দাফনের প্রস্তুতিকালে খাটিয়াসহ মরদেহ থানায় নিয়ে গেলেন পুলিশ!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫৩ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বগুড়ায় শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় শালিস বৈঠকে পৌর কাউন্সিলের মারপিটে আব্দুল মমিন (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দাফনের প্রস্তুতিকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। এঘটনায় অভিযুক্ত বগুড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটুকে পুলিশ আটক করে হেফাজতে নিয়েছে। রবিবার (২২ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়া থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত মমিন ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার রেজাউলের ছেলে। তিনি পেশায় হোটেল শ্রমিক ছিলেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। নিহতের স্ত্রী বর্ষা ও শ্বাশুড়ি জানান, শুক্রবার স্থানীয় এক রিক্সা চালকের শিশু কন্যাকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগ তুলে পৌর কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু মমিনকে ফুলবাড়ি ফাউন্ডেশন নামের একটি ক্লাব ঘরে ডেকে নেয়।
সেখানে শালিস বৈঠকের নামে কাঠের বাটাম দিয়ে বেধড়ক পিটানো হয় মমিনকে। পরে মমিনের বাবাকে ডেকে ছেলেকে তার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। শহরের কলোনী এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী অবস্থান করায় পরদিন শনিবার সন্ধ্যার পর মমিন সেখানে যান। স্ত্রীকে জানান, রিক্সা চালক জুয়েলের ছোট শিশু কন্যাকে সিগারেট আনতে দেয়ার ঘটনা নিয়ে পৌর কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু ক্লাব ঘরে ডেকে নিয়ে তার পিঠে তিনটি কাঠের বাটাম ভেঙ্গেছে।
শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ শুনে স্ত্রী বর্ষা তার স্বামীকে গালমন্দ করে। শনিবার রাতেই মমিন শ্বশুরবাড়ি থেকে ফুলবাড়িতে তার নিজের বাড়িতে চলে যান। অসুস্থতার খবর পেয়ে মমিনের ভগ্নিপতি জাহিদ রাতে বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন। জাহিদ জানান মমিন অসুস্থ বোধ করলেও কথাবার্তা স্বাভাবিক বলছিলেন। একারনে রাতে তাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়নি। রবিবার সকালে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে মমিনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মমিন মারা যান। পরে পৌর কাউন্সিলর বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহ নিজ উদ্যোগে মমিনের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং তার খরচে দাফনের প্রস্তুতি নেন। বিকেলে ঘটনাটি সদর থানা পুলিশ জানতে পেরে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এসময় পৌর কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটুকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, মযনা তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারন নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, একারনে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।