পুলিশের এসআই পরিচয়ে বিয়ে, শ্বশুরবাড়িতে খেলেন গণধোলাই
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ মার্চ,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০৯ এএম, ৩১ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
মোবাইল ফোনে পরিচয়। নিজের পরিচয় দেন পুলিশের এসআই। এভাবেই কথা চলে কিছুদিন। তারপর দুইজনেই জড়িয়ে পরেন প্রেমের সম্পর্কে। দুই মাস আগে ফরিদপুর আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন।
প্রথম দিকে মেয়ের বাড়ির লোকজন ওই বিয়ে না মানলেও জামাই পুলিশের এসআই শুনে মেনে নেন। প্রায় ২ মাস ধরে যাতায়াত করে শ্বশুরবাড়ি। এর মাঝে এসআই থেকে প্রমোশন হবে এমন কথা বলে দুই লাখ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন শ্বশুরের কাছ থেকে। কিন্তু পুলিশের পরিচয়পত্র দেখতে চান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখানে নানা প্রতারণার আশ্রয় নেন। দুইদিন আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মনে সন্দেহ হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্বশুরবাড়িতে আসার পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া এসআই পরিচয়ের কথা স্বীকার করে। পরে তাকে মারধর করে এলাকবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের জিয়েলগাড়ীপাড়া গ্রামে।
ওই প্রতারকের নাম, উৎপল মণ্ডল (৪০)। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মকছেদপুর থানার দিস্তাই গ্রামের নিরাপদ মণ্ডলের ছেলে। উৎপল পেশায় একজন পান বিক্রেতা।
প্রতারণার শিকার ওই কলেজ ছাত্রী ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী। কলেজছাত্রীর বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর গ্রামে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন উৎপল মণ্ডল জানান, কয়েকমাস আগে আমাদের ফোনে পরিচয় হয়। ও অনার্সে পড়ে এ জন্য আমি এসআই পরিচয় দিয়েছিলাম। আমি বলতাম কিশোরগঞ্জে এসপি অফিসে চাকরি করি। তারপর আমাদের প্রেম হয়। দুই মাস আগে ফরিদপুর কোর্টে আমরা বিয়ে করি। মূলত আমি পানের ব্যবসা করি। আজকে শ্বশুরবাড়ি এলাকার লোকজন জানতে পারে আমি পানের ব্যবসা করি। এটি জানার পর সবাই মিলে আমাকে মারধর করে।
প্রতারিত মেয়েটির বড় ভাই জানান, আসল পরিচয় জানার পর বাড়ির আশপাশের লোকজন দুই একটা চর-থাপ্পড় দিয়েছে। পরে চেয়ারম্যান পুলিশে খবর দেয়।
নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর জানান, উৎপল বড় ধরনের একজন বাটপার। পানের ব্যবসা করে পুলিশ পরিচয় দিয়ে একটা শিক্ষিত মেয়েকে বিয়ে করছে। আমি শুনেছি উৎপল মাদারীপুর ও বরিশালেও একইভাবে প্রতারণা করে আরও দুটো বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর এলাকার লোকজন ওকে চর-থাপ্পড় দেয়। পরে আমি পুলিশে খবর দিয়েছি।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারিকুজ্জামান জানান, প্রতারণার শিকার পরিবারের লোকজন তাকে আটক করে মারধর করে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।