avertisements 2

বোকা বানিয়ে ধোঁকা দেওয়ার মাস এপ্রিল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ মে,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২৮ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

বিশ্ব ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হওয়া মাসটিতে ২০২০ সালে সিলেটে ভয়ঙ্কর থাবা বসায় করোনা ভাইরাস। ওই বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেও ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম করোনা আক্রান্ত হন ডা. মঈন উদ্দিন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হলে ১৫ এপ্রিল ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম দফায় করোনার থাবায় দেশে সর্বপ্রথম মারা যান এই চিকিৎসক। এরপর মৃত্যুর মিছিল শুরু হয় দেশব্যাপী।   

গেলো শীতে মহামারিতে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষকে চলাচলে সতর্ক করে সরকার। কিন্তু শীতে করোনার প্রভাব তেমন না থাকায় মৌসুম বদলের সঙ্গে সঙ্গে ফের করোনা আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে। গত এক বছর বিচ্ছিন্নভাবে মারা গেলেও এপ্রিল মাসেই সিলেটে আবারো ভয়ঙ্কর থাবা বসালো করোনা ভাইরাস। হঠাৎ করে বেড়ে যায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার।

গত পহেলা এপ্রিল একদিনে ৫ জনের মৃত্যু দেখে সিলেট, আক্রান্ত হন ১০০ জন। এরপর প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলে জনমনে। করোনা থেকে মানুষকে সুরক্ষায় ১৪ এপ্রিল থেকে পর্যায়ক্রমে দুই সপ্তাহের লকডাউন দেয় সরকার। কিন্তু এরপরও মানুষকে ঘর থেকে বের হওয়া ঠেকানো যায়নি। ফলে এক মাসে সিলেটে করোনা আক্রান্ত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৫৮ জনই সিলেট জেলার, মৌলভীবাজারের ৪ জন, হবিগঞ্জের ২ জন এবং সুনামগঞ্জ জেলার একজন। এছাড়া ১৪ থেকে ২৭ এপ্রিল লকডাউনের দুই সপ্তাহেই মারা গেছেন ৪১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, গত একমাসে ৩ হাজার ১৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের। এরমধ্যে পহেলা এপ্রিল ১০০ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৫ জন। এরমধ্যে ৪ জন সিলেট জেলার, হবিগঞ্জের একজন। ২ এপ্রিল আক্রান্ত ১১৬, মারা যান সিলেটের একজন। ৩ ও ৪ এপ্রিল পর্যায়ক্রমে ৫৬ ও ৫০ জন আক্রান্ত হন। ৫ তারিখে আক্রান্ত ৮৩, মৃত্যু হয় সিলেট জেলার একজনের। ৬ এপ্রিল ১০০ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যান হবিগঞ্জের একজন। ৭ এপ্রিল আক্রান্ত ১৪২, মারা যান সিলেটের দুই বাসিন্দা। ৮ তারিখে আক্রান্ত ১৫৩ এবং মৃত্যু হয় সিলেটের দুই জনের। ৯ এপ্রিল ১৪৪ জন আক্রান্তের বিপরীতে মারা যান সিলেটের একজনের।

১০ এপ্রিল আক্রান্ত ১৯৫, মৃত্যু মৌলভীবাজারের একজনের। ১১ এপ্রিল আক্রান্ত ১৪৩ জন, মৃত্যু হয় সিলেটের দুইজনের। ১২ এপ্রিল আক্রান্ত ১৪২, মৃত্যু হয় সিলেটের দুই বাসিন্দার। ১৩ এপ্রিল আক্রান্ত ১৩৯, মারা যান সিলেটের দু’জন। ১৪ এপ্রিল ৩ জনের মৃত্যু হয় দুইজন সিলেটের, একজন মৌলভীবাজারের, আক্রান্ত হন ১৫৪ জন। ১৫ এপ্রিল মৃত্যুহীন দিনে ৭৯ জন আক্রান্ত হন। ১৬ এপ্রিল ১০৭ জন আক্রান্ত, মৃত্যু হয় সিলেট জেলার একজনের। ১৭ এপ্রিল ৬২ জন আক্রান্ত ও সিলেটের ২ জন মারা যান। ১৮ এপ্রিল কেবল ৭৫ জন আক্রান্ত হন। ১৯ এপ্রিল ১৩০ জন আক্রান্ত ও সিলেটের তিন বাসিন্দার মৃত্যু হয়। ২০ কেবল ১৩৬ জন আক্রান্ত হন।  

২১ এপ্রিল সিলেটের একজন মারা যান, আক্রান্ত হন ১৩৫। ২২ এপ্রিল আক্রান্ত ১১৩ এবং সিলেটের চারজন মারা যান। ২৩ এপ্রিল ১২৪ জন আক্রান্ত হয়ে সিলেট জেলার ২ বাসিন্দা মারা যান। ২৪ এপ্রিল ১১৫ জন আক্রান্ত ও সিলেটের দুই এবং মৌলভীবাজারের একজন মারা যান। ২৫ এপ্রিল একদিনে সিলেটের ৮ জনের মৃত্যু হয় এবং ৪৫ জন আক্রান্ত হন। ২৬ এপ্রিল আরো ৫ জনের মৃত্যু হয় এবং আক্রান্ত হন ৮৮ জন। নিহতদের ৪ জন সিলেট ও একজন সুনামগঞ্জের। ২৭ এপ্রিল ৯৪ জন আক্রান্তের বিপরীতে ২ জন মারা যান। দু’জনই সিলেটের। ২৮ এপ্রিল ৭৩ জন আক্রান্তের বিপরীতে ২ জন মারা যান। ২৯ এপ্রিল আক্রান্ত হন ৫ জন। সকলেই সিলেটের এবং ৮৫ জন আক্রান্ত হন। সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল ৭৯ জন আক্রান্ত হন, মৃত্যু হয় ৪ জনের। তার মধ্যে চারজনই সিলেট জেলার বাসিন্দা।  

সিলেটে করোনার বিশেষায়িত শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. চয়ন রায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনের কারণে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও মৃত্যু কমেনি। গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2