ইউপি সদস্যে মোজাম্মেলের টর্চার সেলে নির্যাতনে ব্যক্তির মৃত্যু
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের টর্চার সেলে অমানুষিক নির্যাতনে আহত আনোয়ারুল ইসলামের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। টানা ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত আনোয়ারুল আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে পাশের কালীগঞ্জের চলবলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী মোজ্জাম্মেল হককে দেড় লাখ টাকা ধার দেন আনোয়ারুল। নির্বাচনে জয়লাভের পর সেই টাকা পরিশোধ করতে চাপ দেন তিনি। এ সময় টাকা না দিয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখান মোজাম্মেল, যা নিয়ে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।
গত ৪ জানুয়ারি টাকা দেওয়ার কথা বলে আনোয়ারুলকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন মোজাম্মেল। এরপর নিজের টর্চার সেলে আটকে রেখে দুই দিন অমানুষিক নির্যাতন করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে ইউপি সদস্যের বাড়িতে আনোয়ারুলকে উদ্ধার করতে গিয়ে ধরা পড়েন তার প্রতিবেশী রোকনুজ্জামান। তার ওপরও অমানুষিক নির্যাতন চলে। পরে ৬ জানুয়ারি আনোয়ারুলের পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ মোজাম্মেলের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালায়। এ সময় আনোয়ারুলের মোটরসাইকেল উদ্ধার করে তারা।
অবস্থা বেগতিক দেখে মূমুর্ষ আনোয়ারুল ও রোকনুজ্জামানকে স্থানীয় তেতুলিয়া মাদরাসা মাঠে ফেলে সটকে পড়ে অপহরণকারীরা। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত আনোয়ারুলের মাথাসহ সারা শরীরে অসংখ্য লোহার পেরেক লাগানো ছিল। হাসপাতালে নিজের ওপর হওয়া অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন আনোয়ারুল।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে ওই দিন রাতে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মোজাম্মেল, তার ছোট ভাই মোশারাফ হোসেন ভুট্টু ও ছেলে সুজনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মোজাম্মেল ও তার ছোট ভাই। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসূল বাংলানিউজকে বলেন, নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে। এ মামলায় প্রধান আসামিসহ দুজন অভিযুক্ত জেলহাজতে রয়েছেন। অপর দুজন জামিনে এবং একজন পলাতক রয়েছেন। পলাতক ব্যক্তিকে গ্রেফতারে অভিযান চলেছে।