avertisements 2

পল্লী সড়কে সেতু নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ২৫৩০ কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:৪১ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৫২ পিএম, ৫ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হচ্ছে। এতে প্রকল্পের খরচ বাড়ছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। আর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে তিন বছর। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির সংশোধন অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

দেশের ৪০টি জেলার ৯৪টি উপজেলার পল্লী সড়কে ১৩০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেতু নির্মাণ করে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মূল খরচ ৩ হাজার ৯২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা খরচ বাড়িয়ে ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ ৬৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ খরচ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম সংশোধনীতে মেয়াদও তিন বছর বাড়িয়ে করা হচ্ছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৩০টি (২৬ হাজার ৭৪০ মিটার) সেতু নির্মাণে মূল খরচ বরাদ্দ আছে ৩ হাজার ৩৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সংশোধনে করে ১৩২টি সেতু (৪১ হাজার ৪৩ মিটার) নির্মাণে খরচ ৫ হাজার ৫৩১ কোটি ৬ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণ খাতে খরচ বাড়ছে ২ হাজার ১৬৯ ৮৩ লাখ টাকা।


১৫ হাজার ৬৫০ মিটার নদী শাসনে মূল খরচ বরাদ্দ আছে ১৩৯ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সংশোধনে করে নদী শাসনের পরিমাণ কমিয়ে করা হচ্ছে ৬ হাজার ৭২১ মিটার এবং খরচ ধরা হয়েছে ১২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ, ৮ হাজার ৯২৯ মিটার নদী শাসন কমছে এবং খরচ কমানো হচ্ছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

৫৮ দশমিক ৫১ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ/সংযোগ সড়ক নির্মাণে খরচ বরাদ্দ আছে ১৪৬ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সংশোধনীতে ৬৭ দশমিক ২৩৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ৩১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা খরচের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ অ্যাপ্রোচ/সংযোগ সড়ক ৮ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার বাড়ছে এবং খরচ বাড়ছে ১৬৬ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

১৫০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ আছে ১০০ কোটি টাকা। সংশোধনীতে ১৭০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৩২৫ কোটি টাকা খরচের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, ভূমি অধিগ্রহণ বাড়ছে ২০ হেক্টর এবং খরচ বাড়ছে ২২৫ কোটি টাকা।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে পরিকল্পনা কমিশনকে এলজিইডি বলেছে, বিআইডব্লিউটিএ’র যাচাই করা ন্যূনতম ভার্টিক্যাল অ্যান্ড হরিজন্টাল ক্লিয়ারেন্স এবং হাইড্রোলজিক্যাল অ্যান্ড মরফোলজিক্যাল স্টাডি রিপোর্ট বিবেচনায় সরেজমিনে সেতুর স্থান পরিদর্শন করে ডিজাইন চূড়ান্ত করা এবং চূড়ান্ত করা ডিজাইন অনুযায়ী সেতুর দৈর্ঘ্য মূল ডিপিপির প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় ব্যয় বাড়ছে।

আধুনিক নির্মাণ কৌশলের লং স্প্যান সেতু নির্মাণ ব্যয় বেশি বিধায় প্রকল্পের সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বাড়ছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের রেট শিডিউল অনুযায়ী ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত সেতুগুলোর ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের রেট শিডিউল কার্যকর হওয়ার কারণে আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত সেতুগুলোর হালনাগাদ রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন করা।

ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী ভূমির ক্ষতিপূরণ মূল্য বৃদ্ধি ও বাস্তব চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বাড়ছে।

এদিকে প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর বাড়ার ফলে প্রকল্পের জনবল ও পরামর্শকের বেতন-ভাতাদিও বাড়ছে।

মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে তারা বলছে, সংশোধিত প্রস্তাবে সেতুর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাওয়ার ১০০ মিটারের বেশি সেতুগুলোর স্টাডি কাজ সম্পন্ন করে পরিবেশ অধিদফতর থেকে পরিবেশগত ছাড়পত্র, বিআইডব্লিউটিএ থেকে নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন করে সেতুর ডিজাইন ও প্রাক্কলন চূড়ান্ত করা এবং ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তাছাড়া বৃহৎ সেতুর (১০০ মিটারের বেশি) ক্ষেত্রে যোগ্য দরদাতার স্বল্পতা থাকায় একাধিকবার দরপত্র আহ্বান করতে হচ্ছে। এসব কারণে বাস্তবায়ন মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কশিমনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলেছেন, ‘পল্লী অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেতু নির্মাণ করে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বাড়ানোতে সহায়তা প্রদান এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে মূল প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাপ্তির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধন অনুমোদনযোগ্য।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2