বরগুনার এমপি ও ওসির ফোনালাপ ফাঁস!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৬ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলামের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। সাংসদ–ওসির কথোপকথনের ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ফোনালাপটি অডিওটি বুধবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফোনালাপের বিষয়টি ওসি তারিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তবে কিভাবে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সাংসদ ও ওসি তারিকুলের কথোপকপন তুলে ধরা হলো:
সাংসদ: ওসি সাহেব।
ওসি: জি স্যার আসসালামু আলাইকুম।
সাংসদ: আপনার পরবর্তীতে দারোগা কি (ওসি পদটি দারোগা নয়, পরিদর্শক) বরগুনায় আসছে?
ওসি: পরবর্তী?
সাংসদ: আপনি জানেন না, আপনি যখন চলে যাবেন, তখন যে আসবে সে কি আসছে বরগুনায়?
ওসি: স্যার...
সাংসদ: প্রশ্নটা অনেক কড়া, না?
ওসি: অনেক কঠিন, কড়া স্যার। স্যার, আমি তো আপনাদের রেখে যেতে চাই না।
সাংসদ: ঠিক আছে। আচ্ছা আপনি কোথাও বলেছেন সাবু (সাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী) যুবলীগে আপনার প্রার্থী?
ওসি: না স্যার।
সাংসদ: এই কথা আপনি কারও সাথে বলছেন?
ওসি: আমার প্রার্থী হয় কীভাবে, আমি কি রাজনীতি করি?
সাংসদ: আমি কিন্তু বিশ্বাস করি না বলছেন। বলছেন কি না, চিন্তা করেন।
ওসি: না স্যার।
সাংসদ: মেশেন তো সবার সাথে, কোন গুন্ডার ধারে বসে কী কইছেন কে জানে।
ওসি: স্যার এটা ফালতু কথা, ফালতু কথা আমি বলতে পারি না।
সাংসদ: এটা আপনি পারেন না, এসপি সাহেব কইতে পারে?
ওসি: না স্যার সে–ও বলতে পারে না, আপনারা বলতে পারেন।
সাংসদ: বোঝেন না এলাকায় কত কথাই না হয়।
ওসি: এটা কোনো কথা স্যার? আমরা বলব কেন, এক সময় আমরা ছাত্রলীগ করেছি ঠিক আছে। এখন তো বলার কোনো স্কোপ (সুযোগ) নাই। আজ তো স্যার বিএনপিকেও প্রোগ্রাম করতে দিলাম।
সাংসদ: তারপর, করবে না কেন? ভদ্র আচরণ করলেই হয়, অভদ্র আচরণ করলেই পিটান। অভদ্র, মারমুখী হইলে তখন আমরা পুলিশকেও জিজ্ঞেস করব না, তখন আমাদের পোলাপান পিটাইবে। বইলা দিয়েন আপনারা (বিএনপি) করলে ভদ্রভাবে কইরেন।
ওসি: জি স্যার, তারা ভদ্রভাবেই করছে।
সাংসদ: ৬ নম্বরে (বুড়িরচর ইউনিয়ন) ইউনিয়ন ইলেকশনের সময় যে মামলাগুলা হইছিল, সেগুলা কী অবস্থায় আছে?
ওসি: স্যার ওগুলা কি পেন্ডিং আছে।
সাংসদ: হ্যাঁ পেন্ডিং আছে না। রিপোর্ট তো দেন নাই এখনো। যাওয়ার আগে ওগুলা গুছাইয়্যা দিয়া যাইয়েন।
ওসি: দিমু স্যার।
সাংসদ: আবার তাইলে আমরা অ্যাডিশনাল, এএসপি কইর্যান নিয়া আসমু।
ওসি: না স্যার দরকার নাই, এই র্যাংঙ্কই যেন বাড়ি যাইতে পারি।
এ সময় সাংসদকে বলতে শোনা যায়— অনেকে এএসপি হইতে চায় না, ওসিই থাকতে চায়।
কথোপকথনের বিষয়ে কথা বলার জন্য এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রেকর্ডটি আমিও শুনেছি, কিন্তু আমার ফোনে তো কোনো রেকর্ড নেই, তাছাড়া আপনারা পেলেন কিভাবে।
তিনি আরও বলেন, ভাই আমার জানি কোনো ক্ষতি হয় না, আমি কিছুতেই বুঝতে পারলাম না আপনারা কি করে এ রেকর্ডটি পেলেন, এ সম্পর্কে আমার কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। এটা আমারই কণ্ঠ। গত ২ ডিসেম্বর এমপি স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।