বৃষ্টির জন্য মোংলায় বিশেষ নামাজ, ৩ ঘণ্টা পরই নামল বৃষ্টি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৬ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী চলমান দাবদাহে মোংলার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে জনজীবন। মানুষের মাঝে নেমে আসছে চরম দুর্ভোগ, রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এখানকার সাধারণ মানুষ। উপকুলীয় গ্রামীণ জনপদের পুকুর ও ডোবায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক পানি সংকট। এ ছাড়াও কোথাও কোথাও নলকূপের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। জ্যৈষ্ঠ পেরিয়ে আষাঢ়ে পা দিলেও নেই বৃষ্টির দেখা। তাই মানুষ হাহাকার করছে খাবার পানির জন্য।
বৃষ্টি না হওয়ার কারণে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল, দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। মোংলায় সুপেয় পানির জন্য একমাত্র পানির প্রকল্পের পুকুর দুটিও শুকিয়ে চৌচির। তাই এ অনাবৃষ্টি থেকে উদ্ধার পেতে ও রহমতের বৃষ্টির জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা ইমাম পরিষদের আয়োজনে বিশেষ (সালাতুল ইসতিসকার) নামাজ আদায় করেন মোংলা উপজেলাবাসী। বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টায় পৌর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ আদায় করেন উপজেলার ২৬৭টি মসজিদের ইমামসহ প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ।
নামাজ শেষে হাজারো মুসল্লি আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করে কান্নাকাটি করেন। অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করেন মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি, ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. রেজাউল করিম।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান। এছাড়া ইমাম পরিষদের উপদেষ্টা হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন, ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কবরস্থান জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. আ. রহমান, বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা তৈয়েবুর রহমানসহ অন্য ইমামরা উপস্থিত ছিলেন।
ইমামরা বলেন, সৌদি আরবে রহমতের বৃষ্টির জন্য প্রতি বছরই একাধিকবার ইসতিসকার নামাজ পড়া হয়। বিশেষ করে যখনই অনাবৃষ্টি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বেড়ে যায় তখনই নামাজে ইসতিসকার আদায় করা হয়। ইসতিসকার সালাত আদায় করা নফল ইবাদত। তবে মহামারি বা দুর্যোগ এলে এ সালাতের গুরুত্ব অনেক বলে জানান তারা।
একনিষ্ঠ তাওবা করা অর্থাৎ তাওবাতুন নসুহার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে ২ রাকায়াত সুন্নত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির প্রার্থনা করা হয়। এ নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই। তবে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এ নামাজের ৩ ঘণ্টা পরই শহরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে যা আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি।
নামাজের আগে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান সবার উদ্দেশে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনার আবেদন করেন এবং পৌরবাসীর সুপেয় পানির জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনার দাবি জানান।
ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য খুব বিপদে আছে। উপকুলীয় এলাকায় প্রচণ্ড তাপদাহে দেশের মানুষের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্ট লাগবের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা সুন্নত, একেই বলা হয় ইসতিসকার অর্থাৎ আল্লাহর কাছে পানির জন্য প্রার্থনা করা।
গত ৭ মে ঘূর্ণিঝড় অশনি’র ফলে দুইদিন বৃস্টি হলেও অদ্যাবধি কোন বৃষ্টির দেখা মিলছে না মোংলা উপকুলে। এছাড়া সম্প্রতি খনন করা ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় দুটি পানি সরবরাহ প্রকল্প থাকলেও কোন কাজে আসছে না মোংলাবাসীর।