সঞ্চয়পত্র ভাঙার হিড়িক, সুদাসল মেটাতেই বাড়তি চাপ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ মে,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৭:৩০ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
শফিউল্লাহ সিকদার পেশায় পোশাক ব্যবসায়ী। থাকেন রাজধানীর মগবাজারে। স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় সংসার তার। বড় মেয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত, ছোট মেয়ে পড়ছে নবম শ্রেণিতে। নিজের আয় দিয়ে দুই মেয়ের পড়া-লেখা ও সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এবার ঈদে ব্যবসাও ভালো হয়নি। তাই পাঁচ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্তির আগেই ভেঙে ফেলেছেন।
শফিউল্লাহ বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের কারণে সন্তানের পড়াশোনা দূরের কথা, ঢাকায় থাকতে পারবো কি না জানি না। আগামী ঈদে বেচা-বিক্রি না হলে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। চলে যেতে হবে গ্রামের বাড়ি। এখন সঞ্চয়পত্র ভেঙে লাভ হচ্ছে না লোকসান হচ্ছে সেদিকে তাকানোর সময় কই, আগে বাঁচতে হবে।’
একই কথা বলেন পুরান ঢাকার আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমাদের সংসার। ভালোই যাচ্ছিল দিন। মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে টাকায় টান পড়েছে। জমানো টাকায় সব খরচ মিটবে না, তাই সঞ্চয় ভাঙতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনা ছিল, এখন বিক্রি করে দিতে হবে। এর আগে দুই লাখ টাকা খরচ করে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়ের বিয়ের জন্য কমিউনিটি সেন্টার পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা চাচ্ছে। কমিউনিটি সেন্টার থেকে বলা হচ্ছে সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি দিতে হবে। আমার জমানো দেড়-দুই লাখ ছিল সেটা দিয়ে হচ্ছে না, তাই সঞ্চয়পত্র ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে এভাবে জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বেশি বিপাকে পড়ছেন সীমিত আয়ের মানুষ। সার্বিকভাবে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। শহরে এ হার বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তবে গ্রামে ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত এক দশকের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে।