পা দিয়ে লিখে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেল সেই অদম্য মানিক!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৯ এএম, ১০ জুন,মঙ্গলবার,২০২৫

পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে মানিক (বাঁয়ে), মানিক রহমান (ডানে)
জন্ম থেকেই দুই হাত নেই মানিক রহমানের। দুই পা থাকলেও একটি খাটো ও একটি লম্বা। অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকায় সুস্থ ও স্বাভাবিক অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতোই কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মানিক। পা দিয়ে লিখেই এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে মানিক।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে নিজেই পা দিয়ে ল্যাপটপ চালিয়ে ফল দেখে মানিক। তার ফলাফলে মুগ্ধ সবাই।
শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা মিজানুর রহমান ওষধ ব্যবসায়ী ও মা মরিয়ম বেগম প্রভাষক। হাত না থাকলেও কখনো পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়েনি মানিক। নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে পুঁজি করে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়াসহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি ও জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায় মানিক। ২০১৬ সালে জছিমিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পায় এবং ২০১৯ সালে ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় মানিক। তার স্বপ্ন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে। মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। মানিক প্রতিবন্ধী এটা আমরা মনে করি না। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের চেয়েও মানিক পিএসসি ও জেএসসিতে ভালো রেজাল্ট করেছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন যেন সে সুস্থ-সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে। এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে সে যেন তার স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।
মানিক রহমান বলেন, আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহ রহমতে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমি এর আগে জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পাই। আমি এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভালো ফলাফল করায় আমরা মুগ্ধ। সে জীবনে অনেক বড় হোক এ দোয়া করি।