avertisements 2

ভাবির সঙ্গে পরকীয়া করায় খুন করে মাটিচাপা দেয় দুই ভাই 

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৩৮ এএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪

Text

একরামুল

যশোরের মণিরামপুরে কলেজছাত্র একরামুল ইসলাম হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই ভাইকে আটক করা হয়েছে। তারা গতকাল শুক্রবার (১ এপ্রিল) ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

আটকৃতরারা হলেন, মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের হোসেন মোড়লের ছেলে আমিনুর রহমান (২৬) ও কামরুল ইসলাম (৩২)। এ ছাড়া এদের ভাতিজা মাহেদীকেও আটক করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ জানান, আটক কামরুলের স্ত্রীর সঙ্গে কলেজছাত্র একরামুলের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কামরুল কুয়েতে থাকতেন। পাঁচ মাস আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। বাড়িতে আসার পর তিনি স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কে জানতে পারেন।

এরই মধ্যে কামরুলের ভাই আমিনুরও ভাবির সঙ্গে একরামুলের পরকীয়া সম্পর্ক জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি পরিবারের মানসম্মান রক্ষার্থে গোপনে একরামুলের সঙ্গে দেখা করে সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু একরামুল শোনেননি।

উল্টো আমিনুরকে হুমকি দিয়ে বলেন, তার ভাবির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে আছে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমিনুরকে নিষেধ করেন একরামুল।

ফলে কোনো উপায় না পেয়ে একরামুলের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসেট নিয়ে ওই আপত্তিকর ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন আমিনুর। ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় আমিনুর তার ভাতিজা মেহেদীর কাছ থেকে জানতে পারেন একরামুল নোয়ালী গ্রামের কাড়াখালী ব্রিজের ওপর অবস্থান করছেন। এ খবর পেয়ে তিনি গোপনে সেখানে গিয়ে তাকে দেখতে পান। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন এবং একটি বৈদ্যুতিক তার নিয়ে ফের সেখানে যান। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে গলায় বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে একরামুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন সেটটি দিতে বলেন আমিনুর। কিন্তু ফোনসেট দেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বৈদ্যুতিক তার গলায় পেঁচিয়ে ধরার কারণে শ্বাসরোধে মারা যান একরামুল।

মারা যাওয়ার কারণে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় ভয় পেয়ে যান আমিনুর। পরে মরদেহটি ব্রিজের পাশে রেখে বাড়িতে চলে আসেন তিনি এবং সব ঘটনা ভাই কামরুলকে জানান।

এ কথা শুনে কামরুল ভয় পেয়ে তাকে প্রচণ্ড বকাঝকা করেন। পরে দুই ভাই ঘটনাস্থলে যান এবং মরদেহ বস্তাবন্দি করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পাশের মদনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখেন।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ভাইসহ তাদের ভাতিজা মেহেদীকে বৃহস্পতিবার সকালে আটক করা হয়। শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং এর আমিনুর ও কামরুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

আসামিরা হলেন, ভরতপুর গ্রামের আমিনুর, কামরুল, মেহেদী, একই গ্রামের কাশেম মোড়লের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৫০), হোসেন মোড়লের ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৮), ষোলখাদা গ্রামের আবুল কালাম দফাদারের ছেলে হুমায়ুন (২৬) ও হেলাল।

নিহত একরামুল ভরতপুর গ্রামের মফিজুর মোল্লার ছেলে। গত ২৮ মার্চ রাতে তিনি নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় একরামুলের মা রেশমা খাতুন ৩০ মার্চ মণিরামপুর থানায় একটি জিডি করেন। এই জিডি’র সূত্র ধরে পিবিআই কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে আমিনুর, কামরুল ও মেহেদীকে আটক করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মদনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখা একরামুলের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2