মৃত নবজাতককে বাঁচানোর আশায় ঘুরছেন পাগল মা

রংপুর নগরীতে মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে ঘুরছেন এক সন্তান পাগল মা। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) নগরীর জাহাজকোম্পানি মোড় ও রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে ওই নারীকে দেখে আশেপাশে মানুষের ভিড় করছেন। এছাড়া স্থানীয় কাউন্সিলর ও থানা পুলিশ তার খোঁজখবর নিচ্ছেন। 

মাহিগঞ্জ মেট্রোপলিটন থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, এমন ঠান্ডায় বাইরে অবস্থানের কারণ জানতে চাইতেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন এ নারী। এক পর্যায়ে জানা গেল, নারীর কোলে নবজাতক আছে সে তারই নাড়িছেঁড়া সন্তান তবে শিশুটি বেঁচে নেই। এটা জানা সত্বেও সন্তানের বেঁচে উঠার আশায় কোলে নিয়ে দিনভর এদিক সেদিক ছুটছেন তিনি।

এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা নাড়া দিয়েছে স্থানীয়দের।

পুলিশ জানায়, ওই নারী কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর এলাকার বাসিন্দা। বিয়ে না হলেও এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। ১৭ দিন আগে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় নবজাতকের জন্ম দেন তিনি। এরপর সন্তানকে নিয়ে তার নিজ বাড়িতে গেলে সৎ বাবা তাকে মারধর করে শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে বলেন। এরপর তিনি সন্তানকে নিয়ে রংপুর শহরে চলে আসেন এবং ঠাণ্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।কিন্তু এতে হাল ছাড়েননি ওই মা। মৃত সন্তানকে বাঁচিয়ে তোলার আশায় নগরীর মাহিগঞ্জে এক কবিরাজের কাছে ছুটে যান। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকেই মাহিগঞ্জ বাজার এলাকায় মৃত সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন ওই মা।

ওসি জানান, স্থানীয়রা ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন বলছিলেন। এ নারীর কোলে থাকা শিশুটি মৃত কিনা তা পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, এই নারী মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। তার নবজাত শিশুটি মারা গেছে। অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ওই নারী কাউকে কিছু না বলে কোথায় চলে গেছে আমরা বলতে পারছি না। তাকে খোঁজা হচ্ছে।