বাবার ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক’দেখে ফেলায় খুন শিশু ফাহিমা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ নভেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৩ এএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাঁচ বছরের শিশু ফাহিমা আক্তার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিশুটির বাবাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাতে র্যাব ১১-এর একটি দল তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতাকৃতরা হলেন— শিশুটির বাবা আমির হোসেন (২৫), তার চাচাতো ভাই রবিউল আউয়াল (১৯), রেজাউল ইসলাম ইমন (২২), লাইলি আক্তার (৩০) ও সোহেল রানা (২৭)।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বুধবার ঢাকার কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কুমিল্লার দেবিদ্বারের অটোরিকশাচালক আমির হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় লাইলি বেগমের ‘বিয়েবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। গত ৫ নভেম্বর আমিরের সঙ্গে লাইলিকে দৃষ্টিকটূ অবস্থায় দেখে ফেলে আমিরের মেয়ে ফাহিমা। এর পর সে তার মাকে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলে জানায়। তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে লাইলি বারবার আমিরকে চাপ দিচ্ছিল বিষয়টি সামাল দেওয়ার জন্য। পর দিন আমির তার চাচাতো ভাই ও পূর্ব পরিচিত আরও চারজনকে নিয়ে তার মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, ৭ নভেম্বর মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় আমির হোসেন। নিজের অটোরিকশায় করে তাকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেবিদ্বার পুরান বাজারের দক্ষিণে নদীতীরের নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। একটি ছুরি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন আমির, তার সহযোগী রবিউল আরেকটি ছুরি নিয়ে নদীতীরের ওই নির্জন জায়গায় যান।
র্যাব জানায়, শিশুটিকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করেন বাবা আমির হোসেন, এর পর অন্যরা। ছুরিকাঘাতের পর শ্বাসরোধে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করেন আমির। এর পর পশুখাদ্য রাখার প্লাস্টিকের বস্তায় শিশুটির লাশ ভরে অটোরিকশায় নিয়ে রওনা দেন।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বাড়িতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ফাহিমার মা বারবার আমিরকে ফোন করছিলেন। আমির তাদের খুঁজে দেখতে বলেন। ওই রাতে লাশটি ফেলার কোনো জায়গা না পেয়ে ইমনদের গরু রাখার ঘরে একটি প্লাস্টিকের ড্রামে লাশটি ঢেকে রাখা হয়। দুদিন পর সোহেল রানার অটোরিকশায় করে লাশটি কাচিসাইর এলাকার একটি কালভার্টের নিচে তারা ফেলে আসে বলে র্যাবের ভাষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি শ্বশুরবাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক নিয়েছিলেন আমির। সেই টাকার বিনিময়েই তিনি মেয়েকে হত্যা করতে অন্যদের দলে টানেন। ফাহিমা ‘নিখোঁজ’ দাবি করে ওই ব্যক্তিরাই এলাকায় মাইকিং, ঝাড়ফুঁক ও ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, যাতে তাদের কোনোভাবে সন্দেহ করা না হয়।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিখোঁজের সাত দিন পর গত ১৪ নভেম্বর বাজারের ব্যাগভর্তি অবস্থায় শিশু ফাহিমার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর খোঁজাখুঁজি না করে নিজেই থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন ঘাতক বাবা আমির হোসেন।