avertisements 2

শিশুদের রোগবালাই বাড়ছেই হাসপাতালে মিলছে না শয্যা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৭ এপ্রিল,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:৫৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

প্রতীকী ছবি

এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছে সাত মাস বয়সী নাদিয়া ইসলাম। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, তার নিউমোনিয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে নাদিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় তার মা-বাবা। তবে শয্যা না থাকায় ফিরে আসতে হয় তাদের। এর পর বিকেলে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে শিশুটিকে নেওয়া হয়। মেয়েকে ভর্তির অপেক্ষায় থাকা আসিয়া বেগম বলেন, ‘সকালে এসেছি। দুপুর ১২টায়ও ভর্তি করাতে পারিনি।’

এই তীব্র গরমে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিন এই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৪০ জন। বেড়েই চলছে রোগীর চাপ। ফলে দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। 

ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছে রোগীর অনেক স্বজন। টিকিট কাউন্টারের সামনে অনেক ভিড়। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের সামনেও ভিড়। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, সবগুলো ওয়ার্ডই রোগীতে পূর্ণ। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কোনো শয্যা ফাঁকা নেই। বর্তমানে ভর্তি আছে ৬৮০ জন। তাদের মধ্য ১০১ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় বহির্বিভাগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১৬ জন ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া জ্বর, ঠান্ডা ও কাশির চিকিৎসা নিয়েছে অনেকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে ৬৮ জন। চর্মরোগের  চিকিৎসা পেয়েছে ৯৮ জন। 

বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগসহ মোট রোগী দেখা হয়েছে অন্তত ১ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে বহির্বিভাগে এসেছে ৯০০ এবং জরুরি বিভাগে ৩০০ জন। মার্চে এই হাসপাতালে দৈনিক গড়ে প্রায় ৫০০ জন সেবা নিয়েছে। দৈনিক গড়ে ১৫০ জন ভর্তি হয়েছে।

আড়াই বছরের সাঈফা ইসলাম নিউমোনিয়া ইউনিটের ১১ নম্বর শয্যায় ভর্তি রয়েছে। তার স্বজন বলেন, সাঈফা তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। জ্বর, কাশি হওয়ার পর মিরপুরে দেখানো হয়। সেখান থেকে জ্বর না কমায় শিশু হাসপাতালে আনা হয়। এখন কিছুটা সুস্থতার দিকে।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন, এই হাসপাতালে সারাদেশ থেকেই রোগী আসে। তীব্র গরমে শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চাপ আগামী কয়েকদিনে আরও বাড়তে পারে। চাপ সামলাতে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, কয়েকদিনের গরমে অন্য বছরের ‍তুলনায় রোগী বেশি আসছে। এর মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে ডায়রিয়া, ঠান্ডা, কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ার সমস্যা। এ সময়টায় শিশুরা প্রচুর ঘামছে। এতে পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে। ভর্তির প্রয়োজন আছে– এমন শিশুর সংখ্যা ২০ শতাংশের মতো হবে। 

গরমের সময়ে শিশু ও বয়স্কদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এই সময়ে প্রচুর পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন, তরল ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর ও উন্মুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। বাইরে বের হলে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2