নিরাপত্তাকর্মী থেকে বিসিএস ক্যাডার মিহির
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৫৩ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
স্বপ্ন, উদ্যম ও পরিশ্রমই জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি। শত বাধা কিংবা দারিদ্র্য―কোনো কিছুই যেন সফলতার পথ আটকাতে পারে না। সেটাই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এম এ মোত্তালিব মিহির। সদ্য ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।
দরিদ্র বর্গা চাষির সন্তান হয়ে ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাঁকে। দারিদ্র্যের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পড়াশোনা। কিন্তু মিহির টলেননি। আর্থিক সংকটে পড়ে নানামুখী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন।
কখনো বাসাবাড়িতে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ, কখনো প্রুফ রিডার ও টিউশনি করে চালিয়েছেন নিজের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ। সেই সঙ্গে এগিয়ে গেছেন প্রতিজ্ঞ স্বপ্নের পথে। তাঁর পরিশ্রমই যেন সফলতার দেখা দিয়েছে। বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাবুল ইসলাম ও জামিলা বিবির একমাত্র সন্তান মোত্তালিব মিহির।
বাবা গ্রামে বর্গা চাষি এবং মা গৃহিণী। বাবার স্বল্প আয় চলত সংসার। তাঁর একমাত্র স্বপ্ন কেবল সন্তান মিহিরের ভবিষ্যৎ। মিহির সাধারণ জ্ঞান জগতের বিশ্বস্ত বই প্রকাশনী মিহির’স রিসার্চ ও পাবলিকেশনের প্রতিষ্ঠাতা। লিখেছেন মিহির’স জিকে।
যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাঠকদের মন জয় করতে পেরেছে।
মিহিরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সাফল্যের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। বিসিএস পর্যন্ত আসার পথটা কখনোই মসৃণ ছিল না। গ্রামের স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে যখন তিনি কলেজে ভর্তি হন, তখন আর্থিক টানাপড়েনের মধ্যে পড়তে হয় তাঁর পরিবারকে। ফলে কলেজের পড়াশোনাও কিছুদিন বন্ধ ছিল। তাই মিহিরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি কম্পানিতে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরিও নিতে হয়েছিল।
মিহির বলেন, ‘বেসরকারি কম্পানিতে সিকিউরিটি ম্যানের চাকরি করতাম। ডিউটি ছিল ১৬ ঘণ্টা। জীবনের কঠিন সময় তখনই কেটেছে। তখন বসে থেকে সময় কাটত না, তাই মাঝে মাঝে বই পড়তাম। একদিন ছুটি নিয়ে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করি। সে ঢাকায় এসেছে কোচিং করে অ্যাডমিশন দেবে। তার কাছেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সম্পর্কে জানি। পড়াশোনার উদ্দীপনা আবারও জাগে। সিকিউরিটি চাকরির বেতন থেকে কিছু টাকা জমিয়ে ভর্তি হয়ে যাই একটি কোচিংয়ে। অবশেষে চান্স পাই ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ভর্তি হই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।’
জুনিয়রদের উদ্দেশে মোত্তালিব বলেন, ‘বিসিএস ক্যাডার হওয়া যতটা না কষ্টের তার থেকে বেশি কষ্টসাধ্য কাজ হচ্ছে লেগে থাকা। তাই ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকলে একদিন সফলতা আসবেই।’