avertisements 2

স্বর্ণের তথ্য না দেয়ায় খুন হন গাড়ি চালক শাহ আলম

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ অক্টোবর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৫২ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া চাঁনপুর বাজার পুরান ঘাট সড়ক থেকে উদ্ধার সেই বস্তাবন্দি লাশ চট্টগ্রামে নিখোঁজ গাড়িচালক শাহ আলমের বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ জানায় নিহত শাহ আলমের গাড়িতে বিভিন্ন সময় বৈধ স্বর্ণ পরিবহন করা হতো। সেই তথ্য খুনিদের না দেয়ায় শাহ আলমকে খুন করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার দুপুরে নগরীর ডাবলমুরিং থানার চৌমুহনী চাড়িয়া পাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজন হলেন শহিদুল ইসলাম কায়সার প্রকাশ বেলাল এবং নুরুল আমিন রনি।

গ্রেপ্তার বেলালের কথা মতো শনিবার সন্ধ্যায় পুকুরিয়ার পুরান ঘাট থেকে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়িও উদ্ধার করে পিবিআই।

এ ঘটনায় শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত শাহ আলমের মেয়ে আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বাঁশখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বাঁশখালীর পুকুরিয়া পুরান ঘাট থেকে বস্তাবন্দি লাশ পাওয়ার খবর শুনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যাই। লাশটি কিছুটা গলিত ছিল। তবুও তার আঙ্গুলের চাপ নেয়ার চেষ্টা করি। আঙ্গুলের চাপের মাধ্যমে একপর্যায়ে জানতে পারি নিহত ব্যক্তির নাম শাহ আলম, তার বাবার নাম চান মিয়া। ঠিকানা দেয়া আছে আগ্রাবাদ ব্যাপারী পাড়া। তবে শাহ আলমের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামে।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার চারদিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন শাহ আলম। নগরীর কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন শাহ আলমের পরিবার। শাহ আলম মূলত গাড়ি চালাতেন। ঘটনার দিন গাড়ি নিয়ে মালিককে শহর থেকে পটিয়ায় নেয়ার কথা। মালিকের দাবি ২৬ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে পটিয়া গিয়ে ভূমি অফিসে সারাদিন কাজ করে ৪টার দিকে শহরের কোর্ট বিল্ডিং তাকে নামিয়ে দেন চালক শাহ আলম। কল লিস্ট চেক করেও মালিকের সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

এদিকে শহর থেকে বের হওয়ার মুখ তথা নতুন ব্রিজের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলাম আমরা। এতে দেখা যায়, শাহ আলম যে গাড়ি চালাতেন সেই গাড়িটি ২৬ আর ২৭ অক্টোবর মিলে মোট পাঁচবার আসা যাওয়া করেছে। এর মধ্যে ২৬ অক্টোবর গাড়িটির নাম্বার প্লেট থাকলেও ২৭ অক্টোবর দেখা যাচ্ছে নাম্বার প্লেট খোলা। এতে সন্দেহ হয় আমাদের। ২৭ অক্টোবর ৫টা ২৮ মিনিটে গাড়িটি শহর থেকে বের হয়। আবার ওইদিন ৮টা ২৬ মিনিটে বাঁশখালীর তৈলারদ্বীপ ব্রিজ পার হয় গাড়িটি। আবার ৮টা ৩৮ মিনিটে তৈলারদ্বীপ ব্রিজ দিয়ে শহরের দিকে ব্যাক করে।’

আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও কল লিস্টের মাধ্যমে ২৭ অক্টোবর গাড়িটি যে চালিয়েছে তাকে শনাক্ত করি। তার নাম শহিদুল ইসলাম কায়সার প্রকাশ বেলাল। ৩০ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে ডবলমুরিং নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞেসাবাদ করলে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তাকে নিয়ে লাশ উদ্ধারের স্থানে গিয়ে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়িটি উদ্ধার করি। কোমল পানীয় ফ্রুটিকার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে তারপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার কথা জানান বেলাল। তাকে খুন করা হয় কর্ণফুলীর মইজ্জারটেকের আহসানিয়া পাড়ায়, বেলালের রড সিমেন্ট বিক্রয়ের দোকানে। পরে সেখান থেকে শাহ আলমের সেন্ডেল, রক্তাক্ত একটি বস্তা, ঘুমের ওষুধ সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়।’

এস আই শাহাদাত আরও বলেন, ‘পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নুরুল আমিন রনিকেও গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিকভাবে বেলাল জানিয়েছে বিভিন্ন সময় বিদেশ থেকে বৈধ উপায়ে নিয়ে আসা স্বর্ণের বার শাহ আলমের গাড়িতে পরিবহন করা হতো। অসৎ সেই তথ্য জানতে চেয়েছিলো বেলাল। বেলালকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা না করায় ক্ষিপ্ত হয় সে। এতেই শাহ আলমকে খুনের পরিকল্পনা করে।’

গ্রেপ্তার দুজনকে রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে বলে জানান এসআই শাহাদাত।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2