাজার ৫১৬ কোটি টাকার বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছেন।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, একদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, অন্যদিকে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় বাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দিয়েছেন।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা ১৮ হাজার ৮৪২ কোটি ৬৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছেন। এর আগের সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার ৩১৯ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পায়। চলতি মাসের ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মূলধন ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ঐ সপ্তাহে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা ফিরে পান বিনিয়োগকারীরা। আর মাসের প্রথম সপ্তাহের চার কার্যদিবসে বাজারে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকার মূলধন ফেরে। এ মাসে অল্প কয়েক দিন বাদে প্রায় প্রতিদিনই বাজারে উত্থান হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে।
জানা গেছে, বিদায়ি সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪ হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ১ হাজার ৭৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ৬৬২ টাকা বা ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৮৯৮ কোটি ৯৪ হাজার টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ি সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৭ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮০৯ টাকার। অর্থাত্ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৩৫০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৩২ টাকা কম হয়েছে।
বিদায়ি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। অর্থাত্ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন ৯ হাজার ৮৬৬ কোটি ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৭৩ দশমিক ১৮ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩০.২৭ পয়েন্ট বা ২.৭৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৩ দশমিক ০৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১৩০ দশমিক ৬১ পয়েন্টে এবং ১৬৯০ দশমিক ১০ পয়েন্টে।
বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬০টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির বা ৫০ দশমিক ২৭ শতাংশের, কমেছে ১৫০টির বা ৪১ দশমিক ৬৬ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির বা ৮ দশমিক ০৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ি সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ১৪ হাজার ৬১০ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৬৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৮ টাকার। অর্থাত্ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৩১ কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার ৮৬৮ টাকা বা ১৮ দশমিক ৭১ শতাংশ কমেছে। সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৭৩ দশমিক ০২ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোও বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে ধারাবাহিকভাবে উত্থান বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করছে। শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা দূর করতে এবং ভালো শেয়ার বাজারে আনতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। এই ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। তবে বাজারে এখনো কিছু খারাপ বিষয় রয়েছে সেগুলোর দিকে কমিশনকে নজর দিতে হবে। সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, বাজারের এই ঊর্ধ্বগতিতে বিনিয়োগকারীদের আরো সচেতন হতে হবে। লোভের বশবর্তী হয়ে মন্দ শেয়ারে বিনিয়োগ করা যাবে না। তা হলে লাভ তো দূরের কথা মূলধন হারানোর আশঙ্কা থাকবে।