avertisements 2

ব্লাড ব্যাংকের রক্ত ভয়ংকর!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ মার্চ,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:৪৯ পিএম, ১৮ মে,শনিবার,২০২৪

Text

লিকলিকে শরীর। দুপায়ে ভর করে ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছিলেন না মাদকাসক্ত যুবক মিনহাজ (ছদ্মনাম)। এ অবস্থায় এসেছেন বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এলাকার একটি ব্লাড ব্যাংকে। উদ্দেশ্য রক্ত দেওয়া।

দেখা গেলো, দোকানমালিকের সঙ্গে তিনি তর্কে জড়িয়েছেন। কারণ, ১০০ টাকার চুক্তিতে তার শরীর থেকে এক ব্যাগ রক্ত নেওয়া হলেও তাকে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা। আরও ৫০ টাকা দাবিতে মিনহাজের এ হট্টগোল।

এসময় বেশকিছু লোক জড়ো হন। তাদের উদ্দেশে মিনহাজ বলছিলেন, এর আগেও এভাবে আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এটা এখন আর মানবো না। চুক্তি অনুযায়ী ১০০ টাকাই দিতে হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহরের বেশিরভাগ ব্লাড ব্যাংকেরই একই অবস্থা। অবাধে গজিয়ে ওঠা এসব ব্লাড ব্যাংকে ডোনার হিসেবে নিয়মিত রক্ত বিক্রি করছেন মাদকাসক্ত যুবক এবং যৌনকর্মীরা। এদের রক্তে যৌনরোগ ছাড়াও বি-ভাইরাস, এইডসের জীবাণু থাকতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকের আশপাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক ব্লাড ব্যাংক। সেখানে নিয়মিত রক্ত বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এগুলোর প্রায় সবগুলোই অনুমোদনহীন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া উত্তরাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় শুধু বগুড়ায় নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা গাইবান্ধা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাট থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। এ শহরে সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এবং শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ছাড়াও প্রায় দুইশ ক্লিনিক রয়েছে। বিভিন্ন ক্লিনিক ও দুই হাসপাতালে প্রতিমাসে রক্তের প্রয়োজন হয় দুই থেকে আড়াই হাজার ব্যাগ। এসব রক্তের প্রয়োজন মেটায় সন্ধানী, রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ এবং বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ব্লাড ব্যাংক।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সন্ধানীর একটি শাখা রয়েছে। মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে মাসে গড়ে ৪০০-৪৫০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে ‘সন্ধানী’। বাকি রক্ত সরবরাহ করে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংক। সন্ধানী রক্ত সংগ্রহ করে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে। তাদের রক্তের সবচেয়ে বড় ডোনার (দাতা) শিক্ষার্থীরা। কিছু তালিকাভুক্ত ডোনারও রয়েছেন। তারা প্রতি তিনমাস পরপর রক্ত দেন।

তবে শুধু সন্ধানীর সরবরাহ করা রক্তে প্রয়োজন মেটে না বলেই ক্লিনিকগুলো রক্ত সংগ্রহ করে অন্যান্য ব্লাড ব্যাংক থেকে। এসব ব্লাড ব্যাংক প্রতিব্যাগ রক্ত একশ থেকে দেড়শ টাকায় ডোনারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। এরপর বিভিন্ন টেস্ট ফিসহ রোগীর কাছে সেই রক্ত বিক্রি করে এক থেকে দেড় হাজারে। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো ডোনাররা। এসব ডোনারের বেশিরভাগ হয় মাদকাসক্ত নতুবা যৌনকর্মী।!

মাদকের টাকা জোগাতে তারা নিয়মিত রক্ত বিক্রি করেন। আবার খদ্দের না জুটলে কোনো কোনো যৌনকর্মী রক্ত বিক্রি করে পেট চালান। এদের কাছ থেকে সংগৃহীত রক্তে যৌনরোগের ছাড়াও বি-ভাইরাসসহ এইডসের জীবাণু থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2